২১.৬.১৮

|| সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে নরকবাস ||

|| সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে নরকবাস ||

একটি ভ্রমর ও একটি গোবর পোকা দুই বন্ধু ছিল। একদিন ভ্রমর উড়তে উড়তে গিয়ে গোবর পোকার কাছে গিয়ে বলল, বন্ধু...... তোমারও পোকার জীবন আর আমারও পোকার জীবন। কিন্তু দেখ আমাদের দুজনের জীবনে যাপনে কতটা পার্থক্য।তুমি এই দুর্গন্ধ গোবর পচার মধ্যে পরে থেকে তার রস খেয়ে খেয়ে জীবনধারন করছো। আর আমি কত রঙ বেরঙের সুন্দর সুগন্ধী নরম ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। সেই সুগন্ধী ফুলের মধু খায়। তুমি আর এই পচা গোবরের মধ্যে পরে না থেকে আমার সাথে চলো। তুমিও ফুলের মধু খাবে।অনেক বোঝানোর পর ভ্রমর অনেক কষ্টে গোবর পোকাকে রাজি করিয়ে গোবর পোকাকে নিয়ে গেল।
দুই বন্ধু মিলে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে মধু খেতে শুরু করে দিল।মধু পেয়ে গোবর পোকা ভাবছে, বাঃ এতো খুব সুন্দর স্বাদ তাই আরো বেশি বেশি করে খেতে শুরু করে দিল। মধু খেয়ে একসময় তার নেশা হয়ে গেল। তখন গোবর পোকাটি নরম ফুলের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ল। ক্রমশ সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। সন্ধ্যার সময় প্রাকৃতিক নিয়মেই অনেক ফুলের পাপড়ি মুদে যায় বা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।গোবর পোকাটি যে ফুলটিতে ঘুমিয়েছিল সেই ফুলটিও মুদে গেল আর ভ্রমর তার নিজের বাসায় চলে গেল।
পরদিন সকালে এক ভক্ত সেই ফুলটি তুলে নিয়ে গেল ভগবানের পুজোর উদ্দেশ্যে। গোবর পোকা কিন্তু তখনও ফুলের মধ্যেই। এদিকে ভক্ত সেই ফুলটি চন্দন চর্চিত করে ভগবানের শ্রীচরণে অর্পন করলেন। কিছু সময় পর যখন ফুলটি যখন প্রস্ফুটিত হল তখন গোবর পোকা ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে দেখে আমি কোথায় এলাম, আমি তো ভগবানের চরণে। আমি একটা গোবর পোকা যার স্থান ছিল পচা দুর্গন্ধ গোবরের মধ্যে, সেই আমি কিনা আজ জগৎপতির চরণে। মনে মনে ভাবতে লাগল, আজ যদি ভ্রমরের সঙ্গ না ধরতাম তাহলে হয়তো কোনোদিন ভগবানের শ্রীচরণ স্পর্ষ তো দুরের কথা, আমি কোনোদিন তার দর্শনও পেতাম না।....... তাই মহাজনেরা বলছেন.....
" সাধুসঙ্গ সাধুসঙ্গ সর্বশাস্ত্রে কয়
লব মাত্র সাধু সঙ্গ সর্ব্ব সিদ্ধি হয় "......এখানে দেখুন সাধু সঙ্গের জন্যই কিন্তু আজ গোবর পোকার সিদ্ধি লাভ ঘটল। তাই অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করুন। অসৎ সঙ্গ শুধু নীচু পথেই নামায় না, অসৎ সঙ্গের ফলে আপনার আমার জীবনে একদিন যে ভয়ঙ্কর বীপদ নেমে আসবে তা একদম নিশ্চিত। কারণ এদের গতি সবসময় নীচের দিকে,এরা কোনোভাবেই উপরের দিকে উঠতে সাহয্য করেনা। নীচে নামানোর প্রাণপন চেষ্টাই চালিয়ে যায়।
সুন্দর ফুল তো অনেক ফোটে কিন্তু সবাই ভগবানের চরণে নিবেদিত হয় কি ? কেউ বেশ্যালয়ে স্থান পায়, কেউ আবার মৃতদেহের ওপর, কেউ আবার গাছেই শুকিয়ে মাটিতে ঝরে পরে।নিজেকে কোন পথে পরিচালিত করবেন সেই রুচিটা সম্পুর্ণ নিজের।
জয় রাধামাধব

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন