২৫.৬.১৮

জগন্নাথদেবের রথযাত্রা ও উল্টো রথযাত্রা এর তাৎপ



"নীলাচলনিবাসায় নিত্যায় পরমাত্মনে।
বলভদ্র সুভদ্রাভ্যাং জগন্নাথায় তে নমঃ।"

 সরলার্থ::পরমাত্মা স্বরূপ যারা নিত্যকাল-নীলাচলে বসবাস করেন, সেই বলদেব, সুভদ্রা ও জগন্নাথদেবকে প্রণতি নিবেদন করি।

#জগন্নাথদেব কে?
যেই গৌর, সেই কৃষ্ণ, সেই জগন্নাথ। ভগবান জগন্নাথদেব হলেন শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং যিনি জগতের নাথ বা জগদীশ্বর। সংস্কৃতি ভাষায় জগৎ অর্থে বিশ্ব এবং নাথ অর্থে-ঈশ্বর বোঝায়। সুতরাং জগন্নাথ শব্দের অর্থ হলো জগতের ঈশ্বর বা জগদীশ্বর।












#জগন্নাথদেবের কেন এই রূপ? 
একদা দ্বারকায় মহিষীগণ রোহিনী মাতাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, কৃষ্ণকে এতো সেবা করার পরও তিনি যেন অতৃপ্ত এবং অন্যমনস্ক থাকেন। কখনো বৃন্দাবন, কখনো শ্রীদাম-সুদাম, কখনো মাতা যশোদা, নন্দবাবা, আবার কখনো বা হে ব্রজবাসীগণ বলতে বলতে মূর্ছা যান। তার কারণ কী? তখন কৃষ্ণ বলরামের অজ্ঞাতে সুভদ্রা দেবীকে একটি কক্ষের দ্বারে রেখে কক্ষাভ্যন্তরে রোহিনী মাতা মহিষীদের কাছে ব্রজবাসীদের কৃষ্ণ বিরহের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন যে, বৃন্দাবনের বৃক্ষরাজি, তরুলতা কৃষ্ণ বিরহে ফুলে ফলে সুশোভিত হয় না। গো, গো বৎস এবং সখাগণ অনাহারে অনিদ্রায় কালাতিপাত করছে। মা যশোদা, পিতানন্দ প্রতিদিন ছানা মাখন নিয়ে গোপাল গোপাল বলে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে গেছেন। কৃষ্ণ বিহনে ব্রজগোপীগণ প্রাণান্তর প্রায়। এদিকে ভগিনী সুভদ্রা দেবীকে একটি কক্ষের দ্বারে দেখতে পেয়ে কৃষ্ণ এবং বলরাম তার কাছে এসে দাঁড়ালেন। কক্ষাভ্যন্তর থেকে ভেসে আসা ধ্বনি, রোহিনী মাতা কর্তৃক বর্ণিত ব্রজবাসীগণের কৃষ্ণ-বিরহ-সন্তাপাবস্থার কথা শ্রবণ করতে করতে কৃষ্ণ, বলরাম এবং সুভদ্রা বিকারগ্রস্ত হতে লাগলেন। তাদের হস্ত-পদ শরীরাভ্যন্তরে প্রবিষ্ট হতে লাগলো। চক্ষুদ্বয় বিস্ফোরিত হতে লাগলো। এমতাবাস্থায় সেখানে নারদ মুনি উপস্থিত হয়ে সেই রূপ দর্শন করলেন। তখন নারদ মুনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করলেন, হে ভগবান আমি আপনার যে রূপ দেখলাম, ভক্ত বিরহে আপনি স্বয়ং বিকারগ্রস্ত হয়ে থাকেন, কৃপা করে আপনার এই করুণার মূর্তি জগতবাসীর কাছে প্রকাশ করুন। নারদ মুনির প্রার্থনায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে প্রতিশ্রুতি দিলেন যে দারুব্রহ্ম (জগন্নাথ) রূপে শ্রীক্ষেত্র বা পুরীতে আমি এই রূপে আবির্ভূত হবো। পরবর্তীতে ইন্দ্রদ্যুম্ন নামে সূর্য বংশীয় এক বিষ্ণু ভক্ত রাজা মালদেশের অবন্তী নগরীতে রাজত্ব করতেন। তিনি ভগবানের সাক্ষাৎকার লাভ করার জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল হয়েছিলেন। ভগবৎ প্রেরিত কোনো এক বৈষ্ণব তখন শ্রীইন্দ্রদ্যুম্নের রাজসভায় উপস্থিত হয়ে কথা প্রসঙ্গে ভগবান শ্রী নীলমাধব বিগ্রহের কথা জ্ঞাপন করলেন। রাজা এই সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে শ্রী নীলমাধবের অনুসন্ধানে ব্রাহ্মণদের বিভিন্ন দিকে প্রেরণ করলেন। একে একে সকলেই বিফল মনোরথ হয়ে রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করলেন। একমাত্র রাজপুরোহিত বিদ্যাপতি বহুস্থান ভ্রমণ করতে করতে নীলমাধব বিগ্রহের সন্ধান পেলেন এবং রাজাকে নীলমাধবের সংবাদ জানালেন। তারপর রাজপুরোহিত বিদ্যাপতির পথ নির্দেশনায় রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন মন্ত্রীগণ এবং সৈন্য সামন্ত সমভিব্যাহারে নীলমাধবকে আনতে গেলেন। কিন্তু যে স্থানে নীলমাধবের সন্ধান পেয়েছিলেন সেই একই স্থানে উপনীত হলেন বটে তবে সেখানে নীলমাধবকে দেখতে পেলেন না। নীলমাধব সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন। অতঃপর রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ভগ্ন মনোরথে সবাইকে নিয়ে রাজ্যে প্রত্যাবর্তন করলেন। নীলমাধবের দর্শন না পেয়ে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন অনশনব্রত অবলম্বনপূর্বক প্রাণত্যাগের সংকল্প করলেন। তখন শ্রী জগন্নাথদেব স্বপ্নে তাকে বললেন, তুমি চিন্তা করিও না, সমুদ্রে ‘বাঙ্কমুহান’ নামক স্থানে দারুব্রহ্মরূপে ভাসিতে ভাসিতে আমি উপস্থিত হইবো। সে কথা শুনে রাজা পর্ষদবৃন্দ নিয়ে ঐ স্থানে উপস্থিত হলেন এবং যথাসময়ে শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মাঙ্কিত শ্রী দারুব্রহ্মকে দর্শন করলেন। সেই দারুব্রহ্ম (কাষ্ঠখন্ড) রাজা বহু বলবান লোক, হস্তি প্রভৃতি নিযুক্ত করে সুবর্ণের রথে করে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে আসলেন।

পরবর্তীতে সেই কাষ্ঠখন্ড দিয়ে রাজা এক অজ্ঞাত বৃদ্ধ ভাস্করকে শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি তৈরি করতে অনুরোধ করলেন। ভাস্করটি এই কার্যভার গ্রহণ করলেও একটি শর্ত আরোপ করেছিলেন যে, কার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে ২১ দিন সম্পূর্ণ গোপনীয়তা পালনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। রাজা সম্মত হলেও শেষ পর্যন্ত অধৈর্য হয়ে ওঠেন। অবশেষে ১৫ দিন পরেই ভাস্করের কর্মশালায় গিয়ে তিনি দৃষ্টিক্ষেপ করা মাত্রই ভাস্কর অদৃশ্য হলেন। পড়ে থাকলো শ্রী শ্রী জগন্নাথ, শ্রীবলরাম ও সুভদ্রাদেবীর শ্রীমূর্তি, যা আজ আমরা দেখে থাকি। রাজা তখন সেই মূর্তিটিকে অসম্পূর্ণ ভেবে অনুশোচনা করতে লাগলেন। তিনি ভাবতে লাগলেন কেন আমি ভাস্করের কথা মতো আরো কিছু দিন অপেক্ষা করলাম না। তখন ভগবান জগন্নাথদেব আবারো রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নকে স্বপ্নে বললেন, আমি এই রূপেই তোমার কাছে সেবা পেতে চাই। এই রূপ আমার করুণার মূর্তি। রাজা তখন সেই মূর্তিকে সম্পূর্ণ বলে গ্রহণ করে শ্রীজগন্নাথ, শ্রী বলদেব ও সুভদ্রাদেবীর সেবা-পূজা করতে শুরু করলেন এবং তারপর পুরীতে জগন্নাথদেবের জন্য একটি সুবিশাল মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।

#রথযাত্রা উৎসবের অর্থ কী?
বৃন্দাবন ত্যাগ করে মহারাজ নন্দ সূত শ্রীকৃষ্ণ তার দ্বারকা লীলায় রত হলেন। সূর্যগ্রহণ উপলক্ষ্যে শ্রীকৃষ্ণ যখন কুরুক্ষেত্রে গিয়েছিলেন তখন তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বলরাম ও ভগিনী সুভদ্রা এবং সেই সঙ্গে দ্বারকা থেকে অনেকেই তার সঙ্গে গিয়েছিলেন। সেই সময় ব্রজবাসীগণও সূর্যগ্রহণ উপলক্ষ্যে কুরুক্ষেত্রে গিয়েছিলেন। কুরুক্ষেত্রে বৃন্দাবনের গোপ গোপীদের সঙ্গে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সাক্ষাৎ হলো। ব্রজবাসীগণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে তার লীলাস্থলী বৃন্দাবনে ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। ব্রজবাসীগণ শ্রীকৃষ্ণের রাজবেশে দেখতে চাইলেন না। তারা শ্রীকৃষ্ণকে বৃন্দাবনের গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে ব্রজের বেশে দেখতে চাইলেন এবং তার সাহচর্য পেতে উন্মুখ হলেন। তখন ব্রজবাসীগণ কৃষ্ণ, বলরাম এবং সুভদ্রাদেবীর রথের ঘোড়া ছেড়ে দিয়ে নিজেরাই রথ টানতে টানতে বৃন্দাবনে নিয়ে গেলেন। যাই হোক, সেই লীলাকে স্মরণ করে ভক্তরা আজো পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বা জগন্নাথ দেবকে রথে করে টেনে বৃন্দাবনে (গুন্ডীচা মন্দির) নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। দ্বারকা রাজ্য যেমন শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বর্য লীলার স্থান বৃন্দাবন তেমনি মাধুর্য লীলার স্থান। ভগবদগীতায় নিশ্চিত করা হয়েছে যে, যেখানে কৃষ্ণ বা জগন্নাথ, জগতের নাথ এবং তার ভক্ত বিরাজমান সেখানেই বিজয় অনিবার্য।

#রথযাত্রা উৎসবে অংশগ্রহণ করার মাহাত্ম্য কী? 
এই উৎসবে অংশগ্রহণ করার মানে হলো আত্মোপলব্ধির পথে এক ধাপ অগ্রসর হওয়া। রথযাত্রা শ্রীকৃষ্ণের একটি অন্যতম লীলা। তাই এই উৎসবে অংশগ্রহণ করার অর্থ হলো সরাসরি কৃষ্ণের সংস্পর্শে আসা। যারা মন্দিরে এসে ভগবানকে দর্শন করেন না, তাদেরকে দর্শন দেয়ার জন্য ভগবান জগন্নাথদেব ভক্ত পরিবেষ্টিত হয়ে নিজেই পথে বের হন। রথারূঢ় জগন্নাথদেবের রথের রশি ধরে টানে বা রথ স্পর্শী করে অথবা বিগ্রহকে দর্শন করে তাহলে তার মুক্তি সুনিশ্চিত। সনাতন ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ উৎসবসমূহের মধ্যে রথযাত্রা অন্যতম উৎসব। এই উৎসব আমাদের চেতনাকে জাগ্রত করে। হৃদয়ের সুপ্ত কৃষ্ণভাবনাকে জাগ্রত করার এটি একটি সহজ ও সরল পন্থা।

#শাস্ত্রে তাই উল্লেখ করা হয়েছে
“রথে চ বামনাং দৃষ্ট পুনর জন্ম ন বিদ্যতে”
যদি কেউ রথযাত্রা উৎসবের সময় রথারূঢ় জগন্নাথদেবের শ্রী বিগ্রহকে দর্শন করে, তাহলে তার আর জড় জগতে জন্মগ্রহণ করতে হয় না। তিনি চিন্ময় ধাম প্রাপ্ত হন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ভক্তদের নিয়ে জগন্নাথের রথের সম্মুখে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র ‘হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে। হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।’ কীর্তন করতে করতে নৃত্য করতেন। রথের সামনে নৃত্য কীর্তন করাই জগন্নাথকে সন্তুষ্ট করার সর্বোত্তম পন্থা। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর এই লীলার মাধ্যমে সেই শিক্ষা আমাদের প্রদান করেছেন। তাই যে কেউ ভগবান শ্রীজগন্নাথদেবের রথযাত্রায় যোগদান করে নৃত্য কীর্তন করার মাধ্যমে দুর্লভ মনুষ্য জীবনকে সার্থক করতে পারেন।

#লেখক: ডা . সুব্রত ঘোষ

প্রকৃতপক্ষে কিভাবে আত্মার সৎগতি কামনা করতে হয় প্রকৃতপক্ষে ???

আত্মার সৎগতি? প্রকৃতপক্ষে কি ভাবে আত্মার সৎগতি কামনা করতে হয় তা জানবো আজ আমরা।

মায়াবদ্ধ জীব! সাধারনত আমরা কোন মানুষ মারা গেলে ওনার আত্মার সৎগতি কামনা করি। গোলক ধামবাসী হোক, বৈকুণ্ঠবাসী হোক, স্বর্গবাসী হোক। আচ্ছা একটা কথা বলুন তো আমায়? যে ব্যক্তি মারা গেল আমরা যে তার আত্মার সৎগতি কামনা করছি, সে ব্যক্তি যখন জীবিত ছিল, তখন কি তিনি জানতে চেষ্টা করছেন,আসলে আত্মাটা কে? বা সেটা কি জিনিস? আত্মাটা কার অংশ? আর সে অংশের কাজ কি? সে কি কখনও আত্মার অনুসন্ধান বা পরম সত্যের অনুসন্ধান করেছিলো। না সে ব্যক্তি কোন দিনও আত্মা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেনি। সে শুধু সারা জীবন দেহ সুখের কামনা বাসনা করছেন। সে ব্যক্তি শুধু দেহ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন। কিন্তু দেহটা যে পোশাক মাত্র। যে ব্যক্তি সারা জীবন জড়জগতে ৪টি জিনিসের অনুসন্ধান করেছিলো। আহার, নিদ্রা, ভয়, মৌথুন। যে ব্যক্তি সারা জীবন আত্মার অনুসন্ধান না করে দেহের অনুসন্ধান করেছে। তার তো আত্মার সৎগতি কামনা না করে দেহের সৎগতি কামনা করা উচিত। হা হা হা, আর শিক্ষিত হিন্দু সমাজ, কোন মানুষ মরার পর তার আত্মার সৎগতি কামনা করে। অধম মায়াবদ্ধ জীব জীবিত থাকতে জানার চেষ্টা করে না যে, দেহটা জড় বস্তু, অনিত্য। আত্মা চেতন, নিত্য। তাই আমাদের কোন ব্যক্তির আত্মার সৎগতী কামনা করতে হলে, ঐ ব্যক্তিকে জীবিত থাকা অবস্তাই কিভাবে তার আত্মা সৎগতি লাভ করতে পারে সে পথ দেখিয়ে দিতে হবে। এই পথটা হচ্ছে জীবের আত্মজ্ঞান উপলব্ধি বা আত্মা সর্ম্পকে জানা। এইটাই হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে এক জন ব্যক্তির আত্মার সৎগতি কামনা করা।

আরে ভাই বুঝেন না কেন আপনারা। একজন মানুষের মৃত্যুর পর তার আত্মার সৎগতি কামনা করলেই কি সে ব্যক্তির সৎগতি হয়ে যাবে? না তা মোটেও নয় নিজ নিজ কর্মফল প্রত্যেক ব্যক্তিকে ভোগ করতে হবে। কর্ম যদি ভালো হয় সৎগতি কামনা করতে হবে না, অটোমেটিকেলি সৎগতি পেয়ে যাবে। তাই প্রকৃত সৎগতির পন্থা দেখিয়ে দিন। আর সেই পন্থা হচ্ছে আমরা যেহেতু চিন্ময় আত্মা পরমআত্মার অংশ। অংশের কাজ পূর্ণ সম্পর্কে অনুসন্ধান করা ও পূর্ণের সেবা করা।(অংশ চিন্ময় আত্মা জড়জীব! পূর্ণ পরমআত্মা পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
(মানব জীবনে ব্যক্তিগত উপলব্ধি)
(জয় শ্রীল প্রভুপাদ)

এই সেই দেহের অন্তিম ঠিকানা, শ্বশান ঘাট।

[collected]

২২.৬.১৮

কে জানে এই ঘুম হয়তো শেষ ঘুম!!






















আপনি কি আগুন চেনেন? 
--হুম চিনি।
আপনি কি জানেন আগুনের রং কি??
--কমলা আর কালো রং এর কাছাকাছি হবে হয়তো... 
আগুনের খুব কাছে গেলে কেমন অনুভূতি হয় আপনার?
--অসহ্য যন্ত্রনায় সারা শরীর ঝলসে যায়,খুবই কষ্ট হয়।
আগুনের কি জিব্বা আছে? 
--আছে হয়তো।হাজার হাজার লক্ষ কোটি জিহ্বা। সব কিছু জ্বালিয়ে পুঁড়িয়ে শেষ করে দেয়।
তাঁর মানে আপনি আগুন কে চেনেন তাই তো?
--ইয়ে! আসলে! মানে......
লোকটা কে থামিয়ে দিলো একজন হিন্দু ব্যক্তি । তারপর ভগবানের ভক্ত টি বলল-
"আপনি আগুন কে কিছুই চিনতে পারেন নি। কারন আপনি কখনো আগুনের মাঝে ঝাঁপ দিয়ে দেখেননি যে আগুন কি জিনিস। আপনি কখনো আগুন কে স্পর্শ করে দেখেন নি আগুন কতটা জ্বালায়। তদ্রুপ ভগবানের প্রেমের আগুনে যারা ঝাঁপ দেয়নি তারা কোনদিন ই আঁচ করতে পারবে না তাঁর ভালোবাসায় কত সুখ আছে। দুনিয়ার প্রেমে আজ যারা মশগুল তারা জানে না ভগবানের সঙ্গের দিব্যপ্রেমের সুখ কি!! 
তারা সব জানে কিন্তু মানে না। এমন একদিন আসবে যেদিন তারা সব মানবে কিন্তু হায়! সেদিন আর সময় থাকবে না!!"
... প্রতিদিন রাতে ঘুমাবার সময় আমরা অ্যালার্ম সেট করি কিন্তু আমরা জানি না আগামীকাল আমরা বাচবো কিনা। কে জানে এই ঘুম হয়তো শেষ ঘুম!! 
{জাতস্য ধ্রুবো মৃত্যুর্ধ্রুবং জম্ম মৃতস্য চ।} গীঃ২.২৭
অনুবাদঃ- যার জন্ম হয়েছে তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী এবং যার মৃত্যু হয়েছে তার জন্মও অবশ্যম্ভাবী। 
অন্তকালে চ মামেব স্মরন্মুক্ত্বা কলেবরম।
যঃ প্রায়তি স মদ্ভাবং যাতি নাস্ত্যত্র সংশয়ঃ।।গীঃ ৮.৫
অনুবাদঃ- মৃত্যু সময়ে যিনি আমাকে স্মরন করে দেহত্যাগ করেন। তিনি তৎক্ষনাৎ আমার ভাবই প্রাপ্ত হন। এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই।
আসুন মৃত্যুর কথা ভাবি। এবং আশা করি মৃত্যুর সময় যেন মুখে উচ্চারিত হয়-- 
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

আমাদের হিন্দু ধর্মে মায়ের স্থান কোথায় ?

সনাতন হিন্দু ধর্মে মায়ের স্থান কোথায় ?



হিন্দু ধর্মে মায়ের স্থান অনেক উঁচু । চণ্ডীতে স্তব মন্ত্রে বলা হয়েছে
“যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা” ।

আর সন্তান এর কাছে মায়ের স্থান কোথায় হবে সে বিষয়ে হিন্দু শাস্ত্রে সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে । সে বিষয়ে জানতে আমরা মনু সংহিতা্র একটি শ্লোক দেখব-

উপাধ্যায়ান্ দশাচার্য্য আচার্য্যণাং শতং পিতা ।
সহস্রন্ত্ত পিতৃন্মাতা গৌরবেণাতিরিচ্যতে ।। মনুসংহিতা, ২/১৪৫

অনুবাদঃ
দশজন উপাধ্যায় থেকে একজন আচার্যের গৌরব বেশি । একশত আচার্যের থেকে পিতার গৌরব বেশি এবং সহস্র পিতা অপেক্ষা মাতা সম্মানার্হা ।

পিতা মাতার ঋণ সন্তান শত সহস্র জন্মেও শোধ করতে পারে না ।

যংমাতাপিতরৌ ক্লেশং সহতে সম্ভবে নৃণাম্ ।
ন তস্য নিষ্কৃতিঃ শক্যা কর্তুং বর্ষশতৈরপি ।। মনুসংহিতা, ২/২২৭

অনুবাদঃ
সন্তান জননে পিতামাতা যে ক্লেশ সহ্য করেন পুত্র শত শত বৎসরে, শত শত জন্মেও সেই ঋণ পরিশোধ করতে সমর্থ নয় । এ ছাড়া শাস্ত্রে আরও বলা হয়েছে মাতৃভক্তি দ্বারা এই ভূলোক জয় করা সম্ভব ।

ইমং লোকং মাতৃভক্ত্যা … মনুসংহিতা, ২/২৩৩

অনুবাদ :
মানুষ মাতৃভক্তি দ্বারা এই ভূলোক জয় করতে পারে ।

খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথাটি রামায়ণে ভগবান রামচন্দ্র বলেছিলেন-
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গরিয়সী।

এই সকল শাস্ত্র বাক্য দ্বারা আমরা সহজেই বুঝতে পারলাম সনাতন ধর্মে মায়ের স্থান কোথায় । তাই আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য নিজের জন্মদাত্রী মাকে যথাযথ সন্মান প্রর্শন করা ।

সংসার ধর্ম বড় ধর্ম, অন্য ধর্ম নেই !! মানে কি কথাটির ?

প্রশ্নঃ সংসার ধর্ম বড় ধর্ম, অন্য ধর্ম নেই!! এই কথার মানে কি?

এই কথার সঠিক তাৎপর্য কয়জনেই বা উপলব্ধি করতে পারে!!এতোদিন আপনারা শুধু জেনে এসেছেন-
সংসার ধর্ম বড় ধর্ম, অন্য ধর্ম নেই!!
তবে আসুন ভক্তবৃন্দ এখন এর সঠিক তাৎপর্যঃ জেনে নিই,,,
আর একটা অনুরোধ আপনাদের কাছে এই উত্তরটি শ্রবণ করার পর অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না!!কারণ আপনার একটি শেয়ারে অন্য আরেক জনের উপকৃত হতে পারে!আর বেশি কথা বলবো না এখন তবে প্রশ্নের মূল উত্তরে যাওয়া যাক--->>>
☞প্রশ্নঃ সংসার ধর্ম বড় ধর্ম, অন্য ধর্ম নেই!! এই কথার মানে কি?



উত্তরঃ এখানে সংসার ধর্ম বলতে গৃহস্থ ধর্মকে বোঝাচ্ছে। পতি, পত্নী ও সন্তান নিয়ে মানুষ ঘর করে জীবনযাপন নির্বাহ করে। পতি-পত্নী যদি না থাকে, তবে সন্তান আসবে কোথা থেকে। আর ধর্মই বা পালন করবে কে? তাই গৃহস্থ জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আছে। তাঁরা সৎ সন্তান উৎপাদন করে দেশের ও দশের মঙ্গল সাধন করতে পারেন।

👉কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঘটছে অন্যরকম। বহু পিতামাতা নাস্তিক ধর্মাচরহীন সন্তান সৃষ্টি করছেন। যারা এক একটি সংসার তছনছ করে দিচ্ছে। সমাজের বহু ক্ষতি সাধন করছে। স্বার্থপর, ব্যভিচারী, খুনী, নেশাখোর, বাটপাড়, ডাকাত, মাতাল, বদরাগী, ন্যাকা, বদমাশ, অসৎ প্রকৃতির বহু মানুষে জগৎ ভরে যাচ্ছে। গৃহস্থ জীবনের পালনীয় বৈদিক সংস্কারগুলি লোকে আর তেমন পালন করছে না বললেই চলে

👉অধিকাংশ লোক গৃহস্থ না হয়ে গৃহমেধী জীবন যাপন করছে। সেই সমস্ত গৃহে হয় না হরিপূজা, চলে না হরিনাম কীর্তন, করে না সাধুবৈষ্ণবের সেবা, শোনে না গীতা-ভাগবত, রাখে না শ্রীকৃষ্ণের অর্চা বিগ্রহ, খায় না কৃষ্ণপ্রসাদ। কেবল করে টাকা রোজগার। খায় মাছ-মাংস, মজে নেশাদ্রব্যে, দেখে আধুনিক ছায়াছবি, শোনে অভক্তি গান, বৈবাহিক জীবনের সংস্কারগুলি সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল নয়। মানে না বারব্রত। থাকে না সংযত।

👉বৈদিক পন্থায় বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে গৃহস্থ ব্যক্তিরা বিশেষত গৃহবধূরা সুসজ্জিত হয়ে ইসকন মন্দিরে ভগবানের সন্ধ্যা-আরতিতে যুক্ত হয়ে অর্চা বিগ্রহের সামনে ঘৃত প্রদীপ নিবেদন করতেন। সেখানে প্রণতি, প্রার্থনা নিবেদন ও ভজন কীর্তন করতেন।

👉বর্তমানেও বিকেল বা সন্ধ্যাবেলায় দম্পতিগণ খুব সাজগোজ করেন বটে, কিন্তু মন্দিরে যাওয়ার জন্য নয়। তাঁরা আধুনিক সিনেমা-হলে যাওয়ার জন্যই ব্যস্ত।

👉বৈদিক ভাবাপন্ন স্বামী-স্ত্রী সুপুত্র লাভের উদ্দেশ্যে ভগবানের কাছে ঐকান্তিকভাবে প্রার্থনা করতেন। কিন্তু বর্তমানের স্বামী-স্ত্রী সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা তো দূরের কথা, তারা সন্তান লাভ করতেই চান না। সেই জন্যে তারা সন্তানকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মেরে ফেলবার পরিকল্পনা করছেন।

👉অধিকাংশ মানুষ সংসার-ধর্ম ছেড়ে অধর্মের সংসার করছে সন্দেহ নেই। এইজন্যই আত্মহত্যা, সন্তান হত্যা, ভ্রূণহত্যা, মাতৃপিতৃ হত্যা, বধূ হত্যা, ভ্রাতৃবিরোধ, নানাবিধ উৎপাত প্রতিদিন ঘটে চলেছে।

👉আমাদের পরম গুরুদেব সচ্চিদানন্দ শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর ছিলেন আদর্শ গৃহস্থ। তিনি কৃষ্ণভক্তিময় সংসারের কথা বলেছেন। ‘কৃষ্ণের সংসার কর ছাড়ি অনাচার।’

👉সংসার না করে ধর্ম আচরণ করা যায়। কিন্তু ধর্ম আচরণ না করে সংসার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

শ্রীজগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ.....?

শ্রীজগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ?

নারদ মুনির একবার বাসনা হলো যে তিনি ভগবান নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। কিন্তু যা ছিল অসম্ভব। কারন নারায়নের প্রসাদ কেবল মাত্র মহালক্ষী ব্যাতীত অন্য কেউ পেতে পারেন না। এই সংকটে নারদ মুনি লক্ষীদেবী কে প্রসন্ন করার হেতু তপস্যা শুরু করলেন। অতঃপর ১২ বছর
তপস্যার পর দেবী লক্ষী প্রসন্ন হলেন এবং নারদ মুনিকে বললেন - তোমার তপস্যায় আমি সন্তুষ্টহয়েছি,বলো কি বর চাও তুমি? উত্তরে মুনিবর বললেন যে তিনি নারায়নের প্রসাদ পেতে চান!! মাতা লক্ষী বিপদে পড়ে গেলেন,কিন্তু নারদ মুনিকে বরও যে দিতে হবে।তাই তিনি তথাস্তু বলে দিলেন। লক্ষীদেবী বললেন ঠিক আছে তুমি এখানে অপেক্ষা কর, নারায়নের ভোজনশেষে তার অবশেষ প্রসাদ তুমি পাবে। অবশেষে যখন নারদ মুনি সেই প্রসাদ পেল তা সেবা করে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল। বীনার ছন্দে নারায়ণ..নারায়ণ বলতে বলতে কৈলাস অভিমুখে যাত্রা করলেন। শিব তখন নারদ  মুনিকে তার আনন্দের হেতু জানতে চাইলেন।নারদ মুনি তখন সবিস্তারে বর্ননা করলেন। তা শুনে শিবের ও ইচ্ছা হলো যে সেও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। নারদ মুনি বললেন যে তিনি সব খেয়ে ফেলেছেন।কিন্তু এখন উপায় কি হবে??? নারদ মুনি তার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে হাতের একপাশে একবিন্দু প্রসাদ লেগে আছে। শিবজী সেটা জল দিয়ে ধুয়ে সেবা করলেন। সেই চিন্ময় প্রসাদের এমনই স্বাদ ছিল যে ওইটুকু খেয়েই শিব আনন্দে তান্ডব নৃত্য শুরু করে দিলেন। ওইদিকে মাতা পার্বতী এই তান্ডব নৃত্যের শব্দ শুনতে পেলেন। আর ভাবলেন যে এখনতো পৃথিবীর ধংসের সময় উপস্থিত হয়নি, তবে স্বামী কেনো তান্ডব নৃত্য শুরু করলেন!! নিকটে গিয়ে শিবজীকে জিজ্ঞেস কররেন এবং ঘটনার বিবরন শুনলেন। তাখন মাতা পার্বতী বললেন তিনিও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। কিন্তু এখনতো আর কোন ভাবে সম্ভব না। পার্বতী দেবী অভিমান করলেন যে তিনি পত্নী হওয়া সও্বেও কেন তার স্বামী নারায়নের প্রসাদ একা সেবা করেছেন!!! তখন মাতা পার্বতী নারায়নের ধ্যান শুরু করলেন। দেবী পার্বতীর তপস্যায় তুষ্ট হয়ে নারায়ন তাকে দর্শন দেন এবং বললেন - বলো পার্বতী তুমি কি বর চাও। তখন মাতা পর্বতী বললেন, হে নারায়ন আপনিতো সবই জানেন। তবে আমার আরও প্রর্থনা আছে। এই জগতের সবাই আমার সন্তান। হে ভগবান সন্তানদের রেখে আপনার প্রসাদ শুধু আমি একা পাব তা কখনই হতে পারে না।তাই আপনার মহাপ্রসাদ যাতে জগতের সবাই পায়,সেটাই আমার প্রর্থনা। উত্তরে ভগবান বললেন- কলিকালে আমি যখন জগন্নাথদেব রুপে লীলা করব তখন আমি আকাতরে আমি আমার মহাপ্রসাদ বিতরন করব। সেই প্রসাদ প্রথমে তোমাকে দেয়া হবে,পরে তা জগতের সবাইকে দেয়া হবে। যদি আপনারা কেউ পুরীতে গিয়ে থাকেন সেখানে দেখতে পাবেন-- জগন্নাথ দেবের মন্দিরের পাশে বিমলাদেবীর(পার্বতী দেবী) মন্দির আছে। সেখানে জগন্নাথের প্রসাদ প্রথমে দেবী পার্বতীকে অর্পন করা হয়। পরে সেই মহাপ্রসাদ সবাইকে বিতরন করা হয়।[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

কৃষ্ণ কেন জগন্নাথরুপে প্রকট হলেন......??


 

মহিষীগণ ভগবানের
বৃন্দাবন-লীলা জানার জন্য কৌতুহলী হয়ে উঠলেন । কি এমন
সেখানে হয়েছিল যে প্রভু তা ভুলতে পারছেন না ?------- "কিন্তু
আমাদের প্রিয় স্বামীর শৈশবলীলা---- যখন তিনি শিশুরুপে
বৃন্দাবনে লীলা করেছেন সেই লীলা কথা কে আমাদের বলতে
পারে ?" তাঁরা জানতে পারলেন যে মাতা রোহিণী
ভগবানের বৃন্দাবন লীলা প্রক্যক্ষভাবে দর্শন করেছিলেন
এবং তাঁদের মহা সৌভাগ্য যে তিনি এখন দ্বারকায় বাস
করছেন । একদিন সকল মহিষীগণ কৌতুহল চিত্তে
রোহিণীদেবীর কাছে গিয়ে কৃপাপূর্বক ভগবানের কৈশোর-
যৌবন লীলা তাঁদেরকে বলার জন্য নোহিণীদেবীক
 আহ্বান করলেন । মাতা রোহিণী উপলব্দি করলেন যে
রাণীগণ ভগবানের ব্রজলীলা শ্রবণের জন্য আগ্রহ হয়েছে ।
তিনি বললেন, "বাস্তবিকই শ্রীকৃষ্ণের ব্রজবিলাস-লীলা
অনোন্য, অনুপম-এতই বিশিষ্ট এই লীলা যে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ ও
এই লীলা মহিমা শ্রবণ করে এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন । আমি
আপনাদের কাছে ঐসব অপূর্ব বিষ্ময়কর ব্রজলীলা বর্ণনা
করতে পারি । কিন্তু একটি শর্তেঃ আমি যখন সেইসব লীলা
কাহিণী বর্ণনা করব, তখন কৃষ্ণ বলরাম যেন শ্রবণ করতে না
পারে । যদি তাঁরা শ্রবণ করে, তাহলে বড় আকারের সমস্যার
সূচনা হবে ।" একবার কৃষ্ণ ও বলরাম দ্বারকার সুধর্ম সভাগৃহে
একটি সভায় যোগদানের জন্য গমন করলেন । তখন শ্রীকৃষ্ণের
সকল মহিষীগণ তাঁদের অনুপস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করলেন ।
তাঁরা সকলে একটি প্রশস্ত কক্ষে সমবেত হয়ে রোহিণী
মাতাকে শ্রীকৃষ্ণের শৈশব লীলা বর্ণনা করার অনুরোধ
করলেন । ঐ দুই ভাই, কৃষ্ণ - বলরাম যাতে এই বর্ণনা শ্রবণ করতে
না পারে, সেটা নিশ্চিৎ করার জন্য মাতা রোহিণী
সুভদ্রাদেবীকে দ্বাররক্ষীর সেবা গ্রহণ করতে বললেন । ঠিক
হল তিনি ওখানে কৃষ্ণ -বলরামের আগমন হলে
রোহিণীমাতাকে ইঙ্গিতে জানিয়ে দিবেন । এখন সবকিছুই
প্রস্তুত । সমস্ত মহিষীগণ প্রবল আগ্রহে ও উত্তেজনায় সেখানে
রোহিণীমাতাকে ঘিরে সমবেত । সুভদ্রা সেই প্রশস্ত কক্ষের
দ্বারে তাঁর দুই হাত বিস্তার করে দ্বার রোধ করে দাঁড়িয়ে
আছেন, যাতে কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে, বিশেষতঃ
কৃষ্ণ- বলরাম । রোহিণীমতিা আনন্দিত অন্তরে ব্রজবৃন্দাবনে
শ্রীকৃষ্ণের শৈশবলীলা বর্ণনা আরম্ভ করলেন । সেই বর্ণনা
ছিল পরম প্রীতিকর, শ্রবণরম্য এবং দিব্য ভাবোচ্ছাসপূর্ণ।
মহিষীগণ অচ্ছিন্নমনোযোগে শ্রবণ করতে লাগলেন । তাঁরা
রোহিণীমাতার মুখনিঃসৃত ব্রজবিলাসকথা-রুপ সুধামৃতধারা
তাঁদের কর্ণের দ্বারা পানে এতই নিমগ্ন হয়ে পড়লেন তাঁদের
বাহ্যজ্ঞান বিলুপ্ত হয়ে গেল । সুভদ্রা যদিও দ্বাররক্ষার
দ্বায়িত্বে নিয়োজিত হয়েছিলেন, তিনি শ্রীকৃষ্ণের অনুপম
লীলাবিলাস-কথা শ্রবণের সুযোগটি অপচয় করতে পারলেন না
। আর এইভাবে শ্রবণে নিমগ্ন হওয়ায় দ্বারকার মহিষীদের
মতোই তাঁরও বাহ্যজ্ঞান লোপ পেল । কৃষ্ণ- বলরাম সভায়
যোগদান করে সেখানে ব্যস্ত থাকলেও তাঁরা বুঝতে পারলেন
যে মাতা রোহিলী তাঁদের বৃন্দাবন লীলাকথা বর্ণনা করছেন
। ঐকথা শ্রবণের জন্য সুতীব্র লালসায় অভিভূত হয়ে তাঁরা
হঠাৎই সভাগৃহ পরিত্যাগ করে সেই স্থানের দিকে ধাবিত
হলেন, যেখানে রোহিণীদেবী ও রাণীগণ সমবেত হয়েছিলেন
। যখন তাঁরা দ্বারে পৌছালেন, তখন তাঁরা দেখলেন যে
সুভদ্রা কক্ষদ্বার পাহাড়ার দ্বায়িত্বে সেখানে দাঁড়িয়ে
আছেন । কৃষ্ণ-বলরাম সুভদ্রার উভয় পাশে দাঁড়ালেন এবং
তৎক্ষণাৎ তাঁরা মাতা রোহিণীর বর্ণনা শ্রবণে নিমগ্ন হলেন
সুভদ্রা ব্রজকথা শ্রবণে সম্পূর্ণ তন্ময় হওয়ায় তাঁর বাহ্য চেতনা
বিলুপ্ত হয়েছিল, সেজন্য তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও
শ্রীবলরামের উপস্থিতি লক্ষ্য করলেন না । তাঁরা তিনজন
এইভাবে লীলা শ্রবণের দ্বারা ভাবাবিষ্ট হয়ে পড়লেন, তখন
তাঁদের দিব্য দেহে মহা ভাববিকার-লক্ষণ প্রকটিত হতে শুরু
করল । " কি পরমাদ্ভুত, দিব্যসুন্দর লীলা ! ব্রজবাসীগণের কি
অবর্ণনীয় স্নেহ-প্রেম !" ব্রজবাসীদের অদ্ভুত প্রীতি-প্রেম-
বিরহ শ্রবণে বিষ্ময়াভিভুত হওয়ায় তাঁদের দিব্য অঙ্গ
ভাবতরঙ্গে পরিপ্লুত হল । ভাবাতিশয্যাবশতঃ তাঁদের নয়ণ
ক্রমশঃ বড়, বিস্ফোরিত হতে শুরু করল, তাঁদের হস্ত -পদ তাঁদের
দেহের সধ্যে সংকুচিত হল । এইভাবে হস্ত- পদাদির সংকোচন
হওয়ায় কৃষ্ণ-বলরাম এবং সুভদ্রার কলেবর কুর্মাকৃতি ধারণ করল
। ঠিক সেই সময়ে নারদ মুনি উপস্থিত হলেন । অনেক দূর থেকে
তিনি কৃষ্ণ-বলরাম ও সুভদ্রার এই অদ্ভুত ভাবমন্ডিতরুপ দর্শন
করতে পারছিলেন যখন তিনি তাঁদের নিকটবর্তী হলেন, তখন
কৃষ্ণ, বলরাম ও তাঁদের ভগ্নী সুভদ্রার বাহ্য চেতনা ফিরে এল ।
তাঁদের দেহ স্বাভাবিক আকার ধারণ করল । তাঁরা তাঁদের
মহাভাব সংবরণ করলেন, যা তাঁদের এই বিশেষরুপে অভিব্যক্ত
হয়েছিল । নারদ মুনি দিব্য আনন্দোল্লাসে দুবাহু তুলে নিত্য
করতে লাগলেন । তিনি বললেন, " আমি দর্শন করেছি ! আমি
দর্শন করেছি ! আপনারা আমার কাছ থেকে এটি সংগোপন
করার চেষ্টা করছেন । হে প্রিয় প্রভু, আমি আপনার অনেক
আশ্চর্যজনক দিব্যরুপ দর্শন করেছি । কিন্তু আমি এমন অনুপম -
সুন্দর রুপ কখনো দর্শন করিনি ! আমি বিনীতভাবে প্রার্থনা
করছি যে আপনাদের এই দিব্য শুভ রুপ এই ধরণীতে কোথাও
প্রকট করুন যাতে প্রত্যেকেই আপনার এই সবচেয়ে বিশিষ্ট,
সর্বোত্তম মহাভাব- প্রকাশ-রুপ দর্শন করতে পারে ।" তাঁর পরম
ভক্ত নারদ মুনির অভিলাষ পূর্ণ করার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই
রুপ প্রকটিত করেছেন এবং এইরুপে তিনি নিক্যকাল
শ্রীক্ষেত্র, পুরুষোত্তম ধামে বিরাজ করছেন ।
শ্রীজগন্নাথদেবের লীলাকথামৃত,
[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

কখনও ভগবানের প্রতি বিশ্বাস হারাবে না........






একটি হাতি ও একটি কুকুর ঠিক একই সময়ে
গর্ভবতী হলেন । ছয় মাস পর কুকুরটি ছয়টি কুকুর
ছানা জন্ম দিল । ছয় মাস পর কুকুরটি আবার গর্ভবতী
হলো এবং নয় মাস পর এটি আর এক ডজন কুকুর
জন্ম দিল । এভাবে এই সংখ্যা ধারা চলতে থাকল ।
আঠারো মাসে কুকুরটি হাতিটিকে জিজ্ঞাসা করল –
“তুমি কি সত্যিই নিশ্চিত তুমি গর্ভবতী? আমরা
দুজনে একসঙ্গে গর্ভবতী হলাম, আমি এর
মধ্যে তিন বার কয়েক ডজন বাচ্চা জন্ম দিলাম এবং
তারা এখন অনেক বড় হয়ে গেল কিন্তু তুমি
এখনও গর্ভবতী, আসলে কি তুমি গর্ভবতী?”

হাতি বলল - এখানে কিছু রয়েছে যা আমি
তোমাকে বোঝাতে চাই । আমি যা গর্ভে ধারন
করেছি তা কুকুর নয় হাতি । আমি দুইবছরে একবার
জন্ম দান করি । যখন আমার শিশু জন্ম গ্রহন করবে
তখন এই পৃথিবী তা বুঝতে পারবে, যখন আমার
শিশু রাস্তায় হাঁটবে তখন মানুষ তাকে বিস্ময়ের
সঙ্গে দেখবে, যা আমি গর্ভে ধারন করেছি তা
সবার দৃষ্টি আকর্ষন করে । তাই আমি যা ধারন
করেছি তা মহান এবং সাহসী ।
শিক্ষা – কখনও ভগবানের প্রতি বিশ্বাস হারাবে না
যখন তুমি দেখবে অন্যেরা তাদের প্রার্থনার ফল
পাচ্ছে । তুমি হতাশ হয়ো না । ভগবানের প্রতি
তোমার দৃঢ় বিশ্বাস রাখ আর প্রার্থনা চালিয়ে যাও ।
যদি তুমি তোমার প্রার্থনার ফল নাও পাও হতাশ হয়ও না।
নিজেকে বল – “আমার সময় আসছে ততদিন
আমাকে ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং যখন সেই সময়
আসবে তখন সবাই প্রশংসায় মুখরিত করবে ।”

কার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত......?

সম্পর্ক স্থাপন করবেন কার সাথে................?


এই জড় জগতের কোন সম্পর্কই চিরস্থায়ী নয়। এখানে প্রতিটি সম্পর্কই অনিত্য ও পরিবর্তনশীল। এ জগৎতে আপনি যার সাথেই সম্পর্ক করুন না কেন, একদিন না একদিন সেই সম্পর্ক ছিন্ন হবেই। মা-বাবা, ভাই-বোন,বন্ধু-বান্ধন কেউই চিরদিন আপনার পাশে থাকবে না। কিন্তু,কৃষ্ণের সাথে আমাদের নিত্য সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আমাদের সাথে অনন্তকাল ধরে রয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।

তাই,আমাদের উচিৎ কৃষ্ণের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা এবং সেই সম্পর্কের মর্যাদা রক্ষা করা। ভগবানের সাথে আমরা শান্ত, দাস্য, সখ্য,
বাৎসল্য, মাধুর্য এই পাঁচটি রসে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারি।আমরা যদি যেকোন একটি সম্পর্ক স্থাপন করে তার আরাধনা করি, তাহলে আমরা নিত্য আনন্দে থাকব। এ জগতেও আমরা কৃষ্ণের সাথে থাকব এবং মৃত্যুর পরও আমরা কৃষ্ণের সাথে থাকব। কখনও আমাদের সম্পর্ক ছিন্ন হবে না।

শাক-সবজি খেয়ে গাছপালা গুলিকে হত্যা কি পাপ নয় ?? পশু হত্যাই পাপ !!!

পশু হত্যা পাপ !!! শাক-সবজি খেয়ে গাছপালা গুলিকে

হত্যা কি পাপ নয় ??
বৈষ্ণব দর্শণ শিক্ষা দেয়, প্রয়োজন ব্যতীত
একটি গাছকেও হত্যা না করতে। (গীতা-9/26)
পড়ুন..
তাৎপর্য:- কেউ যদি ভক্তি ও ভালোবাসার সঙ্গে
আমাকে পত্র, পুষ্প, ফল বা শুধুমাত্র জলও উৎসর্গ
করে, আমি তা গ্রহণ করি।
শ্রীকৃষ্ণ যেমন খাদ্য উৎসর্গ করতে বলেছেন,
আমরা তাকে তাই নিবেদন করি, এবং তার প্রসাদ গ্রহণ
করি। তাকে নিরামিষ খাদ্য উৎসর্গ করলে যদি পাপ হয়,
তাহলে তা কৃষ্ণের পাপ-আমাদের নয়।
কিন্তু ভগবানকে কোন পাপ স্পর্শ করতে পারে
না। তিনি সূর্যের মতো। দেবতা সূর্যদেব হল
শ্রীকৃষ্ণের কর্মচারী। তার ক্ষমতা দেখুন-
মূত্রের মতো দূষিত পদার্থকেও শুকিয়ে শুদ্ধ
করে দেয়। তাহলে ভাবুন কৃষ্ণ কত শক্তিশালী।
যুদ্ধক্ষেত্রে কোন সেনাপতি যখন কাউকে -
শত্রুপক্ষের সৈন্যদের আক্রমনের নির্দেশ
দেন- তখন শত্রুদের হত্যা করার ফলে তাকে
পুরষ্কৃত করা হয়। কিন্তু সেই সৈন্যটি যদি নিজের
ইচ্ছামতো কাউকে হত্যা করে,তাকে শাস্তি
পেতে হয়।
তেমনই আমরা কৃষ্ণের নির্দেশে যদি তার প্রসাদগ্রহণ করি- আমাদের কোন পাপ হয় না।
(গীতা-3/13) পড়ুন..
তাৎপর্য:- ভগবদ্ভক্তরা যজ্ঞ-অবশিষ্ট খাদ্য গ্রহণ
করে, তাই তারা সব রকমের পাপ থেকে মুক্ত।
কিন্তু যারা নিজেদের ভোজনের জন্যই শুধু রন্ধন
করে, তারা কেবল পাপই ভোজন করে।
তাহলে শ্রীকৃষ্ণ কি পশুমাংস আহার করার অনুমতি
দেন না ??
হ্যাঁ দেন.....তবে শুধু পশুদের। আপনি তো
নিজেকে মানুষ বলেন। কোর্ট প্যান্ট পরে
সেজেগুজে থাকেন। তবে এখনও কেন আদিম
যুগের সভ্যতা পালন করছেন ?
যুক্তি দেখুন-গরু, ছাগল, ভেড়া, গাধা এদের সাথে
নিজের দাঁতের পাটি মেলান-একই। অর্থাৎ ভগবান
আপনাকে নিরামিষ খাওয়ার অনুমতি দিয়ে পাঠিয়েছেন।
এবার কুকুর,শেয়াল,বাঘ,সিংহ এদের দাঁতগুলি দেখুন-
সামনের দাঁতগুলি ধারালো। অর্থাৎ এদের শক্ত মাংস
ছিঁড়ে খাওয়ার অনুমতি দেওয়া আছে।
পশুরা নিজের কর্মদোষে পশুদেহ পেয়েছে।
আপনি অনেক জন্মের সুকৃতির ফলে মানবদেহ
পেয়েছেন, কেন অবহেলায় সময় নষ্ট
করছেন !!!
শুধরে যান- ভক্তি পথে আসুন, নিজের আত্মাকে
উন্নতির দিকে নিয়ে চলুন । তারপর পরের
জন্মে,, যে পশুর মাংস খাচ্ছেন, সে মানবদেহ
পেয়ে আপনাকে খাবে।
শাস্ত্র পড়ুন -- ইহা সত্য।
মাং মানে আমাকে সঃ মানে সে।
যাকে আমি খাচ্ছি, আমাকেও সে কোন জন্মে
খাবে।। অথবা পরজন্মে প্রকৃতি আপনাকে বাঘ,সিংহ
ইত্যাদি কোন মাংশাসী প্রাণীদেহ দেবে, যাতে
খুব করে মাংস খেতে পারেন। তৈরী থাকুন।
" সাবধান হউন "
x[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

"হরে কৃষ্ণ" নামের কি তাৎপর্য ??

"হরে কৃষ্ণ" মহামন্ত্রের তাৎপর্যঃ । উচ্চ স্তরে করেছে যাকে প্রতিষ্ঠা তিনি আর কেহ নন কৃষ্ণ ছাড়া। তাই মানুষের উচিত “হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে পারমার্থিক জীবনে উন্নয়ণ ঘটানো। নিম্নে “হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য কি তা বর্ণিত হলঃ  


হরে কৃষ্ণ  হরে কৃষ্ণ  কৃষ্ণ কৃষ্ণ  হরে হরে।
হরে রাম  হরে রাম  রাম রাম  হরে হরে।।
ষোল সখা ষোল সখী বত্রিশ অক্ষর ।
হরিনাম তত্ত্ব ধর্ম অতি গূঢ়তর।।
মাধুর্য মহিমা তত্ত্ব যে জন জানয়।
রাধাকৃষ্ণ নিত্যধামে গমন করয়।।
‘হরে কৃষ্ণ’ ‘হরে রাম’ এই মন্ত্র ষড়ক্ষর।
এই তিন নাম তন্ত্রে সূত্র কৈল হর।।
তিন নামে ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর।
বৃত্তি করি কৈলা গৌর জগত গোচর।।
নাম রূপে প্রেম দিলা আপনি যাচিয়া।
নামে মত্ত ভক্ত চিত্ত বেড়ায় নাচিয়া।।
করুণার কল্পতরু এই হরিনাম।
কামনায় হবে মুক্তি প্রেম ব্রজধাম।।
সংক্ষেপে কহিনু এই হরিনাম তত্ত্ব।
জীবের দুর্লভ এই প্রেমের মহত্ত্ব।।

অষ্ট ‘হরে’ নামের তাৎপর্য

প্রথমত, ‘হরে’- চন্দ্রাবলী
দ্বিতীয়ত, ‘হরে’- প্রেমময়ী শ্রীরাধা
তৃতীয়ত, ‘হরে’- সুভাষিণী
চতুর্থত, ‘হরে’- সিংহাসন
পঞ্চমত, ‘হরে’- সুদর্শন
ষষ্ঠত, ‘হরে’- শেষ দেব
সপ্তমত, ‘হরে’- সাবিত্রী
অষ্টমত, ‘হরে’- রেবতী

চারি ‘কৃষ্ণ’ নামের তাৎপর্য

প্রথমত, ‘কৃষ্ণ’- পরম ব্রহ্ম শ্রীগোবিন্দ
দ্বিতীয়ত, ‘কৃষ্ণ’- বাসুদেব
তৃতীয়ত, ‘কৃষ্ণ’- জগন্নাথ
চতুর্থত, ‘কৃষ্ণ’- বলভদ্র
চারি ‘রাম’ নামের তাৎপর্য
প্রথমত, ‘রাম’- শ্রীরাধিকা
দ্বিতীয়ত, ‘রাম’- লক্ষ্মী
তৃতীয়ত, ‘রাম’- সরস্বতী
চতুর্থত, ‘রাম’- সুভদ্রা

হরিনাম মহামন্ত্রের বত্রিশ অক্ষরের তাৎপর্য

‘হ’- অক্ষরে শ্রীললিতা সখী মস্তকেতে।
‘রে’- অক্ষরে শ্রীবিশাখা দক্ষিণ বাহুতে।।
‘কৃ’-অক্ষরে চম্পকলতা সখীকন্ঠে রয়।
‘ষ্ণ’- অক্ষরেচিত্রা সখী বাহুতে শোভয়।।
‘হ’- অক্ষরে রঙ্গদেবী সখী থাকে হাতে।
‘রে’- অক্ষরে সুদেবী যে থাকয়ে পৃষ্ঠেতে।।
‘কৃ’- অক্ষরে তুঙ্গবিদ্যা বদন উপরে।
‘ষ্ণ’- অক্ষরে ইন্দুরেখা শ্রবণ বিবরে।।
‘কৃ’- অক্ষরে শশীরেখা রহে ভুরুযুগে।
‘ষ্ণ’- অক্ষরে বিমলা সখী ভ্রুর ডান ভাগে।।
‘কৃ’- অক্ষরে পালিকা সখী ভ্রুর বামে রয়।
‘ষ্ণ’- অক্ষরে লবঙ্গমঞ্জরী থাকয়ে হৃদয়।।
‘হ’- অক্ষরে শ্যামলা সখী নাভীতে থাকয়।
‘রে’- অক্ষরে মধুমতী নাভি মধ্যে রয়।।
‘হ’- অক্ষরে ধন্যা সখী করাঙ্গুলি রয়।
‘রে’- অক্ষরে মঙ্গলা কর অধোমুখী হয়।।
‘হ’- অক্ষরে শ্রীদাম সখা জঙ্ঘায় থাকয়।
‘রে’- অক্ষরে সুদাম সখা জানু নিবসয়।।
‘রা’- অক্ষরে বসুদাম সাখা থাকে ভুরু অঙ্গে।
‘ম’- অক্ষরে অর্জুন সখা সদা থাকে লিঙ্গে।।
‘হ’- অক্ষরে সুবল সখা দক্ষিণ পদেতে।
‘রে’- অক্ষরে কিঙ্কিণী সখা আছয়ে বামেতে।।
‘রা’- অক্ষরে চাতক সখা পূর্বে নিবসয়।
‘ম’- অক্ষরে মধুমঙ্গল অগ্নিকোণে রয়।।
‘রা’- অক্ষরে শুক সখা থাকয়ে দক্ষিণে।।
‘ম’-অক্ষরে বিশাল সখা রয় নৈঋর্ত কোণে।
‘রা’- অক্ষরে মহাবল সখা পশ্চিমে থাকয়।।
‘ম’- অক্ষরে বৃষভ সখা বায়ুকোণে রয়।
‘হ’- অক্ষরে দেবপ্রস্থ সখা উত্তরেতে।।
‘রে’- অক্ষরে উদ্ভব সখা আছে ঈশানেতে।।
‘হ’- অক্ষরে মহাবাহু ঊর্ধ্বে রয় সুখে।
‘রে’- অক্ষরে ঈশান সখা আছে অধোমুখে।।
এই ত কহিনু ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর তাৎপর্য ।
যেই জন জানে ইহা ভব ত্রাণ হয়।

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

২১.৬.১৮

তুলসী গাছের কত মাহাত্ম্য

        তুলসী গাছ সম্পর্কে ১০টি তথ্য
=================================
শাস্ত্রে বলা আছে, তুলসী গাছ থাকলে মৃত্যুর দেবতা যমরাজও
নাকি ঘরে ঢুকতে পারেন না! শাস্ত্রে যদি অবিশ্বাসও থাকে, তা-ও
শুধু ভেষজ গুণের জন্য আপনি বাড়িতে একটি তুলসীগাছ রাখতে
পারেন। বাস্তুর দিক থেকেও তুলসীর গুরুত্ব কম নয়। তাই ঘরে
তুলসী গাছ রাখলে সংসারের শুভ-অশুভ মাথায় রেখে কিছু নিয়ম
মেনে চলা উচিত।

১. শাস্ত্র মতে, বাড়িতে বা বারান্দায় তুলসী রাখলে উত্তর বা
উত্তর-পূর্ব দিকে রাখুন।


২. শিবলিঙ্গে বা শিবের পুজোয় তুলসী লাগে না। পৌরাণিক আখ্যান
অনুযায়ী দানব শঙ্খচূড়ের স্ত্রী হল তুলসী। এই শঙ্খচূড়
শিবের হাতেই প্রাণ হারিয়েছিল। ফলে, শিবের পুজোয় তুলসী
দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
শঙ্খচূড় নামে এক ভয়ানক অসুর ছিল, যার স্ত্রী ছিলেন তুলসী
দেবী। তুলসী দেবী ছিলেন একজন সতী নারী। সেই
সাথে তিনি ছিলেন শ্রী কৃষ্ণের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ
উপাসকমণ্ডলী একজন। তার সতীত্ব এতই দৃঢ় ছিল যে ভগবান শিব
যুদ্ধে তাঁর স্বামী শঙ্খচূড়কে পরাজিত করতে পারছিলেন না। তিনি
পালনকর্তা বিষ্ণুর শরণাপর্ন হলেন।
ভগবান বিষ্ণু কোন উপায় না পেয়ে শঙ্খচূড়ের রূপ ধরে
তুলসী দেবীর কাছে গেলেন। তুলসী দেবী ভগবান
বিষ্ণুকে তার স্বামী হিসেবে চিন্তা করতেই, মুহূর্তমধ্যে তার
সতীত্ব ভাঙ্গা পড়লো। আর এই সুবিধা গ্রহণ করে শিব যুদ্ধে
শঙ্খচূড়কে বধ করলেন।
যখন তুলসী দেবী ভগবান বিষ্ণুকে চিনতে পারলেন তখন তিনি
রাগান্বিত হয়ে ভগবান বিষ্ণুকে অভিশাপ দিলেন যে, তিনি পাথর(শিলা)
হয়ে যাবেন। ভক্তের এই অভিশাপ ভগবান গ্রহন করলেন।আর,
তাঁর এই রূপ আজ নারায়ণ শিলা হিসেবে পূজিত হয়ে থাকে।
এরপর তুলসী দেবী আগুনে আত্মহুতি দেন। ভগবান বিষ্ণুর
আশীর্বাদে তুলসী দেবীর সেই দেহ ভস্ম হতে সৃষ্টি হয়
তুলসী গাছ।
এই কারনেই, তুলসী পাতা ভগবান শ্রী কৃষ্ণের প্রিয় এবং কৃষ্ণ
পূজা তথা নারায়ণ শিলা পূজায় তুলসী পাতা অপরিহার্য।

৩. রবিবার বা কোনও একাদশীর দিন গাছ থেকে তুলসীর পাতা
ছিঁড়বেন না। এমনকী সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের সময়ও নয়। এটা
অশুভ।

৪. তুলসী গাছ শুকিয়ে বা মরে গেলে তুলে যেখানে
সেখানে ফেলবেন না। নদী বা পুকুরে ফেলুন। বাড়িতে বা
বাগানে মরা তুলসী গাছ রাখা সংসারের জন্য অশুভ। মরা গাছ সরিয়ে
তুলসীর নতুন চারা বসান।

৫. তুলসীকে আমরা স্ত্রী গাছ হিসেবে দেখি। এটা খেয়াল
রাখবেন তুলসী গাছের পাশেই যেন না ক্যাকটাস বা কাঁটাজাতীয়
গাছ থাকে। তাতে সংসারে অশান্তি বাড়ে। সুস্বাস্থ্য ও সংসারে
সুখশান্তি চাইলে তুলসীগাছের দু-পাশে কাঁটা নেই এমন ফুলের
গাছ রাখুন।

৬. মনে রাখবেন তুলসী হল অক্সিজেনের 'শক্তিঘর'। দিনে
একবার অন্তত তুলসীগাছের সামনে এসে প্রাণভরে শ্বাস নিন।
শরীরের ভিতরে কোনও সংক্রমণ থাকলে, দূর হবে। ঘরে
তুলসী রাখলে রোজ সকালে পুজো করতে ভুলবেন না।
সন্ধ্যায় তুলসীতলায় প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালিয়ে আসবেন।

৭. ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে দিনে অন্তত দুটো করে
তুলসীর পাতা খান।

৮. মনে রাখবেন তুলসীর পাতা চিবিয়ে না খাওয়াই ভালো।

৯. তুলসী ঘরের নানা দোষ কাটায় ও পজেটিভ এনার্জি জোগান
দেয় l

১০. কখনই তুলসী গাছের কাছে ঝাঁটা, ঘর মোছার ন্যাতা, ও নোংরা
কিছু রাখবেন না,,,,,

জয় তুলসী মহারানী কি...(জয়)

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

সনাতন ধর্মে কয়টা ঈশ্বর আছে ??

সনাতন ধর্মে কয়টা ঈশ্বর আছে ??


পবিত্র বেদ কি বলে দেখি।।

















♥ যজুর্বেদ ৪০.১→
এই সমস্ত বিশ্ব শুধু মাত্র একজন ঈশ্বর দ্বারা সৃষ্টি ও
পরিচালিত হচ্ছে।কখনই অন্যায় করো না অথবা অন্যায়
ভাবে সম্পদ অর্জনের ইচ্ছা করো না।
♥ ঋগবেদ
১০.৪৮.১:→ঈশ্বর সর্বত্রই বিদ্যমান এবং বিশ্ব
ব্রক্ষান্ডকে পরিচালিত করেন। পৃথিবীতে একমাত্র
তিনিই জয় ও শ্বাশত কারন প্রদান কারী। প্রতিটি আত্মা
অবশ্যই তাঁকেই সন্ধান করবে যেমন করে একটি
শিশু তারা বাবাকে খোঁজে। শুধুমাত্র তিনি আমাদেরকে
খাদ্য ও স্বর্গীয় সুখ প্রদান করেন।
♥ ঋগবেদ
১০.৪৮.৫→ ঈশ্বর সমস্ত পৃথিবীকে আলোকিত
করেন। তিনি অপরাজেয় এবং মৃত্যুহীনও। তিনি এই
জগত সৃষ্টিকারী। সকল আত্মার উচিত পরম সুখ সন্ধান
করা জ্ঞান অন্বেষণ ও কর্মের মধ্য দিয়ে। তারা
কখনই ঈশ্বরের বন্ধুত্ব থেকে নিজেকে পরিহার
করবে না।
♥ ঋগবেদ ১০.৪৯.১→ ঈশ্বরই সত্যের
সন্ধানীদের সত্যজ্ঞান দিয়ে থাকেন। তিনিই শুধু
জ্ঞানের প্রর্বতক এবং ধার্মিক ব্যাক্তিদের পরম সুখ
লাভের জন্য পবিত্র কর্ম করতে উৎসাহী করেন।
তিনিই একমাত্র জগতের সৃষ্টিকারী এবং এর পরিচালক।
ঙটাই ঈশ্বর ব্যাতীত অন্য কারো উপাসনা করো না।
♥ যজু্র্বেদ ১৩.৪: সমগ্র বিশ্বে শুধু একজনই
হর্তাকর্তা রয়েছেন। শুধুমাত্র তিনিই পৃথিবী, আকাশ,
এবং অন্যন্যা দৈব সত্ত্বাকে ধারণ করেন। তিনি নিজেই
পরম সুখী! তিনিই শুধু মাত্র তিনিই আমাদের দ্বারা উপাসিত
হবেন।
♥ অথর্ববেদ ১৩.৪.১৬-২১→ তিনি না দুই, না
তিন, না চার, না পাঁচ, না ছয়, এমনকি না সাত, না আট, না নয়, না
দশ। তিনি একজন এবং শুধুই একজন। তিনি ছাড়া অন্য কেউ
ঈশ্বর নন। সকল দেবতাগণ তার মাঝেই থাকেন এবং
তার দ্বারাই পরিচালিত হন। তাই তিনি ছাড়া অন্য কেউ উপাস্য
নাই।
♥ অর্থববেদ ১০.৭.৩৮→ শুধু মাত্র ঈশ্বরই
হলেন শ্রেষ্ট এবং একমাত্র উপাস্য। তিনিই সকল
জ্ঞানের ও কার্যাবলীর উৎস।
♥ যযজুর্বেদ
৩২.১১→ বিশ্ব ব্রক্ষান্ডের সকল স্থানেই তিনি
বর্তমান। কোন স্থানই তাকে আড়াল করতে পারে
না। তিনি নিজেই নিজের কাজ করেন এবং তাঁর কাজ করার
জন্য তাঁর কোন সহায়কের সাহায্যের প্রয়োজন
হয় না। যে আত্মা অনুধাবন করতে পারে যে শুধুমাত্র
ঈশ্বরই তাকে জয় করতে পারে এবং উপভোগ
করতে পারে শর্তহীন অসীম আনন্দ অথবা মকশা।

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

সনাতন ধর্মে মুর্তিপূজা করে কেন ???

মুর্তিপূজা আমরা করি কেন অনেক সনাতন ধর্মের মানুষেরা এই প্রশ্নের মুখোমুখি হন তাই জেনে নিন এবং জানিয়ে দিন সনাতন ধর্ম কত সত্য ও পুরাতন।
প্রশ্নঃ মূর্তিপূজা না করে কি ভগবানের দেখা পাওয়া যায় না ? মূর্তিপূজা আমরা করি কেন ?


উত্তরঃ মূর্তি হল ভগবানের মূর্ত প্রকাশ । নামরূপে ও অর্চাবিগ্রহরূপে শ্রীভগবান জগতে অবতীর্ণ। ভক্ত ভগবানের রূপ-মাধুরী দর্শনে আগ্রহী। তারা কখনও ভগবান নিরাকার নির্বিশেষ এই রকম মনে করে শূন্যের ধ্যানে মগ্ন থাকেন না । যার রূপ নেই তার কথা চিন্তা করা কিংবা ধ্যান করা অসম্ভব। ব্রহ্মণ্ডের আদি জীব শ্রীব্রহ্মা নির্দেশ দিয়েছেন, ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ (ব্রঃ সঃ) ‘পরমেশ্বর ভগাবান শ্রীকৃষ্ণ সৎ ও আনন্দময় বিগ্রহ।’
সেই অপ্রাকৃত রূপ আমাদের চর্মচক্ষুতে দিষ্টিগোচর না হলেও এই ভূমণ্ডলে নাম ও অর্চা বিগ্রহরূপে আমারা অনবরত তাকে স্মরণ ও দর্শন করতে পারি। শাস্ত্রে বলা হয়েছে-
নাম, বিগ্রহ, স্বরূপ-তিন একরূপ।
তিনে ভেদ নাহি তিন চিদানন্দ-রূপ।। ( চৈ. চ. মধ্য ১৭/১৩১)
ভগবানের নাম, ভগবানের শ্রীবিগ্রহ, ভগবৎস্বরূপ এই তিনের মধ্যে ভেদ বা পার্থক্য নেই। কারণ, তা চিন্ময় বস্ত। এতএব, চিন্ময় বস্তু স্থুল-বুদ্ধি জড় ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে উপলুব্ধ হয় না ।
”প্রাকৃতেন্দ্রিয়- গ্রাহ্য নহে, হয় স্বপ্রকাশ।” ( চৈ.চ.মধ্য ১৭/১৩৪)
বিগ্রহ-রূপে ভগবান প্রকাশিত হলেও মায়াবাদী-নির্বিশেষবাদীরা শূর্খের মতো সন্তব্য করে যে, মূর্তিপূজা ভুল।শ্রীপদ্মপুরাণে নির্দেশিত হয়েছে- শ্রীবিষ্ণুর পূজাবিগ্রহে পাথর-বুদ্ধি যার হয়, সে নারকী।
কলিযুগপাবনাবতারী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন--
ঈশ্বরের বিগ্রহ সচ্চিদানন্দাকার।
সে-বিগ্রহে কহ সত্ত্বগুণের বিকার।।
শ্রীবিগ্রহ যে না মানে, সেই ত’ পাষণ্ড।
অদৃশ্য, অস্পৃশ্য, সেই হয় যমদণ্ড্য।।
ভগবদ্বিগ্রহ সচ্চিদানন্দময়। অথচ মায়াবাদীরা তা সত্ত্বগুণের বিকার বলে মনে করে।চিন্ময় বিগ্রহের অবজ্ঞাকারীর মূখদর্শন করা উচিত নয়, স্পর্শ করা উচিত নয়। কারণ সে পাষন্ডী এবং সে যমপুরীর শাস্তিভোগের জন্য নির্দিষ্ট।
বিগ্রহপূজা কখনই কলির মানুষের মনগড়া ধরনা নয়। শ্রীমদ্ভগবতে উল্লেখ আছে--
ত্রেতাদিষু হরেরর্চ্চা ক্রিয়ায়ৈঃ কবিভিঃ কৃতা।। (ভাঃ ৭/১৪/৪০) ত্রেতাদি অথার্ৎ, ত্রেতা দ্বাপর যুগেও ঋষিগণ শ্রীহরির বিগ্রহের আরাধনা করেছেন।
এই ভারতবর্ষে অনেক বিগ্রহ অধিষ্ঠিত রয়েছেন, সেই সকল বিগ্রহের অপ্রাকৃত লীলাবিলাসের উজ্জ্বল ইতিহাস বিদ্যমান। ভারতবর্ষের সেই সেই স্থানগুলিও মহাতীর্থে পরিণত হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবতে আরও বলা হযেছে--
যত্র য্ত্র হরেরর্চ্চা স দেশঃ শ্রেয়সাং পদম্।
যত্র গঙ্গাদয়ো নদ্য পরাণেষু চ বিশ্রুতাঃ”যে যে স্থানে শ্রীহরির প্রতিমা থাকে এবং যে স্থানে পুরাণ-প্রসিদ্ধ গঙ্গানদী বর্তমান, সেই দেশ মঙ্গলের আশ্রয়।”
( ভাঃ ৭/১৪/২৯)
এই কথা শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিণী গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে--
মূর্তিরূপে যথা করি করেন বিহার।
ভকত-জনের হয় যথা অবতার।।
সেই সব পুণ্য-ভূমি, জানিহ বিশেষে।
যত যত কর্ম; ধন্য হয় সেই দেশে।।।।
কিন্তু কলিযুগে নাস্তিক সভ্যতার দুর্বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের উৎপাতমূলক কার্যকলাপের ফলে সাধারণ জনমানসে ধাম-তীর্থের মাহাত্ম্যই ধরা পড়ে না। বর্তমানে মানুষ নানা দেবদেবীর মূর্তি বানিয়ে পুজা করছে, নেশা।করছে নাচছে, মদ খাচ্ছে। বহু জীবজন্তু বধ করছে। মাছ-মাংস খেয়ে ফূর্তি করছে।
আবার দোখা যায়, অনেকে ভগবদ্ বিগ্রহ রেখেছে। শ্রীগৌরাঙ্গ, রাধাকৃষ্ণ, লক্ষ্মীনারায়ণ কিংবা শালগ্রামের অর্চনা করছে,-অথচ তারা মাছ-মাংস ভক্ষণ ইত্যাদি ভগবদ্ বিরোধী আচরণে তৎপর হয়ে তাদের রক্ষিত ও অর্চিত ভগবদ্ মূর্তির প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করছে। সেক্ষেত্রে শ্রীবিগ্রহ পরমার্থপ্রদ হন না।বরং অনর্থই ভোগ করতে হয়। তাই মাছ-মাংসভোজীদের দ্বারা ভগবানের বিগ্রহ-পূজা একেবারেই নিষিদ্ধ। শাস্ত্রে দির্দেশিত--
সেই মূর্তি করি যেবা ভজে নারায়ণ।
জীবহিংসা করে যদি, নাহি প্রয়োজন

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

|| সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে নরকবাস ||

|| সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে নরকবাস ||

একটি ভ্রমর ও একটি গোবর পোকা দুই বন্ধু ছিল। একদিন ভ্রমর উড়তে উড়তে গিয়ে গোবর পোকার কাছে গিয়ে বলল, বন্ধু...... তোমারও পোকার জীবন আর আমারও পোকার জীবন। কিন্তু দেখ আমাদের দুজনের জীবনে যাপনে কতটা পার্থক্য।তুমি এই দুর্গন্ধ গোবর পচার মধ্যে পরে থেকে তার রস খেয়ে খেয়ে জীবনধারন করছো। আর আমি কত রঙ বেরঙের সুন্দর সুগন্ধী নরম ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। সেই সুগন্ধী ফুলের মধু খায়। তুমি আর এই পচা গোবরের মধ্যে পরে না থেকে আমার সাথে চলো। তুমিও ফুলের মধু খাবে।অনেক বোঝানোর পর ভ্রমর অনেক কষ্টে গোবর পোকাকে রাজি করিয়ে গোবর পোকাকে নিয়ে গেল।
দুই বন্ধু মিলে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে মধু খেতে শুরু করে দিল।মধু পেয়ে গোবর পোকা ভাবছে, বাঃ এতো খুব সুন্দর স্বাদ তাই আরো বেশি বেশি করে খেতে শুরু করে দিল। মধু খেয়ে একসময় তার নেশা হয়ে গেল। তখন গোবর পোকাটি নরম ফুলের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ল। ক্রমশ সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। সন্ধ্যার সময় প্রাকৃতিক নিয়মেই অনেক ফুলের পাপড়ি মুদে যায় বা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।গোবর পোকাটি যে ফুলটিতে ঘুমিয়েছিল সেই ফুলটিও মুদে গেল আর ভ্রমর তার নিজের বাসায় চলে গেল।
পরদিন সকালে এক ভক্ত সেই ফুলটি তুলে নিয়ে গেল ভগবানের পুজোর উদ্দেশ্যে। গোবর পোকা কিন্তু তখনও ফুলের মধ্যেই। এদিকে ভক্ত সেই ফুলটি চন্দন চর্চিত করে ভগবানের শ্রীচরণে অর্পন করলেন। কিছু সময় পর যখন ফুলটি যখন প্রস্ফুটিত হল তখন গোবর পোকা ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে দেখে আমি কোথায় এলাম, আমি তো ভগবানের চরণে। আমি একটা গোবর পোকা যার স্থান ছিল পচা দুর্গন্ধ গোবরের মধ্যে, সেই আমি কিনা আজ জগৎপতির চরণে। মনে মনে ভাবতে লাগল, আজ যদি ভ্রমরের সঙ্গ না ধরতাম তাহলে হয়তো কোনোদিন ভগবানের শ্রীচরণ স্পর্ষ তো দুরের কথা, আমি কোনোদিন তার দর্শনও পেতাম না।....... তাই মহাজনেরা বলছেন.....
" সাধুসঙ্গ সাধুসঙ্গ সর্বশাস্ত্রে কয়
লব মাত্র সাধু সঙ্গ সর্ব্ব সিদ্ধি হয় "......এখানে দেখুন সাধু সঙ্গের জন্যই কিন্তু আজ গোবর পোকার সিদ্ধি লাভ ঘটল। তাই অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করুন। অসৎ সঙ্গ শুধু নীচু পথেই নামায় না, অসৎ সঙ্গের ফলে আপনার আমার জীবনে একদিন যে ভয়ঙ্কর বীপদ নেমে আসবে তা একদম নিশ্চিত। কারণ এদের গতি সবসময় নীচের দিকে,এরা কোনোভাবেই উপরের দিকে উঠতে সাহয্য করেনা। নীচে নামানোর প্রাণপন চেষ্টাই চালিয়ে যায়।
সুন্দর ফুল তো অনেক ফোটে কিন্তু সবাই ভগবানের চরণে নিবেদিত হয় কি ? কেউ বেশ্যালয়ে স্থান পায়, কেউ আবার মৃতদেহের ওপর, কেউ আবার গাছেই শুকিয়ে মাটিতে ঝরে পরে।নিজেকে কোন পথে পরিচালিত করবেন সেই রুচিটা সম্পুর্ণ নিজের।
জয় রাধামাধব

২০.৬.১৮

অলৌকিক রহস্যে ভরা পুরীর শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির !!

পুরীর শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির নানা
অলৌকিক রহস্যে ভরা৷ এখানে যা যা তুলে ধরা হয়েছেঃ-

(১) মন্দিরের চূড়ার পতাকা
বায়ুর উল্টো দিকে ওড়ে৷

(২) মন্দিরের উপর আজ
পযন্ত কোনো পাখি বসতে
দেখা যায়নি৷

(৩) মন্দিরের ওপর দিয়ে কোনো
বিমান,পাখি উড়ে যেতে পারে না৷

(৪) মন্দিরের রান্নাঘরের ভিতর দিয়ে গঙ্গানদী প্রবাহমান,যা বাইরে থেকে দেখা যায় না৷

(৫) প্রতিদিন এই ধ্বজা পালটানো হয়। গত ১৮০০ বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। যদি একদিন পালটানো না হয় তবে তার পরে ১৮ বছর মন্দির বন্ধ রাখতে হবে।

(৬) মন্দিরের গোপুরমের মাথায় অবস্থিত সুদর্শন চক্রটি এমনভাবেই বসানো হয়েছে যে শহরের যেখানেই আপনি থাকুন না কেন, মনে হবে চক্রটি আপনার দিকে মুখ করে রয়েছে।

(৭) সাধারণত দিনের বেলা সমুদ্রবায়ু স্থলভাগের দিকে বয় এবং রাত্রিবেলা স্থলবায়ু সমুদ্রের দিকে বয় কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে পুরীতে এর ঠিক উলটোটা ঘটে।

(৮) এমনই আশ্চর্য ইঞ্জিনিয়ারিং এই মন্দিরের যে প্রধান চূড়ার ছায়া কখনও মন্দির প্রাঙ্গণে পড়ে না।

(৯) মন্দিরে প্রতিদিন একই পরিমাণ প্রসাদ রান্না হয় কিন্তু কখনও প্রসাদ বাড়তিও হয় না আবার কমও পড়ে না। অথচ মন্দিরের দর্শনার্থী সংখ্যা এক থাকে না।

(১০) পর পর ৭টি মাটির পাত্র একটি আর একটির উপরে বসিয়ে ভোগ রান্না হয় কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সবচেয়ে উপরের পাত্রটি আগে সিদ্ধ হয় এবং সবচেয়ে তলারটি সবার শেষে।

(১১) মন্দিরের সিংহদরজা দিয়ে ঢোকার সময়ে সমুদ্রের আওয়াজ কানে আসে কিন্তু দরজাটি পেরিয়েই যদি আবার ঘুরে আসা যায় একই পথ ধরে তবে কোনও আওয়াজই পাওয়া যায় না, যতক্ষণ না সিংহদরজার বাইরে চলে যাওয়া যায়।

(১২) জগন্নাথ মন্দিরের প্রাচীনতম অংশটি তৈরি হয় চোলরাজ অনন্তবর্মনের আমলে। তখন মন্দিরটি দেখতে অন্য রকম ছিল। মেঘনাদ পাচেরি, মুখশালা, নাটা মণ্ডপ ইত্যাদি অংশগুলি পরে তৈরি হয়েছে।

(১৩) প্রতি ১২ অথবা ১৯ বছর অন্তর নতুন মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয় যাকে বলা হয় ‘নবকলেবর’। পুরনো মূর্তিটিকে কিন্তু সমাধিস্থ করা হয়। শেষ নবকলেবর ঘটেছে ২০১৫ সালে, ১৯ বছর পরে।

তথ্য গুলি ভালো লাগলে লাইক ও কমেন্ট করুনঃ-
"জয় জগন্নাথ"

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

জগন্নাথের লীলা !!

জগন্নাথের লীলা !!

অনেক পুরান কথা, এক শেঠের কাছে এক ব্যক্তি কাজ করত।

শেঠজী ঐ ব্যক্তিকে খুব বিশ্বাস করত।
শেঠের যা জরুরী কাজ থাকত সব ঐ ব্যক্তি করত।
ঐ ব্যক্তি পরম ভক্ত ছিল।
সেই ব্যক্তি সদা ভগবানের চিন্তা, ভজন, কীর্তন, স্মরণ, সৎসঙ্গ করত।
একদিন সেই ব্যক্তি শেঠজীর কাছে, শ্রীজগন্নাথ ধাম যাত্রার জন্য ছুটি চাই।
শেঠজী ছুটি দিল আর সেই ব্যক্তিকে
বলল, "ভাই আমি তো সংসারী মানুষ, সবসময়ই ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকি তার কারণে কখনো তীর্থযাত্রার সুযোগ হয় না।
তুমি তো যাচ্ছো এই ১০০ টাকা আমার নামে প্রভু জগন্নাথের চরণে সেবায় সমর্পিত করে দিও।"
সেই ব্যক্তি টাকাটা নিয়ে জগন্নাথ দর্শনে যাত্রা শুরু করল। অনেকদিন পায়ে হেঁটে যাত্রা করে সে জগন্নাথ পুরী পৌঁছাল।
মন্দিরে যাওয়ার সময় সে রাস্তায় দেখল অনেক সাধুসন্ত,ভক্তজন, বৈষ্ণবজন, হরিনাম সংকীর্তনে খুব আনন্দ করছিল।
কীর্তনের আনন্দে তাদের চোখ
থেকেঅশ্রুধারা পড়ছিল।
জোরে জোরে তারা হরিবোল হরিবোল বলছিল। সংকীর্তনে খুব আনন্দ হচ্ছিল। চারিদিকের সকল ভক্তরা এসে ওখানে
দাঁড়িয়ে হরিনাম সংকীর্তনের আনন্দ নিচ্ছিল।সেই ব্যক্তি দেখছিল সংকীর্তনরত সব ভক্ত জনদের।
সে দেখল সংকীর্তন করতে করতে তাদের ঠোঁট শুকিয়ে গেছে, দেখে মনে হচ্ছে তারা খুব ক্ষুধার্ত। সে এই ক্ষুধার্ত ভক্তদের দেখে চিন্তা করল, "শেঠজী আমাকে যে টাকা দিল তার থেকে ভক্তদের ভোজনের ব্যবস্থা করি।"
সে ব্যক্তি ঐ ১০০ টাকা থেকে ভোজনের ব্যবস্থা করল। সবাইকে ৯৮ টাকা দিয়ে ভোজন করালেন। সকলে খুব তৃপ্ত হলেন।
তার কাছে শুধু দুই টাকা আছে, সে ভাবল "এই দুইটাই আমি জগন্নাথের চরণে শেঠজীর নামে সমর্পণ করব।
যখন আমি শেঠের কাছে পৌছাব।
তখন আমি বলব শেঠজীকে আমি টাকা সমর্পন করেছি। শেঠজী তো জিজ্ঞাসা করবে না যে ১০০টাকা আমি জগন্নাথের চরণের সমর্থন করেছি কিনা। শেঠজী বলবে টাকা সমর্পণ করলে। আমি হ্যাঁ বললে ওটা তো মিথ্যা বলা হবে না এবং কাজও হয়ে যাবে।"
ভক্ত সেই ব্যক্তি আকুল মনে জগন্নাথজীর দর্শন করল মন্দিরে প্রবেশ করল। শ্রীজগন্নাথদেবের এমন অপূর্ব রূপ নয়ন ভরে দর্শন করে নিজে হৃদয়ে তার রূপ মাধুরী বিরাজমান করল।
শেষে সে শেঠজীর দেয়া দুই টাকা জগন্নাথজীর চরণে দিয়ে বলল, এই দুইটাকা আমার শেঠজী দিয়েছে।
ঐ রাতে শেঠজী রাতে স্বপ্ন দেখল শ্রীজগন্নাথজীকে। জগন্নাথ জীবনে স্বপ্নে এসে বলল শেঠজীকে, "তোমার ৯৮
টাকা আমি পেয়েছি। " এই বলে শ্রী জগন্নাথজী অন্তর্ধান হয়ে গেলেন।
শেঠজী জেগে গেল আর ভাবতে লাগল, "আমার কাজের লোক তো খুব সৎ, ভক্ত ও তো খূব বিশ্বাসী। হঠাৎ কি এমন হল
কি এমন দরকার পরল আমার দেয়া টাকার থেকে দুই টাকা ভগবানকে কম দিল? সে দুই টাকা কিসে খরচ করল? কি এমন প্রয়োজন পরল?" এসব কথা শেঠজী বিচার করতে লাগল।
অনেক দিন যাওয়ার পর ভক্ত সেই ব্যক্তি ফিরে আসল আর শেঠজীর কাছে আসল। শেঠজী তখন তাকে জিজ্ঞাসা করল "আমার টাকা জগন্নাথজীকে সমর্পন করেছ তো?"
ভক্ত বলল, " হে শেঠজী টাকা আমি সমর্পণ করেছি।" শেঠজী বলল, "কিন্তু তুমি তো ৯৮ টাকা কেন দিলে, দুই
টাকা কি কাজে খরচ করলে? "
তখন ভক্ত চিন্তা করলছিল শেঠজী কিভাবে জানল, ভক্ত তখন সকল কথা খুলে বলল শেঠজীকে। বলল," সে ৯৮ টাকা দিয়ে ভক্ত সাধুসন্তদের সেবা করল। আর দুই টাকা শুধু প্রভু
জগন্নাথের চরণের সমর্পন করল।"
শেঠজী সকল কথা শুনে বড় খুশি হল এবং ভক্ত ব্যক্তির চরণে এসে পড়ল। আর বলল , " তুমি ধন্য তোমার জন্য আমি শ্রীজগন্নাথদেবের দর্শন ঘরে বসে পেলাম।"
ভগবানের আসলে তোমাদের ধনের কোন দরকার নেই। ভগবান ঐ ৯৮ টাকা স্বীকার করল কারণ ওটা যে ভক্তের সেবাতে লেগেছে। কারণ, ভক্তের হৃদয়ে ভগবানের বাস।
যে দুইটা চরণের দিল ঐ টাকাটা কোন মূল্য নেই প্রভুর কাছে। 'জগন্নাথ সবাইকে দর্শণ দিতে যাত্রা করবে কিছুদিন পরে, রথযাত্রা সবাই জগন্নাথকে ভক্তি সহকারে দর্শন করবেন ও কৃপা লাভ করবেন।
।।।জয় জগন্নাথ।।।

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জিজ্ঞাসা

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু রামানন্দ রায়কে জিজ্ঞাসা করলেন যে কোন ব্যক্তি এই পৃথিবীতে ভোগ করতে পারে এমন সবচেয়ে বড় কষ্ট কী?

রামানন্দ রায় বললেন, “একজন শুদ্ধ ভক্তের আরেকজন শুদ্ধ ভক্তের প্রতি বা আরেকজন শুদ্ধ ভক্তের বিরহের জন্য যে কষ্ট, সেটিই সবচেয়ে বড় কষ্ট। বিরহই সবথেকে বেশি, অত্যন্ত গভীর কষ্ট।

প্রকৃতপক্ষে ধরিত্রী মাতা হচ্ছেন একজন মহান ভক্ত এবং তিনি সর্বদা তাঁর দেহে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পাদপদ্মধূলি লাভের কারণে অত্যন্ত ভাগ্যবতী। অন্যরা কিছু সময় কৃষ্ণের বিরহে ছিলেন এবং কিছু সময় কৃষ্ণের সান্নিধ্যে ছিলেন। কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণের লীলার সম্পূর্ণ সময় জুড়েই ধরিত্রী মাতা তাঁর পাদপদ্মের স্পর্শ লাভ করেছেন। আপনারা উপলব্ধি করতে পারেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চলে যাওয়ার পর কেমন তীব্র বিরহই না তিনি অনুভব করছেন।

এটি বর্ণনা করা প্রায় অসম্ভব যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই ধরাধাম যখন ছেড়ে গিয়েছিলেন, তখন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভক্তদের কী অবস্থা হয়েছিল। ভগবান যখন পৃথিবী ত্যাগ করেন তখন কেউ যে তীব্র বিরহ অনুভব করেন, সেটি অনুধাবন করে হরিদাস ঠাকুর চৈতন্য মহাপ্রভুকে অনুরোধ করেছিলেন যে তিনি তাঁর আগে চলে যেতে চান।

তাঁর অনুরোধের কারণেই, তাঁর তিরোভাব, সমুদ্রে স্নানের পর সমাধি এবং এরপরে কীর্তন ও ভোজন, এই অপূর্ব লীলাগুলি উদযাপিত হয়েছিল। হরিদাস ঠাকুর বুঝতে পেরেছিলেন যে ভগবান চলে যাবার পর অবস্থান করা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়বে।

শ্রীল জয়পতাকা স্বামী মহারাজ,
২রা অক্টোবর, ১৯৮০।

উপবাস কি ??

উপবাস কি ? 
“উপবাস” শব্দের অর্থ- নিকটে বাস। “উপ” শব্দের অর্থ- নিকট, “বাস” শব্দের অর্থ অবস্থান করা । উপবাস শব্দের অর্থ নিকটে অবস্থান করা । অর্থাৎ, বাচিক ও মানসিক 
কায়মণবাক্যে সংযম পালন পূর্বক ইষ্টদেবতার নিকট অবস্থান বা সান্নিধ্য গ্রহণ করার নাম “উপবাস”। সাধারন ভাবে কিছু বিশেষ তিথি, একাদশী তিথি, বিশেষ পূজার দিন আহার সংযমকে ‘উপবাস’ বলা হয়। একাদশী, অমাবস্যা, পূর্ণিমা তিথিতে জোয়ার ভাটার কারনে দেহে জলীয় পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই সময় অন্নাদি শাকপাতা ভোজনে শরীর অলস হয়ে পড়ে । এই সময় আহার সংযম প্রয়োজন। এই জন্য বাত রোগী অমাবস্যায়, পূর্ণিমায় নিশিপালন করেন ।

তাছাড়া রোজ অন্নাদি খাদ্য গ্রহণের ফলে পাকস্থলীতে অনেক আহার্য জমে থাকে যা পূর্ণ রূপে পরিপাক হয় না। এরজন্য একদিন আহারে সংযম পালন করে ফলমূলাদি গ্রহণে পাকস্থলী পরিষ্কার হয়। নিত্য অন্ন সেবনে দেহ স্থূলকায় ভারী হলে একদিন ফলমূলাদি গ্রহণে সেই দোষ খণ্ডন হয়। ঐ এক কারণে শাস্ত্র প্রণেতা গণ উপবাসে জল, কাঁচা গোদুগ্ধ, ফলমূলাদি গ্রহণের বিধান দিয়েছেন । তাছাড়া রন্ধন সংক্রান্ত কর্মে সময় অপচয় না হওয়ায় উপবাসের দিন ভগবানের নাম কীর্তন, বীজ মন্ত্র জপ ইত্যাদি কাজে নিযুক্ত হয়ে ভগবানের নিকটবর্তী হওয়া যায় । এইজন্য একাদশী, অমাবস্যা, পূর্ণিমায়, বিশেষ তিথিতে ভগবানের নাম কীর্তনে রাত্রি জাগরণের বিধান আছে । এছাড়া উপবাসের দিন অন্নাদি গ্রহণ না করার জন্য মানব ক্ষুধা অন্নকষ্টের ক্লেশ বুঝতে পারে। এর ফলে সে সমাজে হিতকর কর্মে যেমন দান- বিতরণ কাজে যোগদান করে ।

উপবাসের মাধ্যমে শুধু ঈশ্বর করুণা ও স্বাস্থ্য রক্ষা হয় – এমন নয়। কামাদি রিপুগুলিকে আয়ত্তে আনতে, জিহ্বার লালসা দূর করতে উপবাসের বিধান আছে । উপবাস মানে না খেয়ে কঠোর কৃচ্ছতা পালন নয়- বরং আহারে সংযমের নাম ‘উপবাস’। তাই শাস্ত্রে উপবাসের দিন ফলমূল, গোদুগ্ধ, ডাবের জল ইত্যাদি প্রসাদ রূপে গ্রহণের বিধান আছে । আর ঘন ঘন উপবাসে শরীর খারাপ ও দুর্বল হয়। তাই শাস্ত্রে ঘন ঘন উপবাসে নিষেধ আছে ।


[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

হিন্দুরা এত ধর্মান্তরিত হয় কেন???

 হিন্দুরা এত ধর্মান্তরিত হয় কেন???---------

সনাতন ধর্মটাকে গ্রাস করে ফেলছে এক ভয়ানক সর্বনাশী প্রক্রিয়া । যার নাম ধর্মান্তর ।প্রথমে জেনে নিই ধর্মান্তরিত হওয়ার পিছনে কি কি কারন বা কেন ধর্মান্তরিত হয় ?
প্রথমত
কারন হল ১মঃ। পরিবার থেকে যথাযথ ধর্মীয় শিক্ষার অভাব, অন্যান্য ধর্মের ছেলে মেয়েদের বয়স ৬/৭ বছর হলেই তাদের ধর্মিয় শিক্ষা দেয়া হয় নিজ গৃহে বসে বা ধর্মিও প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে, কিন্তু হিন্দুদের বেলায় তা দেয়া হচ্ছেনা। কেননা একটা বাচ্চা যখন পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয় তখন কিন্তু তার মধ্যে ধর্মের কোন প্রভাব পড়ে না। তাকে ধীরে ধীরে পরিবার থেকে ধর্মীয় অনুশাসন অনুসরন করে তারপর বড় হতে হয় । আর যখনই পর্যাপ্তপরিমান ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহন করে তখন আর তাকে ধর্মান্তরিত হওয়ার কোন প্রশ্নই উঠে না ।
২য়ঃ
যখন একটা বাচ্চা বড় হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের জন্য পাঠশালা / স্কুল / কলেজ / ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হয় তখন অধ্যয়ন থাকাকালীন সময়ে তাকে তার বন্ধুদের কাছে ধর্ম বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মূখীন হতে হয় । যখন সে যথার্থ উত্তর দানে ব্যর্থ হয়ে নিজ ধর্মের প্রতি অনিহা জন্মে এবং নিজ ধর্মকে সঠিক বলে মেনে নিতে ভ্রম তৈরি হয় এবং সে তার সহপাঠিদের সামনে মাথা নত করতে বাধ্য হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি যে সন্তান ধর্মীয় শিক্ষায় পারদর্শী হয় সেই সন্তানটি তার পিতামাতা এবং সমাজ সবার জন্যই মঙ্গলকর হয়ে উঠে।কেননা সন্তানকে যথার্থ ধর্মিও শিক্ষা দিলে বাবা মাকে আর বৃদ্ধাশ্রমেও যেতে হয়না।
৩য়ঃ
বর্তমান সনাতন সংস্কৃতি নিয়ে কিছু কথাবার্তা বলা যাক।
বর্তমানে যতজন ধর্মান্তরিত হচ্ছে তার বেশিরভাগ অংশ কিন্তু মেয়ে । কারন হল আমাদের সমাজব্যবস্থা এতটাই উন্নত হয়েছে যার কারনে একজন বাবা_ মা তার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা অর্জনে সহায়তা না করে তাকে গানের স্কুলে ভর্তি করে, নাচের স্কুলে ভর্তি করে বা আর্ট স্কুলে ভর্তি করে । তারা চায় তাদের সন্তান একজন একজন সংগীত শিল্পী , নৃত্যশিল্পী হোক আরও কত কি ?
কি লাভ হয়,এতে ধর্মীয় শিক্ষার কাছে এগুলো তুচ্ছ । কিছুদিন পর ঐ সন্তানগুলোই নেচে নেচে ধর্মান্তর নামক সর্বনাশী পথ বেচে নেয় যখন ঐ বাবা বা মায়ের লজ্জা,তাচ্ছিল্য আর বোবাকান্না ছারা আর কিছু করার থাকে না ।
দেখা যাক শাস্ত্র কি বলছে এ নিয়ে :-
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অজুর্ন কে শ্রীমদ্ভগবত গীতাতে বলেছেন:-
শ্রেয়ান্ স্বধর্মো বিগুণঃ পরধর্মাত্ স্বনুষ্ঠিতাত্৷
স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ৷৷৩/৩৫
অর্থ: স্বধর্মের অনুষ্ঠান দোষযুক্ত হলেও উত্তমরুপে অনুষ্ঠিত পরধর্ম থেকে উৎকৃষ্ট। স্বধর্ম সাধনে যদি মৃত্যু হয় তাও মঙ্গলজনক কিংবা অন্যের ধর্মের অনুষ্ঠান করা বিপদজনক।।।
অধর্মাভিভবাত্কৃষ্ণ প্রদুষ্যন্তি কুলস্ত্রিয়ঃ৷
স্ত্রীষু দুষ্টাসু বার্ষ্ণেয় জায়তে বর্ণসঙ্করঃ৷৷১/৪১।
অর্থ: হে কৃষ্ণ, অধর্মের দ্বারা অভিভূত হলে কুলবধুগণ ব্যভিচারে প্রবৃত্ত হয় এবং কুলস্ত্রীগণ অসৎচরিত্রা হলে অবাঞ্চিত প্রজাতি উৎপন্ন হয়।
দোষৈরেতৈঃ কুলঘ্নানাং বর্ণসঙ্করকারকৈঃ৷
উত্সাদ্যন্তে জাতিধর্মাঃ কুলধর্মাশ্চ শাশ্বতাঃ৷৷১/৪৩।
অর্থ: যারা বংশের ঐতিহ্য নষ্ট করে এবং তার ফলে অবাঞ্চিত সন্তানাদি সৃষ্টি করে, তাদের কুকর্মজনিত দোষের ফলে সর্বপ্রকার জাতীয় উন্নয়ণ প্রকল্প এবং বংশের কল্যাণধর্ম উচ্ছনে যায়। ফলে সনাতন জাতিধর্ম ও কুলধর্ম বিনষ্ট হয়।
যে পরিবারের সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা দেন না
তাদের ছেলে মেয়েরা?
ফল সরুপ সে তার মা বাবা কে কাফের বলে
গালি দিয়ে ধর্মান্তরিত হয় অন্য ধর্মের ছেলের প্রেমের ফাঁদে পরে।
কিন্তু আমাদের শাস্ত্র এমনটা বলছেনা শাস্ত্র বলছে সম্পুর্ন ভিন্ন কথা :-
নাস্তি বুদ্ধিরযুক্তস্য ন চাযুক্তস্য ভাবনা৷
ন চাভাবয়তঃ শান্তিরশান্তস্য কুতঃ সুখম্৷৷২/৬৬
অর্থ: যে ব্যক্তি কৃষ্ণ ভাবনায় যুক্ত নন তার চিত্ত সংযত নয় এবং তার পরমার্থিক বুদ্ধি থাকতে পারে না। আর পরমার্থ চিন্তাশুন্য ব্যক্তির বিষয় তৃষ্ণার বিরতি নেই। এই রকম বিষয়-তৃষ্ণাক্লিষ্ট ব্যক্তির প্রকৃত সুখ কোথায়?
সর্বধর্মান্পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ৷
অহং ত্বা সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ৷৷১৮/৬৬
অর্থ: সমস্ত ধর্ম পরিত্যাগ করে কেবল আমার শরনাগত হও। আমি তোমাকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করব। সে বিষয়ে তুমি কোন দুশ্চিন্তা করো না।
এই শ্লোকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সকল ধর্মকে বাতিল করে দিয়ে একমাত্র তার চরনে আত্মসমর্পণ করার কথা বলছেন, কিন্তু আমরা কি করছি ধর্মন্তরিত হয়ে নিজে সহ ১৪ পুরুষ পর্যন্ত নরকে নিচ্ছি।
সুতরাং, পরিশেষে সনাতনী সমাজের অজ্ঞতা ও অসচেতনতাই এর মূল কারন তাই সনাতনী পিতা_মাতাকে বলবো আপনি আপনার নিজ নিজ সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করুন এবং ধর্মন্তরনের কুফল সম্পর্কে তাদের জানান, আর যেন একটি ফুল ও অকালে ঝরে না যায়,প্রতি দিনঘুম থেকে ওঠে ভগবানকে প্রণাম করতে শেখান,নিজে করুন এবং সন্তানদের কে অনুপ্রাণিত করুন। গীতা পাঠ করুন, গ্রন্থ পাঠ করুন,সপ্তাহে পরিবার নিয়ে নিকটস্থ মন্দিরে যান,সন্ধায় তুলসি আরতি করুন, গৌর আরতি করুন, ভগবানের মহিমা ভক্ত সঙ্গে আলোচনা করুন, সর্বোপরি বলব, সনাতনের জয় সদা সবর্দা হয়, বৈষ্ণব দাসানুদাস সুবাহু বলদেব দাস।।

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]