২০.৬.১৮

উপবাস কি ??

উপবাস কি ? 
“উপবাস” শব্দের অর্থ- নিকটে বাস। “উপ” শব্দের অর্থ- নিকট, “বাস” শব্দের অর্থ অবস্থান করা । উপবাস শব্দের অর্থ নিকটে অবস্থান করা । অর্থাৎ, বাচিক ও মানসিক 
কায়মণবাক্যে সংযম পালন পূর্বক ইষ্টদেবতার নিকট অবস্থান বা সান্নিধ্য গ্রহণ করার নাম “উপবাস”। সাধারন ভাবে কিছু বিশেষ তিথি, একাদশী তিথি, বিশেষ পূজার দিন আহার সংযমকে ‘উপবাস’ বলা হয়। একাদশী, অমাবস্যা, পূর্ণিমা তিথিতে জোয়ার ভাটার কারনে দেহে জলীয় পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই সময় অন্নাদি শাকপাতা ভোজনে শরীর অলস হয়ে পড়ে । এই সময় আহার সংযম প্রয়োজন। এই জন্য বাত রোগী অমাবস্যায়, পূর্ণিমায় নিশিপালন করেন ।

তাছাড়া রোজ অন্নাদি খাদ্য গ্রহণের ফলে পাকস্থলীতে অনেক আহার্য জমে থাকে যা পূর্ণ রূপে পরিপাক হয় না। এরজন্য একদিন আহারে সংযম পালন করে ফলমূলাদি গ্রহণে পাকস্থলী পরিষ্কার হয়। নিত্য অন্ন সেবনে দেহ স্থূলকায় ভারী হলে একদিন ফলমূলাদি গ্রহণে সেই দোষ খণ্ডন হয়। ঐ এক কারণে শাস্ত্র প্রণেতা গণ উপবাসে জল, কাঁচা গোদুগ্ধ, ফলমূলাদি গ্রহণের বিধান দিয়েছেন । তাছাড়া রন্ধন সংক্রান্ত কর্মে সময় অপচয় না হওয়ায় উপবাসের দিন ভগবানের নাম কীর্তন, বীজ মন্ত্র জপ ইত্যাদি কাজে নিযুক্ত হয়ে ভগবানের নিকটবর্তী হওয়া যায় । এইজন্য একাদশী, অমাবস্যা, পূর্ণিমায়, বিশেষ তিথিতে ভগবানের নাম কীর্তনে রাত্রি জাগরণের বিধান আছে । এছাড়া উপবাসের দিন অন্নাদি গ্রহণ না করার জন্য মানব ক্ষুধা অন্নকষ্টের ক্লেশ বুঝতে পারে। এর ফলে সে সমাজে হিতকর কর্মে যেমন দান- বিতরণ কাজে যোগদান করে ।

উপবাসের মাধ্যমে শুধু ঈশ্বর করুণা ও স্বাস্থ্য রক্ষা হয় – এমন নয়। কামাদি রিপুগুলিকে আয়ত্তে আনতে, জিহ্বার লালসা দূর করতে উপবাসের বিধান আছে । উপবাস মানে না খেয়ে কঠোর কৃচ্ছতা পালন নয়- বরং আহারে সংযমের নাম ‘উপবাস’। তাই শাস্ত্রে উপবাসের দিন ফলমূল, গোদুগ্ধ, ডাবের জল ইত্যাদি প্রসাদ রূপে গ্রহণের বিধান আছে । আর ঘন ঘন উপবাসে শরীর খারাপ ও দুর্বল হয়। তাই শাস্ত্রে ঘন ঘন উপবাসে নিষেধ আছে ।


[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন