মুর্তিপূজা আমরা করি কেন অনেক সনাতন ধর্মের মানুষেরা এই প্রশ্নের মুখোমুখি হন তাই জেনে নিন এবং জানিয়ে দিন সনাতন ধর্ম কত সত্য ও পুরাতন।
প্রশ্নঃ মূর্তিপূজা না করে কি ভগবানের দেখা পাওয়া যায় না ? মূর্তিপূজা আমরা করি কেন ?
উত্তরঃ মূর্তি হল ভগবানের মূর্ত প্রকাশ । নামরূপে ও অর্চাবিগ্রহরূপে শ্রীভগবান জগতে অবতীর্ণ। ভক্ত ভগবানের রূপ-মাধুরী দর্শনে আগ্রহী। তারা কখনও ভগবান নিরাকার নির্বিশেষ এই রকম মনে করে শূন্যের ধ্যানে মগ্ন থাকেন না । যার রূপ নেই তার কথা চিন্তা করা কিংবা ধ্যান করা অসম্ভব। ব্রহ্মণ্ডের আদি জীব শ্রীব্রহ্মা নির্দেশ দিয়েছেন, ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ (ব্রঃ সঃ) ‘পরমেশ্বর ভগাবান শ্রীকৃষ্ণ সৎ ও আনন্দময় বিগ্রহ।’
সেই অপ্রাকৃত রূপ আমাদের চর্মচক্ষুতে দিষ্টিগোচর না হলেও এই ভূমণ্ডলে নাম ও অর্চা বিগ্রহরূপে আমারা অনবরত তাকে স্মরণ ও দর্শন করতে পারি। শাস্ত্রে বলা হয়েছে-
নাম, বিগ্রহ, স্বরূপ-তিন একরূপ।
তিনে ভেদ নাহি তিন চিদানন্দ-রূপ।। ( চৈ. চ. মধ্য ১৭/১৩১)
ভগবানের নাম, ভগবানের শ্রীবিগ্রহ, ভগবৎস্বরূপ এই তিনের মধ্যে ভেদ বা পার্থক্য নেই। কারণ, তা চিন্ময় বস্ত। এতএব, চিন্ময় বস্তু স্থুল-বুদ্ধি জড় ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে উপলুব্ধ হয় না ।
”প্রাকৃতেন্দ্রিয়- গ্রাহ্য নহে, হয় স্বপ্রকাশ।” ( চৈ.চ.মধ্য ১৭/১৩৪)
বিগ্রহ-রূপে ভগবান প্রকাশিত হলেও মায়াবাদী-নির্বিশেষবাদীরা শূর্খের মতো সন্তব্য করে যে, মূর্তিপূজা ভুল।শ্রীপদ্মপুরাণে নির্দেশিত হয়েছে- শ্রীবিষ্ণুর পূজাবিগ্রহে পাথর-বুদ্ধি যার হয়, সে নারকী।
কলিযুগপাবনাবতারী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন--
ঈশ্বরের বিগ্রহ সচ্চিদানন্দাকার।
সে-বিগ্রহে কহ সত্ত্বগুণের বিকার।।
শ্রীবিগ্রহ যে না মানে, সেই ত’ পাষণ্ড।
অদৃশ্য, অস্পৃশ্য, সেই হয় যমদণ্ড্য।।
ভগবদ্বিগ্রহ সচ্চিদানন্দময়। অথচ মায়াবাদীরা তা সত্ত্বগুণের বিকার বলে মনে করে।চিন্ময় বিগ্রহের অবজ্ঞাকারীর মূখদর্শন করা উচিত নয়, স্পর্শ করা উচিত নয়। কারণ সে পাষন্ডী এবং সে যমপুরীর শাস্তিভোগের জন্য নির্দিষ্ট।
বিগ্রহপূজা কখনই কলির মানুষের মনগড়া ধরনা নয়। শ্রীমদ্ভগবতে উল্লেখ আছে--
ত্রেতাদিষু হরেরর্চ্চা ক্রিয়ায়ৈঃ কবিভিঃ কৃতা।। (ভাঃ ৭/১৪/৪০) ত্রেতাদি অথার্ৎ, ত্রেতা দ্বাপর যুগেও ঋষিগণ শ্রীহরির বিগ্রহের আরাধনা করেছেন।
এই ভারতবর্ষে অনেক বিগ্রহ অধিষ্ঠিত রয়েছেন, সেই সকল বিগ্রহের অপ্রাকৃত লীলাবিলাসের উজ্জ্বল ইতিহাস বিদ্যমান। ভারতবর্ষের সেই সেই স্থানগুলিও মহাতীর্থে পরিণত হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবতে আরও বলা হযেছে--
যত্র য্ত্র হরেরর্চ্চা স দেশঃ শ্রেয়সাং পদম্।
যত্র গঙ্গাদয়ো নদ্য পরাণেষু চ বিশ্রুতাঃ”যে যে স্থানে শ্রীহরির প্রতিমা থাকে এবং যে স্থানে পুরাণ-প্রসিদ্ধ গঙ্গানদী বর্তমান, সেই দেশ মঙ্গলের আশ্রয়।”
( ভাঃ ৭/১৪/২৯)
এই কথা শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিণী গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে--
মূর্তিরূপে যথা করি করেন বিহার।
ভকত-জনের হয় যথা অবতার।।
সেই সব পুণ্য-ভূমি, জানিহ বিশেষে।
যত যত কর্ম; ধন্য হয় সেই দেশে।।।।
কিন্তু কলিযুগে নাস্তিক সভ্যতার দুর্বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের উৎপাতমূলক কার্যকলাপের ফলে সাধারণ জনমানসে ধাম-তীর্থের মাহাত্ম্যই ধরা পড়ে না। বর্তমানে মানুষ নানা দেবদেবীর মূর্তি বানিয়ে পুজা করছে, নেশা।করছে নাচছে, মদ খাচ্ছে। বহু জীবজন্তু বধ করছে। মাছ-মাংস খেয়ে ফূর্তি করছে।
আবার দোখা যায়, অনেকে ভগবদ্ বিগ্রহ রেখেছে। শ্রীগৌরাঙ্গ, রাধাকৃষ্ণ, লক্ষ্মীনারায়ণ কিংবা শালগ্রামের অর্চনা করছে,-অথচ তারা মাছ-মাংস ভক্ষণ ইত্যাদি ভগবদ্ বিরোধী আচরণে তৎপর হয়ে তাদের রক্ষিত ও অর্চিত ভগবদ্ মূর্তির প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করছে। সেক্ষেত্রে শ্রীবিগ্রহ পরমার্থপ্রদ হন না।বরং অনর্থই ভোগ করতে হয়। তাই মাছ-মাংসভোজীদের দ্বারা ভগবানের বিগ্রহ-পূজা একেবারেই নিষিদ্ধ। শাস্ত্রে দির্দেশিত--
সেই মূর্তি করি যেবা ভজে নারায়ণ।
জীবহিংসা করে যদি, নাহি প্রয়োজন
[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]
প্রশ্নঃ মূর্তিপূজা না করে কি ভগবানের দেখা পাওয়া যায় না ? মূর্তিপূজা আমরা করি কেন ?
উত্তরঃ মূর্তি হল ভগবানের মূর্ত প্রকাশ । নামরূপে ও অর্চাবিগ্রহরূপে শ্রীভগবান জগতে অবতীর্ণ। ভক্ত ভগবানের রূপ-মাধুরী দর্শনে আগ্রহী। তারা কখনও ভগবান নিরাকার নির্বিশেষ এই রকম মনে করে শূন্যের ধ্যানে মগ্ন থাকেন না । যার রূপ নেই তার কথা চিন্তা করা কিংবা ধ্যান করা অসম্ভব। ব্রহ্মণ্ডের আদি জীব শ্রীব্রহ্মা নির্দেশ দিয়েছেন, ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ (ব্রঃ সঃ) ‘পরমেশ্বর ভগাবান শ্রীকৃষ্ণ সৎ ও আনন্দময় বিগ্রহ।’
সেই অপ্রাকৃত রূপ আমাদের চর্মচক্ষুতে দিষ্টিগোচর না হলেও এই ভূমণ্ডলে নাম ও অর্চা বিগ্রহরূপে আমারা অনবরত তাকে স্মরণ ও দর্শন করতে পারি। শাস্ত্রে বলা হয়েছে-
নাম, বিগ্রহ, স্বরূপ-তিন একরূপ।
তিনে ভেদ নাহি তিন চিদানন্দ-রূপ।। ( চৈ. চ. মধ্য ১৭/১৩১)
ভগবানের নাম, ভগবানের শ্রীবিগ্রহ, ভগবৎস্বরূপ এই তিনের মধ্যে ভেদ বা পার্থক্য নেই। কারণ, তা চিন্ময় বস্ত। এতএব, চিন্ময় বস্তু স্থুল-বুদ্ধি জড় ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে উপলুব্ধ হয় না ।
”প্রাকৃতেন্দ্রিয়- গ্রাহ্য নহে, হয় স্বপ্রকাশ।” ( চৈ.চ.মধ্য ১৭/১৩৪)
বিগ্রহ-রূপে ভগবান প্রকাশিত হলেও মায়াবাদী-নির্বিশেষবাদীরা শূর্খের মতো সন্তব্য করে যে, মূর্তিপূজা ভুল।শ্রীপদ্মপুরাণে নির্দেশিত হয়েছে- শ্রীবিষ্ণুর পূজাবিগ্রহে পাথর-বুদ্ধি যার হয়, সে নারকী।
কলিযুগপাবনাবতারী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন--
ঈশ্বরের বিগ্রহ সচ্চিদানন্দাকার।
সে-বিগ্রহে কহ সত্ত্বগুণের বিকার।।
শ্রীবিগ্রহ যে না মানে, সেই ত’ পাষণ্ড।
অদৃশ্য, অস্পৃশ্য, সেই হয় যমদণ্ড্য।।
ভগবদ্বিগ্রহ সচ্চিদানন্দময়। অথচ মায়াবাদীরা তা সত্ত্বগুণের বিকার বলে মনে করে।চিন্ময় বিগ্রহের অবজ্ঞাকারীর মূখদর্শন করা উচিত নয়, স্পর্শ করা উচিত নয়। কারণ সে পাষন্ডী এবং সে যমপুরীর শাস্তিভোগের জন্য নির্দিষ্ট।
বিগ্রহপূজা কখনই কলির মানুষের মনগড়া ধরনা নয়। শ্রীমদ্ভগবতে উল্লেখ আছে--
ত্রেতাদিষু হরেরর্চ্চা ক্রিয়ায়ৈঃ কবিভিঃ কৃতা।। (ভাঃ ৭/১৪/৪০) ত্রেতাদি অথার্ৎ, ত্রেতা দ্বাপর যুগেও ঋষিগণ শ্রীহরির বিগ্রহের আরাধনা করেছেন।
এই ভারতবর্ষে অনেক বিগ্রহ অধিষ্ঠিত রয়েছেন, সেই সকল বিগ্রহের অপ্রাকৃত লীলাবিলাসের উজ্জ্বল ইতিহাস বিদ্যমান। ভারতবর্ষের সেই সেই স্থানগুলিও মহাতীর্থে পরিণত হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবতে আরও বলা হযেছে--
যত্র য্ত্র হরেরর্চ্চা স দেশঃ শ্রেয়সাং পদম্।
যত্র গঙ্গাদয়ো নদ্য পরাণেষু চ বিশ্রুতাঃ”যে যে স্থানে শ্রীহরির প্রতিমা থাকে এবং যে স্থানে পুরাণ-প্রসিদ্ধ গঙ্গানদী বর্তমান, সেই দেশ মঙ্গলের আশ্রয়।”
( ভাঃ ৭/১৪/২৯)
এই কথা শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিণী গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে--
মূর্তিরূপে যথা করি করেন বিহার।
ভকত-জনের হয় যথা অবতার।।
সেই সব পুণ্য-ভূমি, জানিহ বিশেষে।
যত যত কর্ম; ধন্য হয় সেই দেশে।।।।
কিন্তু কলিযুগে নাস্তিক সভ্যতার দুর্বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের উৎপাতমূলক কার্যকলাপের ফলে সাধারণ জনমানসে ধাম-তীর্থের মাহাত্ম্যই ধরা পড়ে না। বর্তমানে মানুষ নানা দেবদেবীর মূর্তি বানিয়ে পুজা করছে, নেশা।করছে নাচছে, মদ খাচ্ছে। বহু জীবজন্তু বধ করছে। মাছ-মাংস খেয়ে ফূর্তি করছে।
আবার দোখা যায়, অনেকে ভগবদ্ বিগ্রহ রেখেছে। শ্রীগৌরাঙ্গ, রাধাকৃষ্ণ, লক্ষ্মীনারায়ণ কিংবা শালগ্রামের অর্চনা করছে,-অথচ তারা মাছ-মাংস ভক্ষণ ইত্যাদি ভগবদ্ বিরোধী আচরণে তৎপর হয়ে তাদের রক্ষিত ও অর্চিত ভগবদ্ মূর্তির প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করছে। সেক্ষেত্রে শ্রীবিগ্রহ পরমার্থপ্রদ হন না।বরং অনর্থই ভোগ করতে হয়। তাই মাছ-মাংসভোজীদের দ্বারা ভগবানের বিগ্রহ-পূজা একেবারেই নিষিদ্ধ। শাস্ত্রে দির্দেশিত--
সেই মূর্তি করি যেবা ভজে নারায়ণ।
জীবহিংসা করে যদি, নাহি প্রয়োজন
[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন