২৪.৮.১৮

গুরুদেব ও ভগবানের অবতারের মধ্যে পার্থক্য কি?

গুরুদেব ও ভগবানের অবতারের মধ্যে পার্থক্য কি?

প্রথমেই জানি,গুরু কি?
যিনি আমাকে অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে,পারমার্থিক জ্ঞান দ্বারা উদ্ধার করে,ভগবদ্ধামে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন।
তিনি অবশ্যই ভগবানের বহিরঙ্গা প্রকাশ। যেহেতু তিনি শ্রীকৃষ্ণের বিশেষ প্রতিনিধি-তাই তাঁর উপর এক বিশেষ ক্ষমতা ভগবান প্রদাণ করেন।
বেদ অনুসারে সদগুরুর লক্ষণ-

'তদ্বিজ্ঞানার্থং স গুরুমেভাভিগচ্ছেৎ
সমিৎপাণি শ্রোত্রিয়ং ব্রহ্মনিষ্ঠম।'

গুরুদেবকে অবশ্যই তাঁর গুরুদেবের কাছে যেতে হবে,এবং বৈদিক জ্ঞান অবশ্যই যথাযথভাবে লাভ করতে হবে।

তবে সদগুরুর প্রধাণ লক্ষণ হচ্ছে-তিনি সরাসরি ভগবানের ভক্ত। তিনি ভগবানের বাণী প্রচারের মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করেন।
ভগবান যিনি বিশ্ব-ব্রহ্মান্ডের মালিক,তুমি চাইলে তাঁর কাছে যেকোন জাগতিক বস্তু প্রাপ্ত হতে পার। কিন্তু মানবজীবনের যে আসল উদ্দেশ্য-মোক্ষলাভ (বারবার জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে বের হওয়া) প্রাপ্ত করাতে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণও অক্ষম। যা একমাত্র গুরুই পারেন।
এতটা ক্ষমতা (power) দিয়ে ভগবান গুরুকে পাঠান।

ইহাই এক অন্যতম কারনরূপে ভগবান অবতারও ধারণ করেন,এবং একইসাথে গুরুরূপেও আসেন।
স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণও দীক্ষাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন (আমাদের দীক্ষার প্রয়োজন বোঝাতে)।
অর্জুন যেই মূহুর্তে তাঁকে গুরুরূপে বরণ করলেন এবং বললেন-

'শিষ্যস্থেহহং শাধি মাং ত্বাং প্রপন্নম'

"আমি আপনার শিষ্য,আমি আপনার শরণাগত আত্মা। দয়া করে আমাকে নির্দেশ দিন।"
এরপর তিনি গীতার উপদেশ দিলেন। যে উপদেশই আমরাও পালন করে চলেছি। অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন আদি গুরু।

'তেনে ব্রহ্ম হৃদা য আদিকবয়ে'-

তিনি ব্রহ্মাকে প্রথম বৈদিক জ্ঞান প্রদাণ করেন। অর্থাৎ ব্রহ্মা তাঁর শিষ্য। আবার ব্রহ্মার শিষ্য নারদমুনি।
নারায়ণ- ব্রহ্মা- নারদ- ব্যাসদেব- শুকদেব....
এইভাবে গুরু পরম্পরার ধারায় সঠিক জ্ঞান লাভ করতে হয়।

যেমন গীতায় ভগবানের প্রধাণ আদেশ ছিল-

'সর্বধর্মান পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ'

"সব রকমের ধর্ম পরিত্যাগ করে আমার শরণাগত হও"।
কিন্তু এই "সব রকমের ধর্ম"- বলতে মানুষ তাঁর নির্দেশ বুঝতেই ভুল করল। কারন আমাদের বুদ্ধি বিকৃত,কলুষিত- যার জন্য আমরা উলটো অর্থ করে ফেলি।
একদম সঠিক অর্থটা বোঝাবে কে?
গুরুদেব।

তাই শ্রীকৃষ্ণ আবার মহাপ্রভু রূপে আবির্ভূত হয়ে শিক্ষা দিলেন- কিভাবে শ্রীকৃষ্ণের কাছে আত্মনিবেদন করতে হয়। এই হচ্ছে গুরু ও শ্রীকৃষ্ণের,মানুষকে উদ্ধারের লাগি বিশেষ কর্ম।
গুরুরা কখনই ভিন্ন ধরনের নন! তবে দেখতে হবে- গুরুদেব পরম্পরার ধারায় আছেন কি না? অর্থাৎ আদি গুরু শ্রীকৃষ্ণ--এই সারিতে তিনি আছেন কি না??
তাহলে তিনি অবশ্যই সদগুরু।।

collected

২২.৮.১৮

কলিযুগে কি হবে ??


কলিযুগের বয়স ৪ লক্ষ ৩২ হাজার
বছর....

৫০০০ বছর অতিক্রম
করেছে...৪২৭০০০ বছর রয়েছে।
আজ থেকে ৫০০ বছর আগে
চৈতন্য মহাপ্রভু
এসেছিলেন,তিনি
বলেছেন..এখন থেকে ১০
হাজার বছর পরে ঘোরকলি শুরু
হয়ে যাবে। অর্থাৎ তখন আর ধর্ম
থাকবে না। ৫০০বছর চলে
গেছে, অর্থাৎ এখন থেকে
৯৫০০বছর পরে পৃথিবীতে আর
কোন ধর্ম থাকবে না। এসম্পর্ক
শাস্ত্রে বলা হয়েছে,কলির
প্রভাবে কেউ আর হরি নাম
নেবে না। বেদব্রত সম্তই লুপ্ত
হবে..মিথ্যার প্রভাবে সবাই
কামাচারী হবে। বিবাহের
ব্যতিক্রম হবে। নারী পুরুষের
মাঝে কোন ভেদ থাকবে না।
সব আচার বিচার বিলুপ্ত হবে।
রমনীর আজ্ঞায় সকল পুরুষ চলবে।
নরহত্যাকরী আর প্রবঞ্চক চোরে
সাধুরে নিন্দা করবে। নারীরা
অষ্টম বর্ষে যুবতী হবে..বিশ
বছরে জরাজীর্ণ হবে। কলিতে
মাতা,পত্নী,পুত্
রবধু,ভগনী, সকলে ঘোর ব্যভিচার
করবে। ব্যভিচার করে যে ধন
উপার্জন হবে তা দিয়ে পুরুষ
জীবন ধারন করবে।
ভগনী,বিমাতা কোন বিচার না
করে..সকল লোক নিত্য ব্যভিচার
করবে। এক মাত্র নীজ মাতা
পরিহার করে..পরপত্নী সহ বিহার
করবে। কার পতি..কার
পত্নী..কোন ঠিক থাকবে না।
চারি দিকে শুধু পাপ বিরাজ
করবে। বৃক্ষ গুলো সব হবে এক
হাতের সমান..মানুষ হবে এক
আঙ্গুলের সমান। সেই সময় ভগবান
শ্রীকৃষ্ণ কল্কিমূর্ত্তি ধরে
আবির্ভূত হবেন। বিশাল ষোটকে
কল্কি আরোহন করে, ভুবন থেকে
তিন রাত্রে ম্লেচ্ছশূণ্য করিবে।
বাসের অযোগ্য হবে এই ধরাতল।
সূর্যের তেজের প্রভাবে ধরনীর
সকল জল শুষ্ক হয়ে যাবে। ভীষণ
সেই কলিকাল অতীত হলে, এই
ধরায় ধর্মে আবার পরিপূর্ণ হবে।
সত্যযুগ ধরণীতে আসিবে আবার।
পৃথিবীতে তখন ধর্মের প্রচার
হবে। কলির প্রভাবে সব সদাচার
লুপ্ত ছিল, সত্যযুগে পুনরায় তা
প্রতিষ্ঠিত হবে। সর্ব লোকের
মাঝে বেদ-স্মৃতি ''কৃষ্ণনাম''
আবার প্রচালিত হবে। যারা
ঘোরকলিতে জন্মগ্রহন
করবে..তারা কত দুর্ভাগা,তাদের
মুক্তির পথ সুদূর প্রসারী। যখন ধর্ম
থাকবে না..তখন মা-বাবা, ভাই-
বোন এদের মধ্যে কোন সম্পর্ক
থাকবে না। ফলে সবাই ব্যভিচার
করবে। সেই দিন সামনে আসছে।
যার নমুনা এখনি শুরু হয়ে গেছে।
শাস্ত্রে বলা হয়েছে.কলির
প্রভাবে কলিকালে কপট ধর্মের
সৃষ্টি হবে। সেখানে সৃষ্টকর্তা
কে সেটাই তারা জানবে না।

collected

দেবতা ও ভগবানের পার্থক্য?


দেবতা ও ভগবানের পার্থক্য?


সাধারণত হিন্দু সমাজে কিছু মানুষ
দেবতা ও
ভগবানের পার্থক্য জানে না। ইন্দ্র, চন্দ্র,
বরুণ, শিব, দুর্গা, কালী প্রভৃতি
দেবতাদের
সঙ্গে বিষ্ণু, নারায়ণ, রাম, নৃ্সিংহ, বামন
প্রভৃতি ভগবানের সম পর্যায়ভুক্ত বলে
মনে
করে থাকেন। এটি আমাদের জানা উচিত
যে
ভগবান ও দেবতাদের মধ্যে বিরাট
পার্থক্য
আছে। যেমন- দেবতারা হচ্ছেন ভগবানের
দ্বারা নিযুক্ত এ জড়জগতের বিভিন্ন
কার্য
সম্পাদনের নিয়ন্ত্রণ কর্তা। যে ভাবে
অগ্নি
দেবতা অগ্নি নিয়ন্ত্রণ করেন; বরুণদেব
জলের
নিয়ন্ত্রণ করেন; বায়ু দেবতা বায়ু
নিয়ন্ত্রণ
করেন ইত্যাদি। শাস্ত্র অনুসারে
দেবতারা
জীবতত্ত্ব। যে কোন জীব ভগবান থেকে
বিশেষ শক্তি প্রাপ্ত হয়ে দেবতাদের
আসন
গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু ভগবান
জীবতত্ত্ব
নন, তিনি হচ্ছেন বিষ্ণু তত্ত্ব। দেবতাদের
আধিপত্য এই জড়জগতে সীমাবদ্ধ, কিন্তু
ভগবানের আধিপত্য বা ঐশ্বরত্বের
প্রভাব জড়
ও চিন্ময় জগত সর্বত্র ব্যাপ্ত। দেবতারা
মানুষকে একমাত্র ভৌতিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য
প্রদান করতে পারেন, কিন্তু মুক্তি দিতে
পারেন না। ভগবান জীবকে মুক্তি প্রদান
করতে পারেন। দেবতারা মায়াধীন,
কিন্তু
ভগবান হচ্ছেন মায়াধীশ। সৃষ্টি ও
প্রলয়কালে
দেবতাদেরও প্রভাবিত হতে হয়, কিন্তু
ভগবান
নিত্য বর্তমান এবং তার ধামও নিত্য
বর্তমান।
এইভাবে ইন্দ্রলোক, চন্দ্রলোক প্রলয়ের
সময়ে
সব ধ্বংস প্রাপ্ত হবে। কিন্তু ভগবানের
ধাম-
বৈকুণ্ঠ, অযোধ্যা, গোলক বৃন্দাবন
ইত্যাদি
ধ্বংস প্রাপ্ত হবে না। ইন্দ্র, চন্দ্র প্রভৃতি
দেবতাগণ প্রকৃতির তিনটি গুণ দ্বারা
পরিচালিত হয়ে থাকেন। কিন্তু ভগবান
শ্রীকৃষ্ণ, রাম, নারায়ণ প্রভৃতি গুণাতীত।
তাদের কার্যকলাপ প্রকৃতির তিনটি গুণ
দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। সাধারণ মানুষ
এই
সমস্ত পার্থক্য বুঝতে পারে না। দেবতা ও
ভগবানকে এক বা সমপর্যায় বলে মনে
করে
থাকে। এটি অবশ্য জেনে রাখা উচিত
আমাদের বৈদিক সাহিত্যে তেত্রিশ
কোটি
দেবতাদের বর্ণনা করা হয়েছে।
শাস্ত্রানুসারে যারা বিভিন্ন জাগতিক
সুখ-
স্বাচ্ছন্দ্য বা বিভিন্ন ফল অতি সত্ত্বর
লাভ
করতে চান, তারা ভিন্ন ভিন্ন দেবতাদের
উপাসনা করতে পারেন। কিন্তু সেটি
বুদ্ধিমান মানুষের কাজ নয়, কেননা
জাগতিক
ফল অনিত্য। যারা বুদ্ধিমান ব্যক্তি তারা
ভগবানের শরণাগত হন। এভাবে সমস্ত
দেবতাদেরকে ভগবান বলে উপাসনা করা
ঠিক
নয়। তার সঙ্গে সঙ্গে এটুকুও জানতে হবে
যে
দেবতাদের ভগবানের সমান না হলেও
তাঁরা
ভগবানের অতি নিজজন, তাঁরা পূজ্য, তাই
দেবতাদের শ্রদ্ধা করা মানুষের কর্তব্য।
দেবতাদের পূজা করা যেতে পারে,
শ্রদ্ধা
করা যেতে পারে, কিন্তু ভগবানকে ভক্তি
করতে হয়। এভাবে মানুষের ভগবান ও
দেবতাদের মধ্যে পার্থক্য জেনে
শ্রদ্ধাযুক্ত
হয়ে ভগবানের ভক্ত হওয়া কর্তব্য। তা না
হলে
দুর্লভ মনুষ্য জীবনের আসল লক্ষ্যে
পৌছাতে
পারবে না। ভগবদ্গীতায় বর্ণনা করা
হয়েছে-
যান্তি দেবব্রতা দেবান্ পিতৃন্ যান্তি
পিতৃব্রতাঃ।
ভূতানি যান্তি ভূতেজ্যা যান্তি
মদ্যাজিনোহপি মাম্।।
(ভঃগী ৯/২৫)
দেবতাদের উপাসনা করলে দেবলোক
যাবে,
পিতৃপুরুষদের উপাসনা করলে পিতৃলোক
যাবে,
ভূত-প্রেতের পূজা করলে ভূতলোক যাবে।
কৃষ্ণের উপাসনা করলে কৃষ্ণের ধামে
যাবে।
দেবতাদের পূজা করে দেবলোক যাবে
এবং
কৃষ্ণের পূজা করে কৃষ্ণ লোক যাবে- এটার
মধ্যে পার্থক্য হল- দেবলোক যাওয়ার পর
পুণ্য
শেষ বা ক্ষয় হলে আবার মর্ত্যলোকে
ফিরে
আসতে হবে। ভগবদ্গীতায় বলা
হয়েছে-“আব্রহ্মভূবনাল্লোকাঃ
পুনরাবর্তিনোহর্জুন” কিন্তু ভগবদ্ধামে
গিয়ে
ভগবানকে প্রাপ্ত হলে আর এ জড়জগতে
ফিরে আসতে হবে না। “ মামুপেত্য তু
কৌন্তেয় পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে”।“যদ্ গত্বা ন
নিবর্তন্তে তদ্ধাম পরমং মম”। এভাবে
দেখানো হয়েছে জীবনের আবর্ত থেকে
অর্থাৎ বন্ধন থেকে মুক্তি পেতে হলে
জীবনকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত
হওয়া|

যদি রাম সৃষ্টিকর্তাই হন কেন তিনি হনুমানের সাহায্য চাইবেন?

যদি রাম সৃষ্টিকর্তাই হন কেন তিনি
হনুমানের সাহায্য চাইবেন? তাহলে
কি সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতার কমতি আছে?

উত্তরঃরাম মানবরুপে জন্মেছেন।তাই মানবীয় গুনাবলি মেনেছেন।
আর আল্লাহও কিন্তু জিবরাইলের সাহায্যেনবীর
কাছে আয়াত পাঠিয়েছেন।যদিও শয়তান মাঝে মাঝে ডিস্টার্ব করত।

হিন্দুরা কী সত্যিই বহু দেবদেবীর পূজা করে ???

প্রশ্নঃ হিন্দুরা কী সত্যিই বহু দেবদেবীর পূজা করে ??? 👈

উওরঃ প্রথমেই বলিয়া রাখি যে, ভারতবর্ষে বহু-ঈশ্বরবাদ নাই। প্রতি দেবালয়ের পার্শ্বে দাঁড়াইয়া যদি কেহ শ্রবণ করে, তাহা হইলে শুনিতে পাইবে পূজক দেববিগ্রহে ঈশ্বরের সমুদয় গুণ, এমন কি সর্বব্যাপিত্ব পর্যন্ত আরোপ
করিতেছে। ইহা বহু-ঈশ্বরবাদ নয়, বা ইহাকে কোন দেব-বিশেষের প্রাধান্যবাদ বলিলেও প্রকৃত ব্যাপার ব্যাখ্যাত হইবে না। গোলাপকে যে-কোন অন্য নামই দাও না কেন, তাহার সুগন্ধ সমানই থাকিবে। সংজ্ঞা বা নাম
দিলেই ব্যাখ্যা করা হয় না।… ভাবানুষঙ্গ-নিয়মানুসারে জড়মূর্তি দেখিলে মানসিক ভাববিশেষের উদ্দীপন হয়, বিপরীতক্রমে মনে ভাববিশেষের উদ্দীপন হইলে তদনুরূপ মূর্তিবিশেষও মনে উদিত হয়। এই জন্য হিন্দু
উপাসনার সময়ে বাহ্য প্রতীক ব্যবহার করে। সে বলিবে, তাহার উপাস্য দেবতায় মন স্থির করিতে প্রতীক সাহায্য করে। … মন্দির, প্রার্থনাগৃহ, দেববিগ্রহ বা ধর্মশাস্ত্র – সবই মানুষের ধর্মজীবনের প্রাথমিক অবলম্বন
ও সহায়ক মাত্র, তাহাকে ক্রমশ অগ্রসর হইতে হইবে।

শাস্ত্র বলিতেছেনঃ ‘বাহ্যপূজা – মূর্তিপূজা প্রথমাবস্থা; কিঞ্চিৎ উন্নত হইলে মানসিক প্রার্থনা পরবর্তী স্তর; কিন্তু ঈশ্বরসাক্ষাৎকারই উচ্চতম অবস্থা।’ (মহানির্বাণতন্ত্র, ৪।১২)

🔶🔷 #স্বামীবিবেকানন্দ_হিন্দুধর্ম_শিকাগো_বক্তৃতা 🔶🔷

অহিন্দুরা অনেকে বিশ্বাস করেন যে, আমরা হিন্দুরা বহু দেবদেবীর পূজা করি। এই ধারণা সর্বৈব ভুল। আমরা ব্রহ্ম বা এক ঈশ্বরকেই ভিন্ন ভিন্ন নামে ও ভিন্ন ভিন্ন রূপে আরাধনা করি। আসলে, ভারতের বিভিন্ন
অঞ্চলের মানুষ তাঁদের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য ঈশ্বরের নাম ও রূপভেদ সম্পর্কে স্বতন্ত্র্য কিছু ধারণা পোষণ করেন। এই কারণেই, আজকের হিন্দুসমাজে ঈশ্বরের এত রূপবৈচিত্র্য আমাদের চোখে
পড়ে। ইতিহাসের পথ ধরে হিন্দুসমাজে চারটি প্রধান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়েছে–শৈব, শাক্ত, বৈষ্ণব ও স্মার্ত। শৈবরা শিবকে ও বৈষ্ণবরা বিষ্ণুকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর মনে করেন। শাক্তেরা মনে করেন এই মহাবিশ্বে
মহাশক্তিই সর্বেসর্বা। স্মার্ত মতটি অনেক উদারপন্থী। তাঁরা মনে করেন, সকল দেবতাই সর্বোচ্চ ঈশ্বর ব্রহ্মের স্বরূপ। তাই তাঁরা দেবতা নির্বাচনের ভারটি ভক্তের উপর ছেড়ে দেন। অবশ্য এও মনে রাখতে হবে যে,
স্মার্ত মতটি হিন্দুধর্মে বহুল প্রচলিত হলেও, প্রধান মত নয়। সে যাই হোক, এই মতবৈচিত্র্যের জন্যই হিন্দুরা একে অপরের ধর্মমতের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল হয়ে থাকেন। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস যেমন বলেছেন, ‘যত
মত তত পথ।’ অর্থাৎ, সকল মতই সেই এক ঈশ্বরের কাছেই পৌঁছানোর এক একটি পথ।

হিন্দুধর্মের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হল এই যে, আমরা হিন্দুরা ঈশ্বরকে বহুদূরের স্বর্গে বসবাসকারী দেবতা মনে করি না। আমাদের ঈশ্বর বাস করেন আমাদের অন্তরে, আমাদের হৃদয়ে, আমাদের চেতনায়। শুধু তিনি
অপেক্ষা করেন, যতক্ষণ না আমরা আমাদের মধ্যে স্থিত ঈশ্বরকে চিনে নিতে পারি। ঈশ্বর যে আমাদের সঙ্গেই থাকেন, এই কথাটি আমাদের আশা ও শক্তি জোগায়। তাই হিন্দু জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল সেই এক ও
অদ্বিতীয় ব্রহ্মকে জানা।

আমরা হিন্দুরা একাধারে মনোথেইস্টিক (একেশ্বরবাদী) ও হেনোথেইস্টিক। আমরা পলিথেইস্টিক বা বহুঈশ্বরবাদী নই। কারণ আমাদের হিন্দুধর্মে সমক্ষমতাসম্পন্ন একাধিক দেবতার অস্তিত্ব স্বীকার করা হয় না।
হেনোথেইজম্-ই হিন্দু মতবাদটির সঠিক সংজ্ঞা গতে পারে। এই মতবাদের মূল কথাটি হল, অন্যান্য দেবতাদের অস্তিত্ব স্বীকার করেও এক ঈশ্বরের আরাধনা করা। আমরা হিন্দুরা বিশ্বাস করি, এক সর্বব্যাপী ব্রহ্ম এই
সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের শক্তির উৎস। মানুষ সহ সকল জীবের জীবনের মধ্যেই আমরা তাঁকে প্রত্যক্ষ করি। সকল জীবের মধ্যে ঈশ্বরের অবস্থান ও ঈশ্বর কর্তৃক সকল জীবের প্রাণধারণের এই মতবাদটিকে বলে
প্যানেনথেইজম। প্যানথেইজমের থেকে এটি আলাদা। কারণ, প্যানথেইজম বলে প্রাকৃতিক ব্রহ্মাণ্ডখানিই ঈশ্বর এবং তার বেশি কিছু নয়। অন্যান্য ধর্মের রক্ষণশীল ধর্মতাত্ত্বিকগণ মনে করেন, ঈশ্বর জগতের উর্ধ্বে,
জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং মানুষের অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধির অগম্য। হিন্দুধর্ম তা মনে করে না। প্যানেনথেইজম একটি সর্বময় ধারণা। এটি বলে, ঈশ্বর জগতের ভিতরে ও বাইরে দুই স্থানেই আছেন। তিনি একাধারে মানুষের
চেতনার আয়ত্তাধীন, আবার অগম্যও বটে। এই বৃহত্তর ধারণাটিই হিন্দুর ধারণা।

আমাদের হিন্দুদের বিভিন্ন শাখাসম্প্রদায়ে ব্রহ্মের নানান নাম প্রচলিত রয়েছে। এই নামবৈভিন্ন্যের কারণ সম্প্রদায়গুলির স্বতন্ত্র ধর্মীয় প্রথা ও রীতিনীতি। আর এই নামবৈভিন্ন্যই অহিন্দুদের যাবতীয় ভ্রান্ত ধারণার কারণ।
হিন্দুরা পরম সত্যকে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করে, কিন্তু তাই বলে পরম সত্য স্বয়ং বিভিন্ন হয়ে যান না। এই বিভিন্ন নাম থেকে বিভিন্ন রূপের উৎপত্তি; কিন্তু প্রত্যেক রূপই সেই এক এবং অদ্বিতীয় ব্রহ্মের
রূপান্তর-মাত্র। হিন্দুধর্মে ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানোর অনেক পথের সন্ধান দেওয়া হয়েছে। আমরা হিন্দুরা প্রতিটি পথকেই অভ্রান্ত মনে করি। তাই কোনো একটি নির্দিষ্ট পথকে সকলের উপর জোর করে চাপিয়ে
দেওয়ার পক্ষপাতী আমরা নই। পথ নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা হিন্দুরা পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করি।

তবে এই বিষয়ে শুধু অহিন্দু নয়, অনেক হিন্দুর মধ্যেও ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ঈশ্বর ও দেবতার মধ্যে যে সূক্ষ্ম পার্থক্য বিদ্যমান, তা অনুধাবন করতে পারলেই এই ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়। ঈশ্বর সম্পর্কে আমাদের হিন্দুদের
ধারণায় কোনো সংকীর্ণতা নেই। এখানে বলে রাখা ভাল, হিন্দুদের একাংশ নিরাকার ঈশ্বরেরও উপাসনা করেন। অন্যেরা দেবতাদের ব্যক্তিগত দেবতা (ইষ্টদেবতা বা কূলদেবতা) হিসেবে পূজা করেন। স্বামী বিবেকানন্দ
এই প্রসঙ্গে একটি প্রণিধানযোগ্য উক্তি করেছেন, “যে একাগ্র সাধক জানু পাতিয়া দেববিগ্রহের সম্মুখে পূজা করেন, লক্ষ্য কর – তিনি তোমাকে কি বলেন, ‘সূর্য তাঁহাকে প্রকাশ করিতে পারে না; চন্দ্র তারা এবং এই
বিদ্যুৎও তাঁহাকে প্রকাশ করিতে পারে না; এই অগ্নি তাঁহাকে কিরূপে প্রকাশ করিবে? ইহারা সকলেই তাঁহার আলোকে প্রকাশিত।’ (কঠ উপনিষদ ২।২।১৫; শ্বেতাশ্বেতর উপনিষদ ৬।১৪; মুণ্ডক উপনিষদ ২।২।১০)
তিনি কাহারও দেববিগ্রহকে গালি দেন না বা প্রতিমাপূজাকে পাপ বলেন না। তিনি ইহাকে জীবনের এক প্রয়োজনীয় অবস্থা বলিয়া স্বীকার করেন। শিশুর মধ্যেই পূর্ণ মানবের সম্ভাবনা নিহিত রহিয়াছে। বৃদ্ধের পক্ষে
শৈশব ও যৌবনকে পাপ বলা কি উচিত হইবে? হিন্দুধর্মে বিগ্রহপূজা যে সকলের অবশ্য কর্তব্য, তাহা নয়। কিন্তু কেহ যদি বিগ্রহের সাহায্যে সহজে নিজের দিব্য ভাব উপলব্ধি করতে পারে, তাহা হইলে কি উহাকে
পাপ বলা সঙ্গত?” (‘হিন্দুধর্ম’, শিকাগো বক্তৃতা) বিশ্বের প্রাচীনতম জীবিত এবং সর্বাপেক্ষা ঐশ্বর্যশালী ধর্মমতের এই বৈশিষ্ট্য অনন্য। স্বামী বিবেকানন্দের ভাষায়, ‘বহুত্বের মধ্যে একত্বই প্রকৃতির ব্যবস্থা,
হিন্দুগণ এই রহস্য ধরিতে পারিয়াছেন।’ (‘হিন্দুধর্ম’, শিকাগো বক্তৃতা)

সূত্রঃস্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা, প্রথম খণ্ড, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা।
হিন্দুইজম টুডে পত্রিকা।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য ...

জেনে নিই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে
চমকপ্রদ কিছু তথ্য ....
 __ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ
দ্বাপর যুগের শেষে আজ থেকে পাঁচ
হাজার দুইশত আটত্রিশ বছর আগে
পৃথিবীতে এসেছিলেন।। তিনি 125 বছর এই
ধরাধামে ছিলেন।।

__ কৃষ্ণ যদু বংশে আবির্ভূত হয়েছিলেন।। __
কৃষ্ণ অভ্যাসগত কারনে যখন দাঁড়িয়ে বাঁশি
বাজান তখন ডান পা সামনে রাখেন আর
বাম পা দিয়ে পেছনে ভারসাম্য রক্ষা
করেন।

__ কৃষ্ণের 16108 জন গোপিকা ছিলেন।। এর
মধ্যে 108 জন শ্রেষ্ঠ।। তাঁদের মধ্যে আট
জনহলেন অসাধারণ।। রাধারানী হলেন
সর্বশ্রেষ্ঠ এবং অন্তরঙ্গা শক্তি।।
শাস্ত্রে বলে,রাধা পূর্ণ শক্তি, কৃষ্ণ পূর্ণ
শক্তিমানদুই বস্তু ভেদে নাই, শাস্ত্রের
প্রমাণ।।
__ কৃষ্ণের চরণ কমলে উনিশটি শুভ চিহ্ন
রয়েছে।।

__ তাঁর গায়ের রং ঈষৎ নীল ঈষৎ কালো।।
তিনি পীত বস্ত্র পরিধান করতে পছন্দ
করেন।।

__ তিনি সর্বদা বৈজয়ন্তী মালা গলায়
ধারণ করে থাকেন যা হাঁটু পর্যন্ত বিস্তৃত
থাকে।।

__ তিনি কখনোই ক্ষুধার্ত বা তৃষ্ণার্ত হন
না।।

__ কোন প্রকার রোগ শোক তাঁকে স্পর্শ
করতে পারে না।।

_ তিনি গরীব দুঃখী এবং ব্রাহ্মনদের
ভোজন করিয়েছিলেন।। বয়স্কদের সেবা
করেছিলেন এবং বিভিন্ন রকম জন
কল্যাণকর কার্য সম্পাদন করেছিলেন।। _
তাঁর শঙ্খের নাম পাঞ্চজন্য এবং ধনুকের
নাম সারঙ্গ।।

__ তিনি একমাস বয়সে পুতনা এবং বার বছর
বয়সে কংসকে বধ করেছিলেন।। __ তিনি
দ্রৌপদীকে অপরিমেয় বস্ত্র দান করে
রক্ষা করেছিলেন।।

__ তিনি সব সময় তাঁর সিদ্ধান্তে অটল।।
মহাভারতের কোথাও তাঁকে সিদ্ধান্ত
পরিবর্তন করতে দেখা যায় নাই।

__ তাঁররাজত্বকালে তাঁকে কেউই পরমেশ্বর
ভগবান বলে চিনতে পারেননি।। তবে
চিনতে পেরেছিলেন শুধু একজন।। তিনি
ভীষ্মদেব।। আর কৃষ্ণ নিজে প্রকাশিত
হয়েছিলেন এবং বিশ্ব রুপ দেখিয়েছিলেন
শুধু অর্জুনকে।। গীতার জ্ঞান প্রকাশিত
হওয়ার পরই আজ এই কলিযুগের মানুষেরা
তাঁকে ভগবান বলে চিনতে পেরেছে।।

পিয়াজ রসুন মসুর ডাল প্রভৃতি কে আমিষ খাদ্য বলা হয় হচ্ছে কেন ???

প্রশ্নঃ পিয়াজ রসুন মসুর ডাল প্রভৃতি হচ্ছে গাছের
ফল। তবুও কেন সেগুলিকে আমিষ খাদ্য বলা হয়
হচ্ছে? 
এটা কি কুসংস্কার?
পিয়াজ রসুন এগুলো গাছের ফলও নয় আমিষ খাদ্য ও
নয়। সাত্বিক খাদ্যই মন ও শরীর গঠনের অনুকূল।
ডিম মাছ কচ্ছপ চিংড়ি কাঁকড়া হাঁস কাক ছাগল কুকুর শুকর গরু
বাদুড় মানুষ ইত্যাদি রক্ত মাংস যুক্ত তন্মধ্যে বস্তুকে
আহার করাই হচ্ছে সমাজের কুসংস্কার। পিয়াজ রসুন
মসুর ডাল প্রভৃতি খাদ্য অধিক উত্তেজক বস্তু
জেনে আত্বিক ব্যক্তিরা এগুলি গ্রহন করতে
নিষেধ করেছেন মাত্র। পুরানে উক্ত হয়েছে
সমুদ্র মন্থনকালে উত্থিত অমৃত ভগবান মুহিনী
অবতার দ্বারা পরিবেশ কালে দেব ছদ্মবেশী
রাহুনামক এক অসুর অমৃত গ্রহন করেছিলেন। এমন
সময় চন্দ্র সূর্যদেবের ইঙ্গিতে মুহিনী অবতার
সুদর্শন চক্র দিয়ে রাহুর গলা কেটে দেন। রাহু
অসুরের রক্ত মাটিতে পতিত হলে সেখান থেকে
পিয়াজ রসুনের জন্ম হল। তাই পিয়াজ রসুন গ্রহন
করলে শরীরে আসুরিক ভাব ও উত্তেজনা বৃদ্ধি
পায়। সেই হেতু ঐ উত্তেজক পদার্থ সাধু ব্যক্তিগণ
গ্রহন করেন না মুনুসংহিতায় পিয়াজ রসুন খেতে
নিষেধ রয়েছে।
মসুর ডালও এই রকমই ডাল যা অন্যান্য আমিষ খাদ্যের
মতোই মানুষের শরীরে আত্বিক ভাব নষ্ট করে।
মাছ মাংস ডিম ইত্যাদি উগ্র হিংস্র প্রাণীর খাদ্য মানুষকে
খেতে নিষেধ করা হয়েছে। ফল ফুল পাতা ইত্যাদি
উদ্ভিজ খাদ্য মানুষকে গ্রহন করতে ভগবান নির্দেশ
দিয়েছেন। গাছ থেকে ফল ফুল পাতা মাঠিতে ঝরে
পড়লে তবে সেই ফল ফুল পাতা খাদ্য হিসাবে গ্রহন
করা যাবে। নতুবা গ্রহন করা পাপ হবে। এরকম কথা
আমরা শুনিনি। লাউ, পুঁই, বেগুন, কুমড়ো, শশা, লংকা,
ঢেঁড়স, ইত্যাদি গাছ থেকে পাতা কিংবা ফল ঝরে
পড়লে সেই পাতা বা ফল খাওয়া যাবে নতুবা যাবে না
এ্ই রকম কথা কোথাও লেখা নেই। ভগবানকে পূজা
করতে হলে গাছ থেকে ফুল তুলতেই হয়।
অতএব ভগবানকে নিবেদন করে উদ্ভিজ খাদ্য
গ্রহন করলে কোন পাপ হয় না ।
হরে কৃষ্ণ......

collected

দশবিধ নাম অপরাধ গুলো কি কি ?

দশবিধ নাম অপরাধ গুলো কি কি ?
উত্তরঃ
۞ যে সমস্ত ভক্ত ভগবানের দিব্য নাম প্রচার করার জন্য নিজেদের সর্বতোভাবে উৎসর্গ করেছেন তাঁদের নিন্দা করা।
۞ “শিব , ব্রহ্মা আদি দেবতাদের নাম ভগবানের নামের সমান অথবা তা থেকে স্বতন্ত্র বলে মনে করা।
۞ গুরুদেবকে অবজ্ঞা করা।
۞ বৈদিক শাস্ত্র বা বৈদিক শাস্ত্রের অনুগামী শাস্ত্রের নিন্দা করা।
۞ ‘ হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র ‘ কীর্তন করার মাহাত্মকে কাল্পনিক বলে মনে করা।
۞ ভগবানের নামে অর্থবাদ আরোপ করা।
۞ নাম বলে পাপ আচরণ করা।
۞ ‘ হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র ‘ উচ্চারণ করাকে বৈদিক কর্মকাণ্ডে বর্ণিত পুণ্যকর্ম বলে মনে করা।
۞ শ্রদ্ধাহীন ব্যক্তিকে ভগবানের দিব্য নামের মহিমা সম্বন্ধে উপদেশ করা।
۞ ভগবানের নামের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস না থাকা এবং তাঁর অগাধ মহিমা শ্রবন করার পরও বিষয়াসক্তি বজায় রাখা।
কখনোই এই সব অপরাধ করবেন না।
তাই নিজে জানুন অন্য কে জানান।
কর্ম এবং ভাগ্য -
কৃপা করে অবশ্যই পড়বেন ভক্তবৃন্দগন ।
●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●
কর্মবাদী লোকেরা বলেন ভাগ্য কিছুই না , কর্মেই ভাগ্য পরিবর্তন করা যায় । আর ,ভাগ্যবাদী লোকেরা বলেন , কপালে ( ভাগ্যে ) যা লেখা আছে তাই হয় , এবার কর্ম যাই করেন না কেন ।
ভাগ্যবাদী আর কর্মবাদী লোকদের মধ্যে এই তর্ক বিতর্ক কখনো শেষ হতে পারেনা । তবেএটাও ঠিক যে , ভাগ্য আর কর্ম এই দুটির মধ্যে একটি সম্পর্ক অবশ্যই আছে । কর্ম থেকে ভাগ্য বানানো যায় বা ভাগ্য থেকে কর্ম , এই দুইটির মধ্যে কোন ভাল সম্পর্ক অবশ্যই আছে ।
ভাগ্য এবং কর্মের মধ্যে এই সম্পর্কটা বুঝানোর জন্য এই কাহিনীটা খুবই ভাল একটা উদাহরন হতে পারে ।
একবার মহর্ষি নারদ ভগবান বিষ্ণুর কাছে গিয়েছিলেন । তিনি অভিযোগের মনোভাব নিয়ে ভগবানকে বললেন , " পৃথিবীতে আপনার প্রভাব কমে গেছে প্রভু , ধর্মের পথে চলা লোকেরা কোন ভাল ফল পাচ্ছেনা , অথচ যারা পাপ করছে তারা ভাল ফল পাচ্ছে । "
ভগবান বলছেন , " না না এমনটা হতে পারেনা , যা কিছুই হচ্ছে সব নিয়তির মোতাবেক হচ্ছে । " নারদজী মানলেন না । ভগবান বললেন , "এমন কোনো ঘটনা বলো তো ?" নারদজী বললেন এখনই আমি এক জঙ্গল দিয়ে যাচ্ছিলাম , দেখলাম সেখানে একটি গাভী গর্তের মধ্যে আটকে গিয়েছিল , বাঁচানোর মতো কেউ ছিল না । তখনই এক চোর সেখান দিয়ে যাচ্ছিল , গাভীটিকে গর্তে আটকে পরে থাকা অবস্থায় দেখেও সে দাঁড়ায় নি , উল্টো গাভীর উপর পা রেখে সে অতিক্রম করে চলে গেল । কিছুদূর যাওয়ার পর সেই চোরটি সোনার অলংকারের একটি থলি পেয়ে গেল
কিছুক্ষণ পর সেখান দিয়ে একজন বৃদ্ধ সাধু যাচ্ছিল , সেই সাধু গাভীটিকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করতে থাকে , সারা শরীরের জোড় দিয়ে টেনে টেনে অবশেষে গাভীটিকে উপরে উঠাতে সক্ষম হলো । কিন্তু আমি ( নারদজী ) দেখলাম , সেই সাধু কিছুদূর যাওয়ার পর একটি গর্তের মধ্যে পরেগিয়ে প্রান ত্যাগ করলো । তাহলে ভগবান আপনিই বলুন - এটা কোন ধরনের ন্যায় হলো ?"
ভগবান হাসলেন এবং বললেন , " হে নারদ , এটা ঠিকই হয়েছে । যে চোরটি গাভীর উপর পা রেখে ভেগে গিয়েছিল , তার পাপের কারনে সে কেবল কিছু স্বর্ন মোহরাই পেল যা অস্থায়ী , যেখানে সাধুকে গর্তের মধ্যে এই কারনেই পরতে হয়েছিল যে তার ভাগ্যে মৃত্যই লেখা ছিল , কিন্তু গাভীটিকে বাঁচানোর কারনে তার পুন্য এত বেড়ে গিয়েছিল যে তার মৃত্যুটা একটি ছোট্ট ব্যথায় বদলে গিয়েছিল । তাই হে নারদ , মনুষ্যের কর্মেই তার ভাগ্য নির্ধারিত হয় ।"
তখন নারদজী সন্তুষ্ট হলেন ।
জয় রাধা গোবিন্দের জয়
রাধে রাধে ।।
কৃষ্ণ নামই মুক্তির একমাত্র পথ....
হিন্দু ধর্ম বিষয়ে সকল প্রকার আপডেট পেতে আমাদের এই ছোট পেজটিতে লাইক দিয়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন... লাইক করুন- 👍 কৃষ্ণের পবিত্র চিত্ররূপ
নমস্কার

collected

উপাসনার অর্থ কি ?

🌴🌹 উপাসনার অর্থ কি ? 🌴🌹

🌹 উত্তরঃ*- উপাসনা অর্থ ঈশ্বরকে স্মরণ করা...!!
একাগ্র চিত্তে ঈশ্বরকে ডাকা...!!
ঈশ্বরের আরাধনা করা...!!
উপাসনা ধর্ম পালনের অন্যতম প্রধান অঙ্গ পদ্ধতি...!!
ধ্যান, জপ, কীর্তন, পূজা, স্তব-স্তুতি, পদ্ধতিতে উপাসনা করা হয়...!!
একাগ্র চিত্তে ঈশ্বরের চিন্তা করার নাম ধ্যান...!!
নীরবে ঈশ্বরের নাম উচ্চারণ করাকে বলে জপ...!!
সরবে ঈশ্বরের নাম উচ্চারণ বা গুণগান করার নাম কীর্তন...!!
ঈশ্বরের প্রশংসা করে তাঁর নাম উচ্চারণ করাকে বলে স্তব-স্তুতি...!!
উপাসনা করলে দেহ-মন পবিত্র হয়...!!
উপাসনার সময় আমরা ঈশ্বরের প্রশংসা করি...!!
তাঁর আশীর্বাদ প্রার্থনা করি...!! সকলের কল্যাণ কামনা করি...!!

🌹উপাসনা আবার দুই প্রকার...!!
যেমনঃ*- সাকার উপাসনা ও নিরাকার উপাসনা...।।

¶সাকার উপাসনাঃ*-
 'সাকার' অর্থ যার আকার বা রূপ আছে...!! আকার বা রূপের মাধ্যমে ঈশ্বরের আরাধনা করাই সাকার উপাসনা...!!
বিভিন্ন দেব- দেবী, যেমন - ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব, কালী, দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী প্রভৃতি ঈশ্বরের সাকার রূপ...!!
আমরা ঈশ্বরকে দেব-দেবীর প্রতিমা রূপে ও অবতার রূপে উপাসনা করি...!!
এরূপ উপাসনায় ভক্ত ঈশ্বরকে সাকার রূপে কাছে পায়...!!
তাঁকে পূজা করে...!!
তাঁর নিকট প্রার্থনা করে...!!

¶নিরাকার উপাসনাঃ*-
 ঈশ্বরকে নিরাকার ভাবেও উপাসনা করা যায়...!! নিরাকার উপাসনায় ভক্ত নিজের অন্তরে ঈশ্বরকে অনুভব করেন...!!
ঈশ্বরের নাম জপ করেন অর্থাৎ নীরবে ঈশ্বরের নাম মনে মনে উচ্চারণ করেন...!!
ঈশ্বরের নাম কীর্তন করেন...!!
তাঁর স্তব- স্তুতি করে তাঁর নিকট প্রার্থনা জানান...!!
নিজের ও জগতের কল্যাণ কামনা করেন...!!
সুতরাং ধ্যান, জপ, কীর্তন, পূজা, স্তব-স্তুতি, পদ্ধতিতে আমরা ঈশ্বরের উপাসনা করবো...!!
উপাসনা একটি নিত্যকর্ম...!!
প্রতিদিন উপাসনা করতে হয়...!!
প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় ঈশ্বরের উপাসনা করা কর্তব্য...!!
উপাসনার জন্য আমাদের দেহ মনের পবিত্রতার প্রয়োজন...!!
পরিষ্কার পরিছন্ন হয়ে উপাসনা করতে হয়...!!
মন্দিরে বা ঘরে বসে উপাসনা করা যায়...।।

👏 লেখার মাধ্যমে যদি কোন ভূল হয় সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
🍃🌻 আশীর্বাদ - Ashirbad 🍃🌻
পেইজে লাইক দিয়ে পেইজের পোষ্ট গুলো পড়ে ধর্ম জ্ঞান অর্জন করুন ।আপনার বন্ধুদের আমাদের পেজে #ইনভাইট করুন যাতে করে তারাও আপনার মত ধর্মীয় ঞ্জান অর্জনের সুযোগ পায়।
☀ 🌷 হরে কৃষ্ণ ☀🌷

collected

এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে ভগবান মহাদেবের অবস্থান

এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে ভগবান মহাদেবের অবস্থান শ্রীমদ্ভাগবত,

ব্রহ্মসংহিতা , পদ্মপুরাণ প্রভৃতিতে খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।


শ্রীমদ্ভাগবত(১২।১৩।১৬) তে বলা হয়েছে "বৈষ্ণবনাম যথা শম্ভু"

অর্থাৎ ভগবান শিব বৈষ্ণবদের ভিতর শ্রেষ্ঠ।


শ্রীমদ্ভাগবত(৬.৩.২০) আমাদের জানায় যে ভগবান শিব হচ্ছে বৈষ্ণব

দর্শনের কর্তৃত্বকারী ১২ জন মহাজনের একজন।

শ্রীমদ্ভাগবত(৪.২৪.৭৬) অনুযায়ী ভগবান শিব বললেন "কেউ যদি তার

রুদ্র গীতা প্রার্থনা পড়ে তাহলে সে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কৃপা লাভ

করতে পারবে।"


ভগবান শিব তার পত্নী মাতা পার্বতী কে বলেন

যে তিনি সমুদ্রমন্থনে উত্থিত হলা হলা বিষ পান করেছিলেন ভগবান

বিষ্ণুকে সন্তুষ্ট করার জন্য।শ্রীমদ্ভাগবত(৮.৭.৪০)

পদ্ম পুরাণে ভগবান শিব মাতা সতীকে বলছেন..."শ্রী রাম রাম

রামেতি রামে রামে মনোরমে সহস্র নামাঃ তত তুলম রাম নামা ভরনানে"

অর্থাৎ ভগবান শিব স্পষ্টত বলছেন যে তিনি রাম নাম জপে তুষ্ট হন।

ভগবান শিব ভগবান বিষ্ণুর মোহিনী মূর্তি দেখে হতভম্ব

হয়ে গিয়েছিলেন। ভগবান শিব পরে প্রকাশ করেন যে তিনি ভগবান

শ্রীকৃষ্ণের অলীক লীলা পুরোপুরি অনুধাবন করতে অসমর্থ।

এটি বলা হয়েছে শ্রীমদ্ভাগবত(৮.১২.১০) শ্লোকে।

যখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বিশ্বরূপ দর্শন করিয়েছিলেন তখন

অর্জুন বলেছিলেন... " ভগবান শ্রীকৃষ্ণ , আমি আপনার মধ্যে সকল

দেবতা এবং প্রাণীজগতকে দেখতে পাচ্ছি।

আমি দেখতে পাচ্ছি ব্রহ্মা একটি পদ্ম ফুলের উপর

বসে আছেন,তেমনি আমি আপনার ভিতর ভগবান শিব এবং অনন্ত নাগ কেও

দেখতে পাচ্ছি। শ্রীমদ্ভগবত গীতা ( ১১।১৫)

বৃন্দাবনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস লীলার সময় ভগবান শিব

গোপীদের সাথে রাস নৃত্তে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছা প্রকাশ

করেছিলেন।

ব্রহ্মসংহিতা (১০ম শ্লোক) স্পষ্টত প্রতিষ্ঠা করে যে ভগবান মহেশ্বর

ভগবান বিষ্ণুর নিকট থেকে শক্তি প্রাপ্ত হয়েছেন। " ভগবান শম্ভু এই

জড় জগতে কার্যকারণ সম্বন্ধীয় নীতির প্রতিমূর্তি,যিনি পুরুষ

হিসেবে তার পত্নী প্রকৃতির(মায়া) সাথে যুক্ত

হয়ে সৃষ্টি করে চলেছেন। এই বিশ্বের ঈশ্বর ভগবান মহা বিষ্ণু ভগবান

মহেশ্বরের ভিতর প্রতীয়মান আছেন।"

ভগবান শিব অবতার এবং অবেশ কোনটি নন এবং তিনি এই দুটির মধ্যবর্তীও

নন। ভগবান শিব দেবতাদের দেবতা এবং স্বয়ং ব্রহ্মার থেকেও শ্রেষ্ঠ।

ভগবান মহাদেব এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের আধ্যাত্মিক গুরু। তার নিজের

আধ্যাত্মিক সম্প্রদায় রয়েছে এবং সেটি রুদ্র সম্প্রদায় মানে পরিচিত।

Har Har Mohadev


collected

রাধা কৃষ্ণের দিব্য সম্পর্ক কি ?

রাধা কৃষ্ণের দিব্য সম্পর্ক কি ? 
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

লেখাটি পড়ে দেখুন, আপনার সব ধারনা ক্লিয়ার হয়ে যাবে
রাধা কৃষ্ণের দিব্য সম্পর্ক সম্মন্ধে জানতে হলে আগে জানতে হবে রাধা রানী কে এবং তাঁর এই রাধা নামের কারন কি??

রাধারানী রাস মন্ডলে আবির্ভূত হয়েছিলেন বলে 'রা'
এবং পরমেশ্বর ভগবানকে আরাধনার জন্য পুষ্প সহ ধাবিত হয়েছিলেন বলে 'ধা'
__ এভাবেই তিনি হলেন রাধা।।

(পরমেশ্বর ভগবানের লীলা রহস্য)
একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, শ্রী ভগবান যখন দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালনের জন্য ধরাধামে অবতার হয়ে আসেন তখন তিনি কিন্তু একা আসেন না।। আসেন তাঁর পারিষদ সহ, তাঁর অন্তরঙ্গা শক্তি সহ।। যেমন ত্রেতা যুগে রাম এবং সীতা, কলিযুগে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু এবং মা বিষ্ণুপ্রিয়া।। একই ভাবে দ্বাপর যুগের শেষে আসলেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধা রানী।। ভগবান ধরাধামে এলে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ীই লীলা করেন।। দেবকীর গর্ভে আসলেন কৃষ্ণ এবং রাজা বৃষভানুর ঘরে আসলেন রাধারানী।। এবার একটু বেদের দিকে তাকাই।। বেদে লক্ষ্মী নারায়নের কথা বলা আছে।। স্বামী নারায়ন নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছেন এবং তাঁকে কেউই সৃষ্টি করেন নি।। আবার শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন, আমিই সমগ্র বেদের কৃষ্ণ।। অর্থাৎ আমাদের এই শ্রীকৃষ্ণই হলেন সমগ্র বেদের নারায়ন।। অর্থাৎ সবই এক।। তাই স্বামী নারায়নের সাথে সার্বক্ষণিক সেবারত অবস্থায় যে লক্ষ্মী মাতাকে দেখি প্রকৃত অর্থে তিনিই রাধারানী।।
রাধা রানী কি আয়ান ঘোষকে প্রকৃত অর্থে বিবাহ করেছিলেন ? রাধারানী ধ্যান কল্পে বারবার শুধু শ্রীকৃষ্ণকেই মালা পরিয়েছিলেন।।
সুতরাং, রাধারানী কৃষ্ণের হ্লাদিনী শক্তি যে শক্তির প্রভাবে তিনি সৃষ্টি করেন।। মহাভাব স্বরুপা শ্রী রাধা ঠাকুরানী সর্বগুণ খনি কৃষ্ণ কান্তা শিরোমনি।' আবার এক অর্থে রাধা কৃষ্ণের কোন ভেদ নেই।। তাঁরা অভেদ, তাঁরা একাত্মা।। আর তাইতো, 'রাধা পূর্ণ শক্তি, কৃষ্ণ পূর্ণ শক্তিমান দুই বস্তু ভেদে নাই, শাস্ত্রের প্রমান।' জয় রাধামাধব জয় কুঞ্জবিহারী।। খুব ছোট করে বললাম।।
ভুল বললে ক্ষমা করবেন।।
আর আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় থাকলাম ...... দাদা ও দিদিরা প্লীজ এড়িয়ে যাবেন না। আমরা চাই পৃথিবীর আনাচে কানাচে সনাতন ধর্মকে ছড়িয়ে দিতে। আর এজন্য আপনার
সহযগিতা একান্ত ভাবে কামনা করছি।

শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু কে ছিলেন ????

 শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু কে ছিলেন ?

➡ শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু (১৪৮৬ – ১৫৩৪) ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী এবং ষোড়শ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি ধর্ম ও সমাজ সংস্কারক। তিনি অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ তাকে শ্রীকৃষ্ণের পূর্ণাবতার মনে করেন। শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য ছিলেন ভাগবত পুরাণ ও ভগবদ্গীতা-য় উল্লিখিত দর্শনের ভিত্তিতে সৃষ্ট বৈষ্ণব ভক্তিযোগ মতবাদের একজন বিশিষ্ট প্রবক্তা।তিনি বিশেষত রাধা ও কৃষ্ণ রূপে ঈশ্বরের পূজা প্রচার করেন এবং হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্রটি জনপ্রিয় করে তোলেন। সংস্কৃত ভাষায় শিক্ষাষ্টক নামক প্রসিদ্ধ স্তোত্রটিও তারই রচনা। গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতানুসারে, ভাগবত পুরাণের শেষের দিকের শ্লোকগুলিতে রাধারানির ভাবকান্তি সংবলিত শ্রীকৃষ্ণের চৈতন্য রূপে অবতার গ্রহণের কথা বর্ণিত হয়েছে।

চৈতন্য মহাপ্রভুর পূর্বাশ্রমের নাম 'গৌরাঙ্গ', বা 'নিমাই'। তার গাত্রবর্ণ স্বর্ণালি আভাযুক্ত ছিল বলে তাকে 'গৌরাঙ্গ' নামে অভিহিত করা হত;অন্যদিকে, নিম বৃক্ষের নিচে জন্ম বলে তার নামকরণ হয়েছিল 'নিমাই'। ষোড়শ শতাব্দীতে চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী সাহিত্য বাংলা সন্তজীবনী ধারায় এক নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়েছিল। সেযুগে একাধিক কবি চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী অবলম্বনে কাব্য রচনা করে গিয়েছেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর #চৈতন্য_চরিতামৃত, বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের #চৈতন্য_ভাগবত, এবং লোচন দাস ঠাকুরের #চৈতন্যমঙ্গল।

👏🌻 শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর আর্বিভাবঃ 👏🌻

চৈতন্য চরিতামৃত গ্রন্থের বর্ণনা অনুযায়ী, ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি দোলপূর্ণিমার রাত্রে চন্দ্রগ্রহণের সময় নদিয়ার নবদ্বীপে চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম।তাঁর পিতামাতা ছিলেন অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার অন্তর্গত নবদ্বীপের অধিবাসী জগন্নাথ মিশ্র ও শচী দেবী। চৈতন্যদেবের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ওড়িশার জাজপুরের আদি বাসিন্দা। তাঁর পিতামহ মধুকর মিশ্র ওড়িশা থেকে বাংলায় এসে বসতি স্থাপন করেন।

চৈতন্যদেবের পিতৃদত্ত নাম ছিল বিশ্বম্ভর মিশ্র। প্রথম যৌবনে তিনি ছিলেন স্বনামধন্য পণ্ডিত। তর্কশাস্ত্রে নবদ্বীপের নিমাই পণ্ডিতের খ্যাতি ছিল অবিসংবাদিত। জপ ও কৃষ্ণের নাম কীর্তনের প্রতি তাঁর আকর্ষণ যে ছেলেবেলা থেকেই বজায় ছিল, তা জানা যায় তাঁর জীবনের নানা কাহিনি থেকে। কিন্তু তাঁর প্রধান আগ্রহের বিষয় ছিল সংস্কৃত গ্রন্থাদি পাঠ ও জ্ঞানার্জন। পিতার মৃত্যুর পর গয়ায় পিণ্ডদান করতে গিয়ে নিমাই তাঁর গুরু ঈশ্বর পুরীর সাক্ষাৎ পান। ঈশ্বর পুরীর নিকট তিনি গোপাল মন্ত্রে দীক্ষিত হন। এই ঘটনা নিমাইয়ের পরবর্তী জীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। বাংলায় প্রত্যাবর্তন করার পর পণ্ডিত থেকে ভক্ত রূপে তাঁর অপ্রত্যাশিত মন পরিবর্তন দেখে অদ্বৈত আচার্যের নেতৃত্বাধীন স্থানীয় বৈষ্ণব সমাজ আশ্চর্য হয়ে যান। অনতিবিলম্বে নিমাই নদিয়ার বৈষ্ণব সমাজের এক অগ্রণী নেতায় পরিণত হন।

কেশব ভারতীর নিকট সন্ন্যাসব্রতে দীক্ষিত হওয়ার পর নিমাই শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য নাম গ্রহণ করেন। সন্ন্যাস গ্রহণের পর তিনি জন্মভূমি বাংলা ত্যাগ করে কয়েক বছর ভারতের বিভিন্ন তীর্থস্থান পর্যটন করেন। এই সময় তিনি অবিরত কৃষ্ণনাম জপ করতেন। জীবনের শেষ চব্বিশ বছর তিনি অতিবাহিত করেন জগন্নাথধাম পুরীতে। ওড়িশার সূর্যবংশীয় হিন্দু সম্রাট গজপতি মহারাজা প্রতাপরুদ্র দেব চৈতন্য মহাপ্রভুকে কৃষ্ণের সাক্ষাৎ অবতার মনে করতেন। মহারাজা প্রতাপরুদ্র চৈতন্যদেব ও তাঁর সংকীর্তন দলের পৃষ্ঠপোষকে পরিণত হয়েছিলেন। ভক্তদের মতে, জীবনের শেষপর্বে চৈতন্যদেব ভক্তিরসে আপ্লুত হয়ে হরিনাম সংকীর্তন করতেন এবং অধিকাংশ সময়েই ভাবসমাধিস্থ থাকতেন।

👏🌹 অবতারত্ব 👏🌹

ভগবানের সঙ্গে প্রেমময়ী সম্পর্ক সমন্ধে শিক্ষা দান করার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সেই দ্বাপরের অব্যবহিত কলিযুগের প্রথম সন্ধ্যায় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু রূপে নদীয়াতে প্রকাশিত হন । শুদ্ধভক্তিতে ভগবান আকৃষ্ট হন । শুদ্ধভক্ত ভগবানের প্রতি আকৃষ্ট । কেউ যদি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অপ্রাকৃত প্রকৃতির প্রতি আকৃষ্ট না হয়, তা হলে সে অবশ্যই জড়সুখভোগের প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং পাপ-পুণ্যের কর্মফলের প্রতি আবদ্ধ হয়ে একের পর এক জড় দেহ ধারণ করে জাগতিক বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে । কৃষ্ণচেতনাই জীবনের পরম পুর্ণতা । সেজন্য বদ্ধ জীবদের মধ্যে শুদ্ধ কৃষ্ণভক্তি চেতনা প্রদানের জন্য ভক্তিভাব অবলম্বন করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কৃষ্ণচৈতন্য রূপে অবতীর্ণ হন ।

মহাভারতের দানধর্মে, বিষ্ণুসহস্রনাম স্তোত্রে পরমেশ্বর ভগবানের রূপগুনের বর্ণনা করা হয়েছে, এভাবে —-

সুবর্ণবর্ণো হেমাঙ্গো বরাঙ্গশ্চন্দনাঙ্গদী ।
সন্ন্যাসকৃচ্ছমঃ শান্তো নিষ্ঠাশান্তিপরায়ণঃ ।।

সুবর্ণবর্ণ- সোনার মতো উজ্জল অঙ্গকান্তি, হেমাঙ্গ- শুধু সোনার মতো নয়, তপ্ত বা গলিত সোনার মতো অঙ্গ, বরাঙ্গ- অপূর্ব সর্বাঙ্গসুন্দর রূপ, চন্দনাঙ্গদী—চন্দনে চর্চিত অঙ্গ , সন্ন্যসকৃৎ– সন্ন্যাস আশ্রম গ্রহণকারী, শম— শমগুণ সম্পন্ন, শান্ত—ধীর, কৃষ্ণভক্তি ব্যতীত অন্য বিষয়ে উদাসীন, নিষ্ঠা— ভক্তির পরম আশ্রয় । এই সমস্ত বর্ণণা শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভুকেই নির্দেশ করে ।

শ্রীমদ্ভাগবতে একাদশ স্কন্ধে পঞ্চম অধ্যায়ের একত্রিশ শ্লোকে কলিযুগের আরাধ্য ভগবান সমন্ধে বর্ণণা রয়েছে —

“কলিযুগে যারা সুবুদ্ধি সম্পন্ন ব্যাক্তি, তাঁরা অবশ্যই নাম সংকীর্তন যজ্ঞ দ্বারা, সেই কৃষ্ণ যিনি অ-কৃষ্ণ বা গৌররূপে আবির্ভুত হয়েছেন, তাঁর আরাধনা করবেন । সেই ভগবান সর্বদা তাঁর পার্ষদ, সেবক, সংকীর্তন অস্ত্র ও ঘনিষ্ঠ সহচর পরিবৃত থাকেন ।”
উপপুরাণে শ্রীব্যাসদেবের প্রতি শ্রীহরির উক্তি এরকম—“হে ব্রাহ্মন । কখনও কখনও অবশ্যই আমি কলিযুগের অধঃপতিত পাপী মানুষদের হরিভক্তি প্রদান করবার জন্য সন্ন্যাস-আশ্রম অবলম্বন করি ।”

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু হচ্ছেন-প্রদত্ত দিব্যনাম কীর্তনের পন্থা কেবল সহজসাধ্যই নয়, পারমার্থিক পুর্ণতা লাভের, জীবনের চরম সার্থকতা লাভের জন্য যত আধ্যাত্মিক পন্থা আছে, প্রেমপুর্ণ এই পন্থা তাঁর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বোত্তম । ভক্তিযোগের সর্বোচ্চ পন্থা কেবল ভগবানই প্রদান করতে পারেন — অন্য কেউ নয়, আর এজন্য ভগবান স্বয়ং ভক্তরূপে অবতীর্ণ হন । তিনিই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ।

জয় শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভু :)
<3 হরে কৃষ্ণ <3

collected

হিন্দুরা কেন গো মাংস ভক্ষন করে না?

হিন্দুরা কেন গো মাংস ভক্ষন করে না? গো মাংস ভক্ষন এ কি করতে হয়? গো ঘাতক বা হত্যা কারী শাস্তি কি?
গো চামড়ার জুতা পরা উচিত কি?

হিন্দু শ্রাস্ত্র বেদ নির্ভর। বেদ হলো ইশ্বর বাক্য। যা অলঙ্ঘনীয়। বেদ ঈশ্বর প্রদত্ত আদেশ নির্দেশনা কি করে জীবন আচরণ করবো তা মুলত স্মৃতি দ্বারা বুঝা য়ায়।।
প্রথমে আসি বেদ কি বলে?

প্র নু বোচং চিকিতুষে জনয়া,মা গামনাগা মদিতিং বধিষ্ট।।(ঋগবেদ ৮/১০১ / ১৫।)

- -ঈশ্বর বলছেন, আমি জ্ঞানবান কে বলছি যে তোমারা নিরপরাধ গো জাতিকে হত্যা করো না।।
এখন তথাকথিত বুদ্ধি জীবিরা বলবে এখানে হত্যা করতে নিষেদ করছে। খেতে তো নয়! আরে ভাই যাকে কাটা যাবে না তাকে খাবার তো প্রশ্ন আসে না। বেদের এই বাক্যর পূর্ন ব্যাখ্যা আছে স্মৃতি তে। যা আমাদের আদি পিতা মনু ও বাকী ১৮ জন বেদবিদ মহর্ষি গণ দ্বারা ব্যাখ্যা করা।।
আসুন দেখি কি বলে স্মৃতি-
ব্রক্ষহত্যা সুরাপানং স্তেয়ং গুর্ববঙ্গনাগমঃ।
মহান্তি পাতকান্যাহুঃ সংসর্গশ্চাপি তৈঃ সহ।।
মনু। ব্রাম্মহত্যা (মানুষ ও গো হত্যা),মদ পান,চৌর্য, কন্যা,মাতৃ স্থানীয় নারী সংঙ্গম এই চারটি মহাপাতক। যারা এই কর্ম করে তাদের সাথে বাস করা শয়ন উপবেশন করলে সেও মহা পাপী।। তাই বলা যায় গো হত্যা নিষেধ।।

এবার আসি গোমাংসভোজী হলে কি করতে হয়?

গোমাংস ভক্ষনে প্রাজাপত্যং চরেদিতি।।

সমন্ত স্মৃতি।। অনিচ্ছা পূর্বক গো মাংস একবার ভক্ষনে প্রজাপত্য ব্রত করিবে।
গো অশ্ব বারহ কুন্জারোষ্টী চ সর্বং পন্চনখ তথা।।
ক্রব্যাদং কুক্কুটং গ্রাম্য কুর্যাৎ সংবৎসর ব্রতমিতি।।
শঙ্খ সংহিতা।। গরু, অশ্ব, শুকর, হাতি গ্রাম্য কুক্কুটাদি মাংস ভোজন করলে সম্বৎসর ব্রত করিবে।। সুতরাং এখানে স্পষ্ট বুঝা যায় কোন কোন মাংস আমাদের খাওয়া যাবে না।।
যেহেতু বেদ ও স্মৃতি দুই গো হত্যা ও খাওয়া নিষেদ তাই আমরা হিন্দুরা গো মাংস খাই না।।

কেউ যদি গো ঘাতক হয় তার শাস্তি কি?

যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পুরুষম।।
তং ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসো অবীরহা।।(অর্থববেদ ১/ ১৬/ ৪)

আর তুমি যদি আমাদের গরু অশ্ব ও প্রজাদিগকে হিংসা করো বা হত্যা করো তবে তোমাকে সীসা দ্বারা বিদ্ধ করিব। আমাদের সমাজের মধ্যে যেন বীরদের বিনাশকারী কেহই না থাকে।। এখানে বলা হচ্ছে যদি কেউ গো ও মানব হত্যা করে ইচ্ছা করে তাকে সীসা বিদ্ধ করতে।।

এবার আসি আমরা গো মাংস খাইনা তবে কেন গো চামড়ার জুতা পরি?

আসলে বেদ ও বৈদিক সমাজ বা সমগ্র আর্যার্বত বা সিন্ধু সভ্যতা গো চামড়ার জুতা পরা হতো না।। ঐ সময় হতে এখন পর্যন্ত হিন্দু সমাজের লোকজন খরম বা চটি পরতো।। কাঠের তৈরী জুতা কে খরম ও ভেড়ার বা মোষের চামড়ার তৈরী জুতা কে চটি বলে।। কিন্তু দূর্ভাগ্য বশত এখন আধুনিকতা নামে প্রাচ্য সভ্যতার ক্রমবিকাশে এখন গো চামড়ার জুতা অনেক হিন্দু পরে।।। কারন এখন এটা না পরে যবন সভত্যার সাথে সখ্যতা থাকেনা।। তাই অনেকে তা পরে। তবে আজ আর্যার্তের ধর্ম গুরু গণ বা সন্নাসী গণ খরম ব্যাবহার করে।চামড়ার জুতা নয়।

৫.৮.১৮

হরিনাম জপ সম্পর্কে এ.সি ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের ১০টি প্রধান উক্তি

হরিনাম জপ সম্পর্কে এ.সি ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের ১০টি প্রধান উক্তি :👏👏👏

১) যিনি হরিনাম জপের সময় দিব্য আনন্দ অনুভব করেন তিনি খুব শীঘ্রই সকল জড় কলুষ থেকে পরিশুদ্ধ হবেন।

২) কেবলমাত্র অামাদের প্রাত্যাহিক জপ যথাযথভাবে সম্পাদনের মাধ্যমে আমরা সকল পাপকর্মফল হতে মুক্ত হতে পারি।

৩) শুদ্ধভাবে নিয়মিত জপ ব্যাতিরেকে আমরা কখনই পূর্ণরূপে কৃষ্ণভাবনাময় হতে পারবোনা। জপই হচ্ছে পূর্ণরূপে কৃষ্ণভাবনাময় হওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী পন্থা।

৪) আমাদের শক্তি হচ্ছে চারটি নিয়ম পালন আর ষোল মালা জপ।

৫) প্রত্যেকেই নবীন দশা থেকেই ভক্তিজীবন শুরু করে, কিন্তু কেউ যদি যথাযথভাবে নির্দেশিত সংখ্যক হরিনাম সম্পন্ন করে, তবে সে ধীরে ধীরে উত্তম অধিকারী স্তরে উন্নীত হবে। - ভক্তিরসামৃতসিন্ধু

৬) শ্রীগুরুদেবের দেওয়া সকল মূলনীতিগুলোর মধ্যে ১৬ মালা জপই হচ্ছে সর্বোপরি।

৭) সর্বনিম্ম ১৬ মালা আমাদের জপ করতে হবে। কিন্তু নিরন্তর জপই আমাদের মূল লক্ষ্য।

৮) যখন জপ প্রেম এবং আন্তরিকতার সাথে করা হয়না, তখন তা হতে লক্ষ্যনীয় কোন জাগতিক বা পারমার্থিক সুফল লাভ হয়না। কিন্তু সেই একই জপ যদি প্রেম ও আন্তরিকতার সাথে সম্পাদন করা হয়, তবে তা আমাদের এক বিশুদ্ধ মানসিকতার স্তরে উন্নীত করে।

৯) জপ যে কেবল নীরবেই করতে হবে সেই সম্পর্কে কোন বাধ্যবাধকতা নেই, এটা বিভিন্নভাবে করা যেতে পারে। উচ্চস্বরে হোক বা নীরবে, সবটাই ঠিক। এক্ষেত্রে কোন সীমাবদ্ধতা নেই। তবে এটা অবশ্যই আন্তরিকভাবে করা এবং খুব গভীরভাবে সেই দিব্য শব্দতরঙ্গ শ্রবণ করা উচিত।

১০) আপনার জপমালাটাই হচ্ছে আপনার ভগবদ্ধামে ফিরে যাওয়ার টিকিট।

🙏🙏জয় শ্রীল প্রভুপাদ!🙏🙏

৩০.৭.১৮

একটা তুলসী পাতার ওজন কতখানি ??



একটা তুলসী পাতার ওজন কতখানি ??

একদিন নারদ মুনি পরীক্ষা করার জন্য কৌশলে সত্যভামা দেবীর কাছ থেকে পুজার দান স্বরুপ শ্রী- কৃষ্ণকে চেয়ে নিলেন।সত্যভামাদেবী এরপর কোনো উপায় না পেয়ে পতি হারানোর কষ্টে কান্না করতে লাগলেন।

তার পতিব্রতে প্রসন্ন হয়ে নারদ মুনি কৃষ্ণকে ফিরিয়ে দিতে শেষমেশ রাজি হলেন।কিন্তু শর্ত ছিলো ,, কৃষ্ণের সমপরিমাণ ওজনের ঐশ্বর্য তাকে দান করতে হবে। কোনো উপায় না পেয়ে সত্যভামাদেবী ধীরেধীরে তার সমস্ত অলংকার আনতে শুরু করলেন।এক পাল্লায় কৃষ্ণকে বসিয়ে অপর পাল্লায় স্বর্ণালংকার রাখতে শুরু করলেন।কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে কোনো ভাবেই অপর পাল্লা কৃষ্ণের সমান করা যাচ্ছিল না।শেষমেশ বাধ্য হয়ে সত্যভামা তার দেহের সমস্ত অলংকার পর্যন্ত খুলে দিতে লাগলেন।

হায় !! হায় !! আর বুঝি প্রিয় কৃষ্ণকে ফিরে পাওয়া হল না আমার !! এই ভেবে পতি বিরহে হু হু করে কান্না করতে লাগলেন সত্যভামা।

সত্যভামা ভুলে গিয়েছিলেন যে ,, হাজার হাজার বছর তপস্যা করেও যাকে লাভ করা যায় না ,, তাকে এই নশ্বর ঐশ্বর্য দ্বারা কিভাবে লাভ করা সম্ভব।

যাই হউক ,,শেষমেশ ভগবানের করুণায় রুক্মিণীদেবী শ্রী -কৃষ্ণকে জয় করার মহাকৌশল শিখিয়ে দিলেন সত্যভামা দেবীকে।রুক্মিণীদেবীর কথামত শুদ্ধ প্রেম-ভক্তি সহকারে যেইমাত্র একটি তুলসীপত্র রাখলেন সেই পাল্লার ওপর আর সাথে সাথে শ্রী- কৃষ্ণের পাল্লা উপরে উঠে গেলো এবং অপর পাল্লা নিচে নেমে গেলো।শেষ পর্যন্ত ভক্তের ভালবাসার কাছে ভগবান এভাবেই নিজেকে ধরা দিলেন।এবং নারদ মুনি প্রসন্ন হয়ে ফিরে গেলেন।

"জয় শ্রীকৃষ্ণ"

collected

২৫.৬.১৮

জগন্নাথদেবের রথযাত্রা ও উল্টো রথযাত্রা এর তাৎপ



"নীলাচলনিবাসায় নিত্যায় পরমাত্মনে।
বলভদ্র সুভদ্রাভ্যাং জগন্নাথায় তে নমঃ।"

 সরলার্থ::পরমাত্মা স্বরূপ যারা নিত্যকাল-নীলাচলে বসবাস করেন, সেই বলদেব, সুভদ্রা ও জগন্নাথদেবকে প্রণতি নিবেদন করি।

#জগন্নাথদেব কে?
যেই গৌর, সেই কৃষ্ণ, সেই জগন্নাথ। ভগবান জগন্নাথদেব হলেন শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং যিনি জগতের নাথ বা জগদীশ্বর। সংস্কৃতি ভাষায় জগৎ অর্থে বিশ্ব এবং নাথ অর্থে-ঈশ্বর বোঝায়। সুতরাং জগন্নাথ শব্দের অর্থ হলো জগতের ঈশ্বর বা জগদীশ্বর।












#জগন্নাথদেবের কেন এই রূপ? 
একদা দ্বারকায় মহিষীগণ রোহিনী মাতাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, কৃষ্ণকে এতো সেবা করার পরও তিনি যেন অতৃপ্ত এবং অন্যমনস্ক থাকেন। কখনো বৃন্দাবন, কখনো শ্রীদাম-সুদাম, কখনো মাতা যশোদা, নন্দবাবা, আবার কখনো বা হে ব্রজবাসীগণ বলতে বলতে মূর্ছা যান। তার কারণ কী? তখন কৃষ্ণ বলরামের অজ্ঞাতে সুভদ্রা দেবীকে একটি কক্ষের দ্বারে রেখে কক্ষাভ্যন্তরে রোহিনী মাতা মহিষীদের কাছে ব্রজবাসীদের কৃষ্ণ বিরহের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন যে, বৃন্দাবনের বৃক্ষরাজি, তরুলতা কৃষ্ণ বিরহে ফুলে ফলে সুশোভিত হয় না। গো, গো বৎস এবং সখাগণ অনাহারে অনিদ্রায় কালাতিপাত করছে। মা যশোদা, পিতানন্দ প্রতিদিন ছানা মাখন নিয়ে গোপাল গোপাল বলে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে গেছেন। কৃষ্ণ বিহনে ব্রজগোপীগণ প্রাণান্তর প্রায়। এদিকে ভগিনী সুভদ্রা দেবীকে একটি কক্ষের দ্বারে দেখতে পেয়ে কৃষ্ণ এবং বলরাম তার কাছে এসে দাঁড়ালেন। কক্ষাভ্যন্তর থেকে ভেসে আসা ধ্বনি, রোহিনী মাতা কর্তৃক বর্ণিত ব্রজবাসীগণের কৃষ্ণ-বিরহ-সন্তাপাবস্থার কথা শ্রবণ করতে করতে কৃষ্ণ, বলরাম এবং সুভদ্রা বিকারগ্রস্ত হতে লাগলেন। তাদের হস্ত-পদ শরীরাভ্যন্তরে প্রবিষ্ট হতে লাগলো। চক্ষুদ্বয় বিস্ফোরিত হতে লাগলো। এমতাবাস্থায় সেখানে নারদ মুনি উপস্থিত হয়ে সেই রূপ দর্শন করলেন। তখন নারদ মুনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করলেন, হে ভগবান আমি আপনার যে রূপ দেখলাম, ভক্ত বিরহে আপনি স্বয়ং বিকারগ্রস্ত হয়ে থাকেন, কৃপা করে আপনার এই করুণার মূর্তি জগতবাসীর কাছে প্রকাশ করুন। নারদ মুনির প্রার্থনায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে প্রতিশ্রুতি দিলেন যে দারুব্রহ্ম (জগন্নাথ) রূপে শ্রীক্ষেত্র বা পুরীতে আমি এই রূপে আবির্ভূত হবো। পরবর্তীতে ইন্দ্রদ্যুম্ন নামে সূর্য বংশীয় এক বিষ্ণু ভক্ত রাজা মালদেশের অবন্তী নগরীতে রাজত্ব করতেন। তিনি ভগবানের সাক্ষাৎকার লাভ করার জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল হয়েছিলেন। ভগবৎ প্রেরিত কোনো এক বৈষ্ণব তখন শ্রীইন্দ্রদ্যুম্নের রাজসভায় উপস্থিত হয়ে কথা প্রসঙ্গে ভগবান শ্রী নীলমাধব বিগ্রহের কথা জ্ঞাপন করলেন। রাজা এই সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে শ্রী নীলমাধবের অনুসন্ধানে ব্রাহ্মণদের বিভিন্ন দিকে প্রেরণ করলেন। একে একে সকলেই বিফল মনোরথ হয়ে রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করলেন। একমাত্র রাজপুরোহিত বিদ্যাপতি বহুস্থান ভ্রমণ করতে করতে নীলমাধব বিগ্রহের সন্ধান পেলেন এবং রাজাকে নীলমাধবের সংবাদ জানালেন। তারপর রাজপুরোহিত বিদ্যাপতির পথ নির্দেশনায় রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন মন্ত্রীগণ এবং সৈন্য সামন্ত সমভিব্যাহারে নীলমাধবকে আনতে গেলেন। কিন্তু যে স্থানে নীলমাধবের সন্ধান পেয়েছিলেন সেই একই স্থানে উপনীত হলেন বটে তবে সেখানে নীলমাধবকে দেখতে পেলেন না। নীলমাধব সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন। অতঃপর রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ভগ্ন মনোরথে সবাইকে নিয়ে রাজ্যে প্রত্যাবর্তন করলেন। নীলমাধবের দর্শন না পেয়ে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন অনশনব্রত অবলম্বনপূর্বক প্রাণত্যাগের সংকল্প করলেন। তখন শ্রী জগন্নাথদেব স্বপ্নে তাকে বললেন, তুমি চিন্তা করিও না, সমুদ্রে ‘বাঙ্কমুহান’ নামক স্থানে দারুব্রহ্মরূপে ভাসিতে ভাসিতে আমি উপস্থিত হইবো। সে কথা শুনে রাজা পর্ষদবৃন্দ নিয়ে ঐ স্থানে উপস্থিত হলেন এবং যথাসময়ে শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মাঙ্কিত শ্রী দারুব্রহ্মকে দর্শন করলেন। সেই দারুব্রহ্ম (কাষ্ঠখন্ড) রাজা বহু বলবান লোক, হস্তি প্রভৃতি নিযুক্ত করে সুবর্ণের রথে করে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে আসলেন।

পরবর্তীতে সেই কাষ্ঠখন্ড দিয়ে রাজা এক অজ্ঞাত বৃদ্ধ ভাস্করকে শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি তৈরি করতে অনুরোধ করলেন। ভাস্করটি এই কার্যভার গ্রহণ করলেও একটি শর্ত আরোপ করেছিলেন যে, কার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে ২১ দিন সম্পূর্ণ গোপনীয়তা পালনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। রাজা সম্মত হলেও শেষ পর্যন্ত অধৈর্য হয়ে ওঠেন। অবশেষে ১৫ দিন পরেই ভাস্করের কর্মশালায় গিয়ে তিনি দৃষ্টিক্ষেপ করা মাত্রই ভাস্কর অদৃশ্য হলেন। পড়ে থাকলো শ্রী শ্রী জগন্নাথ, শ্রীবলরাম ও সুভদ্রাদেবীর শ্রীমূর্তি, যা আজ আমরা দেখে থাকি। রাজা তখন সেই মূর্তিটিকে অসম্পূর্ণ ভেবে অনুশোচনা করতে লাগলেন। তিনি ভাবতে লাগলেন কেন আমি ভাস্করের কথা মতো আরো কিছু দিন অপেক্ষা করলাম না। তখন ভগবান জগন্নাথদেব আবারো রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নকে স্বপ্নে বললেন, আমি এই রূপেই তোমার কাছে সেবা পেতে চাই। এই রূপ আমার করুণার মূর্তি। রাজা তখন সেই মূর্তিকে সম্পূর্ণ বলে গ্রহণ করে শ্রীজগন্নাথ, শ্রী বলদেব ও সুভদ্রাদেবীর সেবা-পূজা করতে শুরু করলেন এবং তারপর পুরীতে জগন্নাথদেবের জন্য একটি সুবিশাল মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।

#রথযাত্রা উৎসবের অর্থ কী?
বৃন্দাবন ত্যাগ করে মহারাজ নন্দ সূত শ্রীকৃষ্ণ তার দ্বারকা লীলায় রত হলেন। সূর্যগ্রহণ উপলক্ষ্যে শ্রীকৃষ্ণ যখন কুরুক্ষেত্রে গিয়েছিলেন তখন তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বলরাম ও ভগিনী সুভদ্রা এবং সেই সঙ্গে দ্বারকা থেকে অনেকেই তার সঙ্গে গিয়েছিলেন। সেই সময় ব্রজবাসীগণও সূর্যগ্রহণ উপলক্ষ্যে কুরুক্ষেত্রে গিয়েছিলেন। কুরুক্ষেত্রে বৃন্দাবনের গোপ গোপীদের সঙ্গে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সাক্ষাৎ হলো। ব্রজবাসীগণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে তার লীলাস্থলী বৃন্দাবনে ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। ব্রজবাসীগণ শ্রীকৃষ্ণের রাজবেশে দেখতে চাইলেন না। তারা শ্রীকৃষ্ণকে বৃন্দাবনের গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে ব্রজের বেশে দেখতে চাইলেন এবং তার সাহচর্য পেতে উন্মুখ হলেন। তখন ব্রজবাসীগণ কৃষ্ণ, বলরাম এবং সুভদ্রাদেবীর রথের ঘোড়া ছেড়ে দিয়ে নিজেরাই রথ টানতে টানতে বৃন্দাবনে নিয়ে গেলেন। যাই হোক, সেই লীলাকে স্মরণ করে ভক্তরা আজো পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বা জগন্নাথ দেবকে রথে করে টেনে বৃন্দাবনে (গুন্ডীচা মন্দির) নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। দ্বারকা রাজ্য যেমন শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বর্য লীলার স্থান বৃন্দাবন তেমনি মাধুর্য লীলার স্থান। ভগবদগীতায় নিশ্চিত করা হয়েছে যে, যেখানে কৃষ্ণ বা জগন্নাথ, জগতের নাথ এবং তার ভক্ত বিরাজমান সেখানেই বিজয় অনিবার্য।

#রথযাত্রা উৎসবে অংশগ্রহণ করার মাহাত্ম্য কী? 
এই উৎসবে অংশগ্রহণ করার মানে হলো আত্মোপলব্ধির পথে এক ধাপ অগ্রসর হওয়া। রথযাত্রা শ্রীকৃষ্ণের একটি অন্যতম লীলা। তাই এই উৎসবে অংশগ্রহণ করার অর্থ হলো সরাসরি কৃষ্ণের সংস্পর্শে আসা। যারা মন্দিরে এসে ভগবানকে দর্শন করেন না, তাদেরকে দর্শন দেয়ার জন্য ভগবান জগন্নাথদেব ভক্ত পরিবেষ্টিত হয়ে নিজেই পথে বের হন। রথারূঢ় জগন্নাথদেবের রথের রশি ধরে টানে বা রথ স্পর্শী করে অথবা বিগ্রহকে দর্শন করে তাহলে তার মুক্তি সুনিশ্চিত। সনাতন ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ উৎসবসমূহের মধ্যে রথযাত্রা অন্যতম উৎসব। এই উৎসব আমাদের চেতনাকে জাগ্রত করে। হৃদয়ের সুপ্ত কৃষ্ণভাবনাকে জাগ্রত করার এটি একটি সহজ ও সরল পন্থা।

#শাস্ত্রে তাই উল্লেখ করা হয়েছে
“রথে চ বামনাং দৃষ্ট পুনর জন্ম ন বিদ্যতে”
যদি কেউ রথযাত্রা উৎসবের সময় রথারূঢ় জগন্নাথদেবের শ্রী বিগ্রহকে দর্শন করে, তাহলে তার আর জড় জগতে জন্মগ্রহণ করতে হয় না। তিনি চিন্ময় ধাম প্রাপ্ত হন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ভক্তদের নিয়ে জগন্নাথের রথের সম্মুখে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র ‘হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে। হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।’ কীর্তন করতে করতে নৃত্য করতেন। রথের সামনে নৃত্য কীর্তন করাই জগন্নাথকে সন্তুষ্ট করার সর্বোত্তম পন্থা। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর এই লীলার মাধ্যমে সেই শিক্ষা আমাদের প্রদান করেছেন। তাই যে কেউ ভগবান শ্রীজগন্নাথদেবের রথযাত্রায় যোগদান করে নৃত্য কীর্তন করার মাধ্যমে দুর্লভ মনুষ্য জীবনকে সার্থক করতে পারেন।

#লেখক: ডা . সুব্রত ঘোষ

প্রকৃতপক্ষে কিভাবে আত্মার সৎগতি কামনা করতে হয় প্রকৃতপক্ষে ???

আত্মার সৎগতি? প্রকৃতপক্ষে কি ভাবে আত্মার সৎগতি কামনা করতে হয় তা জানবো আজ আমরা।

মায়াবদ্ধ জীব! সাধারনত আমরা কোন মানুষ মারা গেলে ওনার আত্মার সৎগতি কামনা করি। গোলক ধামবাসী হোক, বৈকুণ্ঠবাসী হোক, স্বর্গবাসী হোক। আচ্ছা একটা কথা বলুন তো আমায়? যে ব্যক্তি মারা গেল আমরা যে তার আত্মার সৎগতি কামনা করছি, সে ব্যক্তি যখন জীবিত ছিল, তখন কি তিনি জানতে চেষ্টা করছেন,আসলে আত্মাটা কে? বা সেটা কি জিনিস? আত্মাটা কার অংশ? আর সে অংশের কাজ কি? সে কি কখনও আত্মার অনুসন্ধান বা পরম সত্যের অনুসন্ধান করেছিলো। না সে ব্যক্তি কোন দিনও আত্মা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেনি। সে শুধু সারা জীবন দেহ সুখের কামনা বাসনা করছেন। সে ব্যক্তি শুধু দেহ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন। কিন্তু দেহটা যে পোশাক মাত্র। যে ব্যক্তি সারা জীবন জড়জগতে ৪টি জিনিসের অনুসন্ধান করেছিলো। আহার, নিদ্রা, ভয়, মৌথুন। যে ব্যক্তি সারা জীবন আত্মার অনুসন্ধান না করে দেহের অনুসন্ধান করেছে। তার তো আত্মার সৎগতি কামনা না করে দেহের সৎগতি কামনা করা উচিত। হা হা হা, আর শিক্ষিত হিন্দু সমাজ, কোন মানুষ মরার পর তার আত্মার সৎগতি কামনা করে। অধম মায়াবদ্ধ জীব জীবিত থাকতে জানার চেষ্টা করে না যে, দেহটা জড় বস্তু, অনিত্য। আত্মা চেতন, নিত্য। তাই আমাদের কোন ব্যক্তির আত্মার সৎগতী কামনা করতে হলে, ঐ ব্যক্তিকে জীবিত থাকা অবস্তাই কিভাবে তার আত্মা সৎগতি লাভ করতে পারে সে পথ দেখিয়ে দিতে হবে। এই পথটা হচ্ছে জীবের আত্মজ্ঞান উপলব্ধি বা আত্মা সর্ম্পকে জানা। এইটাই হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে এক জন ব্যক্তির আত্মার সৎগতি কামনা করা।

আরে ভাই বুঝেন না কেন আপনারা। একজন মানুষের মৃত্যুর পর তার আত্মার সৎগতি কামনা করলেই কি সে ব্যক্তির সৎগতি হয়ে যাবে? না তা মোটেও নয় নিজ নিজ কর্মফল প্রত্যেক ব্যক্তিকে ভোগ করতে হবে। কর্ম যদি ভালো হয় সৎগতি কামনা করতে হবে না, অটোমেটিকেলি সৎগতি পেয়ে যাবে। তাই প্রকৃত সৎগতির পন্থা দেখিয়ে দিন। আর সেই পন্থা হচ্ছে আমরা যেহেতু চিন্ময় আত্মা পরমআত্মার অংশ। অংশের কাজ পূর্ণ সম্পর্কে অনুসন্ধান করা ও পূর্ণের সেবা করা।(অংশ চিন্ময় আত্মা জড়জীব! পূর্ণ পরমআত্মা পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
(মানব জীবনে ব্যক্তিগত উপলব্ধি)
(জয় শ্রীল প্রভুপাদ)

এই সেই দেহের অন্তিম ঠিকানা, শ্বশান ঘাট।

[collected]

২২.৬.১৮

কে জানে এই ঘুম হয়তো শেষ ঘুম!!






















আপনি কি আগুন চেনেন? 
--হুম চিনি।
আপনি কি জানেন আগুনের রং কি??
--কমলা আর কালো রং এর কাছাকাছি হবে হয়তো... 
আগুনের খুব কাছে গেলে কেমন অনুভূতি হয় আপনার?
--অসহ্য যন্ত্রনায় সারা শরীর ঝলসে যায়,খুবই কষ্ট হয়।
আগুনের কি জিব্বা আছে? 
--আছে হয়তো।হাজার হাজার লক্ষ কোটি জিহ্বা। সব কিছু জ্বালিয়ে পুঁড়িয়ে শেষ করে দেয়।
তাঁর মানে আপনি আগুন কে চেনেন তাই তো?
--ইয়ে! আসলে! মানে......
লোকটা কে থামিয়ে দিলো একজন হিন্দু ব্যক্তি । তারপর ভগবানের ভক্ত টি বলল-
"আপনি আগুন কে কিছুই চিনতে পারেন নি। কারন আপনি কখনো আগুনের মাঝে ঝাঁপ দিয়ে দেখেননি যে আগুন কি জিনিস। আপনি কখনো আগুন কে স্পর্শ করে দেখেন নি আগুন কতটা জ্বালায়। তদ্রুপ ভগবানের প্রেমের আগুনে যারা ঝাঁপ দেয়নি তারা কোনদিন ই আঁচ করতে পারবে না তাঁর ভালোবাসায় কত সুখ আছে। দুনিয়ার প্রেমে আজ যারা মশগুল তারা জানে না ভগবানের সঙ্গের দিব্যপ্রেমের সুখ কি!! 
তারা সব জানে কিন্তু মানে না। এমন একদিন আসবে যেদিন তারা সব মানবে কিন্তু হায়! সেদিন আর সময় থাকবে না!!"
... প্রতিদিন রাতে ঘুমাবার সময় আমরা অ্যালার্ম সেট করি কিন্তু আমরা জানি না আগামীকাল আমরা বাচবো কিনা। কে জানে এই ঘুম হয়তো শেষ ঘুম!! 
{জাতস্য ধ্রুবো মৃত্যুর্ধ্রুবং জম্ম মৃতস্য চ।} গীঃ২.২৭
অনুবাদঃ- যার জন্ম হয়েছে তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী এবং যার মৃত্যু হয়েছে তার জন্মও অবশ্যম্ভাবী। 
অন্তকালে চ মামেব স্মরন্মুক্ত্বা কলেবরম।
যঃ প্রায়তি স মদ্ভাবং যাতি নাস্ত্যত্র সংশয়ঃ।।গীঃ ৮.৫
অনুবাদঃ- মৃত্যু সময়ে যিনি আমাকে স্মরন করে দেহত্যাগ করেন। তিনি তৎক্ষনাৎ আমার ভাবই প্রাপ্ত হন। এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই।
আসুন মৃত্যুর কথা ভাবি। এবং আশা করি মৃত্যুর সময় যেন মুখে উচ্চারিত হয়-- 
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

আমাদের হিন্দু ধর্মে মায়ের স্থান কোথায় ?

সনাতন হিন্দু ধর্মে মায়ের স্থান কোথায় ?



হিন্দু ধর্মে মায়ের স্থান অনেক উঁচু । চণ্ডীতে স্তব মন্ত্রে বলা হয়েছে
“যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা” ।

আর সন্তান এর কাছে মায়ের স্থান কোথায় হবে সে বিষয়ে হিন্দু শাস্ত্রে সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে । সে বিষয়ে জানতে আমরা মনু সংহিতা্র একটি শ্লোক দেখব-

উপাধ্যায়ান্ দশাচার্য্য আচার্য্যণাং শতং পিতা ।
সহস্রন্ত্ত পিতৃন্মাতা গৌরবেণাতিরিচ্যতে ।। মনুসংহিতা, ২/১৪৫

অনুবাদঃ
দশজন উপাধ্যায় থেকে একজন আচার্যের গৌরব বেশি । একশত আচার্যের থেকে পিতার গৌরব বেশি এবং সহস্র পিতা অপেক্ষা মাতা সম্মানার্হা ।

পিতা মাতার ঋণ সন্তান শত সহস্র জন্মেও শোধ করতে পারে না ।

যংমাতাপিতরৌ ক্লেশং সহতে সম্ভবে নৃণাম্ ।
ন তস্য নিষ্কৃতিঃ শক্যা কর্তুং বর্ষশতৈরপি ।। মনুসংহিতা, ২/২২৭

অনুবাদঃ
সন্তান জননে পিতামাতা যে ক্লেশ সহ্য করেন পুত্র শত শত বৎসরে, শত শত জন্মেও সেই ঋণ পরিশোধ করতে সমর্থ নয় । এ ছাড়া শাস্ত্রে আরও বলা হয়েছে মাতৃভক্তি দ্বারা এই ভূলোক জয় করা সম্ভব ।

ইমং লোকং মাতৃভক্ত্যা … মনুসংহিতা, ২/২৩৩

অনুবাদ :
মানুষ মাতৃভক্তি দ্বারা এই ভূলোক জয় করতে পারে ।

খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথাটি রামায়ণে ভগবান রামচন্দ্র বলেছিলেন-
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গরিয়সী।

এই সকল শাস্ত্র বাক্য দ্বারা আমরা সহজেই বুঝতে পারলাম সনাতন ধর্মে মায়ের স্থান কোথায় । তাই আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য নিজের জন্মদাত্রী মাকে যথাযথ সন্মান প্রর্শন করা ।

সংসার ধর্ম বড় ধর্ম, অন্য ধর্ম নেই !! মানে কি কথাটির ?

প্রশ্নঃ সংসার ধর্ম বড় ধর্ম, অন্য ধর্ম নেই!! এই কথার মানে কি?

এই কথার সঠিক তাৎপর্য কয়জনেই বা উপলব্ধি করতে পারে!!এতোদিন আপনারা শুধু জেনে এসেছেন-
সংসার ধর্ম বড় ধর্ম, অন্য ধর্ম নেই!!
তবে আসুন ভক্তবৃন্দ এখন এর সঠিক তাৎপর্যঃ জেনে নিই,,,
আর একটা অনুরোধ আপনাদের কাছে এই উত্তরটি শ্রবণ করার পর অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না!!কারণ আপনার একটি শেয়ারে অন্য আরেক জনের উপকৃত হতে পারে!আর বেশি কথা বলবো না এখন তবে প্রশ্নের মূল উত্তরে যাওয়া যাক--->>>
☞প্রশ্নঃ সংসার ধর্ম বড় ধর্ম, অন্য ধর্ম নেই!! এই কথার মানে কি?



উত্তরঃ এখানে সংসার ধর্ম বলতে গৃহস্থ ধর্মকে বোঝাচ্ছে। পতি, পত্নী ও সন্তান নিয়ে মানুষ ঘর করে জীবনযাপন নির্বাহ করে। পতি-পত্নী যদি না থাকে, তবে সন্তান আসবে কোথা থেকে। আর ধর্মই বা পালন করবে কে? তাই গৃহস্থ জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আছে। তাঁরা সৎ সন্তান উৎপাদন করে দেশের ও দশের মঙ্গল সাধন করতে পারেন।

👉কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঘটছে অন্যরকম। বহু পিতামাতা নাস্তিক ধর্মাচরহীন সন্তান সৃষ্টি করছেন। যারা এক একটি সংসার তছনছ করে দিচ্ছে। সমাজের বহু ক্ষতি সাধন করছে। স্বার্থপর, ব্যভিচারী, খুনী, নেশাখোর, বাটপাড়, ডাকাত, মাতাল, বদরাগী, ন্যাকা, বদমাশ, অসৎ প্রকৃতির বহু মানুষে জগৎ ভরে যাচ্ছে। গৃহস্থ জীবনের পালনীয় বৈদিক সংস্কারগুলি লোকে আর তেমন পালন করছে না বললেই চলে

👉অধিকাংশ লোক গৃহস্থ না হয়ে গৃহমেধী জীবন যাপন করছে। সেই সমস্ত গৃহে হয় না হরিপূজা, চলে না হরিনাম কীর্তন, করে না সাধুবৈষ্ণবের সেবা, শোনে না গীতা-ভাগবত, রাখে না শ্রীকৃষ্ণের অর্চা বিগ্রহ, খায় না কৃষ্ণপ্রসাদ। কেবল করে টাকা রোজগার। খায় মাছ-মাংস, মজে নেশাদ্রব্যে, দেখে আধুনিক ছায়াছবি, শোনে অভক্তি গান, বৈবাহিক জীবনের সংস্কারগুলি সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল নয়। মানে না বারব্রত। থাকে না সংযত।

👉বৈদিক পন্থায় বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে গৃহস্থ ব্যক্তিরা বিশেষত গৃহবধূরা সুসজ্জিত হয়ে ইসকন মন্দিরে ভগবানের সন্ধ্যা-আরতিতে যুক্ত হয়ে অর্চা বিগ্রহের সামনে ঘৃত প্রদীপ নিবেদন করতেন। সেখানে প্রণতি, প্রার্থনা নিবেদন ও ভজন কীর্তন করতেন।

👉বর্তমানেও বিকেল বা সন্ধ্যাবেলায় দম্পতিগণ খুব সাজগোজ করেন বটে, কিন্তু মন্দিরে যাওয়ার জন্য নয়। তাঁরা আধুনিক সিনেমা-হলে যাওয়ার জন্যই ব্যস্ত।

👉বৈদিক ভাবাপন্ন স্বামী-স্ত্রী সুপুত্র লাভের উদ্দেশ্যে ভগবানের কাছে ঐকান্তিকভাবে প্রার্থনা করতেন। কিন্তু বর্তমানের স্বামী-স্ত্রী সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা তো দূরের কথা, তারা সন্তান লাভ করতেই চান না। সেই জন্যে তারা সন্তানকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মেরে ফেলবার পরিকল্পনা করছেন।

👉অধিকাংশ মানুষ সংসার-ধর্ম ছেড়ে অধর্মের সংসার করছে সন্দেহ নেই। এইজন্যই আত্মহত্যা, সন্তান হত্যা, ভ্রূণহত্যা, মাতৃপিতৃ হত্যা, বধূ হত্যা, ভ্রাতৃবিরোধ, নানাবিধ উৎপাত প্রতিদিন ঘটে চলেছে।

👉আমাদের পরম গুরুদেব সচ্চিদানন্দ শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর ছিলেন আদর্শ গৃহস্থ। তিনি কৃষ্ণভক্তিময় সংসারের কথা বলেছেন। ‘কৃষ্ণের সংসার কর ছাড়ি অনাচার।’

👉সংসার না করে ধর্ম আচরণ করা যায়। কিন্তু ধর্ম আচরণ না করে সংসার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

শ্রীজগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ.....?

শ্রীজগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ?

নারদ মুনির একবার বাসনা হলো যে তিনি ভগবান নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। কিন্তু যা ছিল অসম্ভব। কারন নারায়নের প্রসাদ কেবল মাত্র মহালক্ষী ব্যাতীত অন্য কেউ পেতে পারেন না। এই সংকটে নারদ মুনি লক্ষীদেবী কে প্রসন্ন করার হেতু তপস্যা শুরু করলেন। অতঃপর ১২ বছর
তপস্যার পর দেবী লক্ষী প্রসন্ন হলেন এবং নারদ মুনিকে বললেন - তোমার তপস্যায় আমি সন্তুষ্টহয়েছি,বলো কি বর চাও তুমি? উত্তরে মুনিবর বললেন যে তিনি নারায়নের প্রসাদ পেতে চান!! মাতা লক্ষী বিপদে পড়ে গেলেন,কিন্তু নারদ মুনিকে বরও যে দিতে হবে।তাই তিনি তথাস্তু বলে দিলেন। লক্ষীদেবী বললেন ঠিক আছে তুমি এখানে অপেক্ষা কর, নারায়নের ভোজনশেষে তার অবশেষ প্রসাদ তুমি পাবে। অবশেষে যখন নারদ মুনি সেই প্রসাদ পেল তা সেবা করে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল। বীনার ছন্দে নারায়ণ..নারায়ণ বলতে বলতে কৈলাস অভিমুখে যাত্রা করলেন। শিব তখন নারদ  মুনিকে তার আনন্দের হেতু জানতে চাইলেন।নারদ মুনি তখন সবিস্তারে বর্ননা করলেন। তা শুনে শিবের ও ইচ্ছা হলো যে সেও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। নারদ মুনি বললেন যে তিনি সব খেয়ে ফেলেছেন।কিন্তু এখন উপায় কি হবে??? নারদ মুনি তার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে হাতের একপাশে একবিন্দু প্রসাদ লেগে আছে। শিবজী সেটা জল দিয়ে ধুয়ে সেবা করলেন। সেই চিন্ময় প্রসাদের এমনই স্বাদ ছিল যে ওইটুকু খেয়েই শিব আনন্দে তান্ডব নৃত্য শুরু করে দিলেন। ওইদিকে মাতা পার্বতী এই তান্ডব নৃত্যের শব্দ শুনতে পেলেন। আর ভাবলেন যে এখনতো পৃথিবীর ধংসের সময় উপস্থিত হয়নি, তবে স্বামী কেনো তান্ডব নৃত্য শুরু করলেন!! নিকটে গিয়ে শিবজীকে জিজ্ঞেস কররেন এবং ঘটনার বিবরন শুনলেন। তাখন মাতা পার্বতী বললেন তিনিও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। কিন্তু এখনতো আর কোন ভাবে সম্ভব না। পার্বতী দেবী অভিমান করলেন যে তিনি পত্নী হওয়া সও্বেও কেন তার স্বামী নারায়নের প্রসাদ একা সেবা করেছেন!!! তখন মাতা পার্বতী নারায়নের ধ্যান শুরু করলেন। দেবী পার্বতীর তপস্যায় তুষ্ট হয়ে নারায়ন তাকে দর্শন দেন এবং বললেন - বলো পার্বতী তুমি কি বর চাও। তখন মাতা পর্বতী বললেন, হে নারায়ন আপনিতো সবই জানেন। তবে আমার আরও প্রর্থনা আছে। এই জগতের সবাই আমার সন্তান। হে ভগবান সন্তানদের রেখে আপনার প্রসাদ শুধু আমি একা পাব তা কখনই হতে পারে না।তাই আপনার মহাপ্রসাদ যাতে জগতের সবাই পায়,সেটাই আমার প্রর্থনা। উত্তরে ভগবান বললেন- কলিকালে আমি যখন জগন্নাথদেব রুপে লীলা করব তখন আমি আকাতরে আমি আমার মহাপ্রসাদ বিতরন করব। সেই প্রসাদ প্রথমে তোমাকে দেয়া হবে,পরে তা জগতের সবাইকে দেয়া হবে। যদি আপনারা কেউ পুরীতে গিয়ে থাকেন সেখানে দেখতে পাবেন-- জগন্নাথ দেবের মন্দিরের পাশে বিমলাদেবীর(পার্বতী দেবী) মন্দির আছে। সেখানে জগন্নাথের প্রসাদ প্রথমে দেবী পার্বতীকে অর্পন করা হয়। পরে সেই মহাপ্রসাদ সবাইকে বিতরন করা হয়।[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

কৃষ্ণ কেন জগন্নাথরুপে প্রকট হলেন......??


 

মহিষীগণ ভগবানের
বৃন্দাবন-লীলা জানার জন্য কৌতুহলী হয়ে উঠলেন । কি এমন
সেখানে হয়েছিল যে প্রভু তা ভুলতে পারছেন না ?------- "কিন্তু
আমাদের প্রিয় স্বামীর শৈশবলীলা---- যখন তিনি শিশুরুপে
বৃন্দাবনে লীলা করেছেন সেই লীলা কথা কে আমাদের বলতে
পারে ?" তাঁরা জানতে পারলেন যে মাতা রোহিণী
ভগবানের বৃন্দাবন লীলা প্রক্যক্ষভাবে দর্শন করেছিলেন
এবং তাঁদের মহা সৌভাগ্য যে তিনি এখন দ্বারকায় বাস
করছেন । একদিন সকল মহিষীগণ কৌতুহল চিত্তে
রোহিণীদেবীর কাছে গিয়ে কৃপাপূর্বক ভগবানের কৈশোর-
যৌবন লীলা তাঁদেরকে বলার জন্য নোহিণীদেবীক
 আহ্বান করলেন । মাতা রোহিণী উপলব্দি করলেন যে
রাণীগণ ভগবানের ব্রজলীলা শ্রবণের জন্য আগ্রহ হয়েছে ।
তিনি বললেন, "বাস্তবিকই শ্রীকৃষ্ণের ব্রজবিলাস-লীলা
অনোন্য, অনুপম-এতই বিশিষ্ট এই লীলা যে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ ও
এই লীলা মহিমা শ্রবণ করে এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন । আমি
আপনাদের কাছে ঐসব অপূর্ব বিষ্ময়কর ব্রজলীলা বর্ণনা
করতে পারি । কিন্তু একটি শর্তেঃ আমি যখন সেইসব লীলা
কাহিণী বর্ণনা করব, তখন কৃষ্ণ বলরাম যেন শ্রবণ করতে না
পারে । যদি তাঁরা শ্রবণ করে, তাহলে বড় আকারের সমস্যার
সূচনা হবে ।" একবার কৃষ্ণ ও বলরাম দ্বারকার সুধর্ম সভাগৃহে
একটি সভায় যোগদানের জন্য গমন করলেন । তখন শ্রীকৃষ্ণের
সকল মহিষীগণ তাঁদের অনুপস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করলেন ।
তাঁরা সকলে একটি প্রশস্ত কক্ষে সমবেত হয়ে রোহিণী
মাতাকে শ্রীকৃষ্ণের শৈশব লীলা বর্ণনা করার অনুরোধ
করলেন । ঐ দুই ভাই, কৃষ্ণ - বলরাম যাতে এই বর্ণনা শ্রবণ করতে
না পারে, সেটা নিশ্চিৎ করার জন্য মাতা রোহিণী
সুভদ্রাদেবীকে দ্বাররক্ষীর সেবা গ্রহণ করতে বললেন । ঠিক
হল তিনি ওখানে কৃষ্ণ -বলরামের আগমন হলে
রোহিণীমাতাকে ইঙ্গিতে জানিয়ে দিবেন । এখন সবকিছুই
প্রস্তুত । সমস্ত মহিষীগণ প্রবল আগ্রহে ও উত্তেজনায় সেখানে
রোহিণীমাতাকে ঘিরে সমবেত । সুভদ্রা সেই প্রশস্ত কক্ষের
দ্বারে তাঁর দুই হাত বিস্তার করে দ্বার রোধ করে দাঁড়িয়ে
আছেন, যাতে কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে, বিশেষতঃ
কৃষ্ণ- বলরাম । রোহিণীমতিা আনন্দিত অন্তরে ব্রজবৃন্দাবনে
শ্রীকৃষ্ণের শৈশবলীলা বর্ণনা আরম্ভ করলেন । সেই বর্ণনা
ছিল পরম প্রীতিকর, শ্রবণরম্য এবং দিব্য ভাবোচ্ছাসপূর্ণ।
মহিষীগণ অচ্ছিন্নমনোযোগে শ্রবণ করতে লাগলেন । তাঁরা
রোহিণীমাতার মুখনিঃসৃত ব্রজবিলাসকথা-রুপ সুধামৃতধারা
তাঁদের কর্ণের দ্বারা পানে এতই নিমগ্ন হয়ে পড়লেন তাঁদের
বাহ্যজ্ঞান বিলুপ্ত হয়ে গেল । সুভদ্রা যদিও দ্বাররক্ষার
দ্বায়িত্বে নিয়োজিত হয়েছিলেন, তিনি শ্রীকৃষ্ণের অনুপম
লীলাবিলাস-কথা শ্রবণের সুযোগটি অপচয় করতে পারলেন না
। আর এইভাবে শ্রবণে নিমগ্ন হওয়ায় দ্বারকার মহিষীদের
মতোই তাঁরও বাহ্যজ্ঞান লোপ পেল । কৃষ্ণ- বলরাম সভায়
যোগদান করে সেখানে ব্যস্ত থাকলেও তাঁরা বুঝতে পারলেন
যে মাতা রোহিলী তাঁদের বৃন্দাবন লীলাকথা বর্ণনা করছেন
। ঐকথা শ্রবণের জন্য সুতীব্র লালসায় অভিভূত হয়ে তাঁরা
হঠাৎই সভাগৃহ পরিত্যাগ করে সেই স্থানের দিকে ধাবিত
হলেন, যেখানে রোহিণীদেবী ও রাণীগণ সমবেত হয়েছিলেন
। যখন তাঁরা দ্বারে পৌছালেন, তখন তাঁরা দেখলেন যে
সুভদ্রা কক্ষদ্বার পাহাড়ার দ্বায়িত্বে সেখানে দাঁড়িয়ে
আছেন । কৃষ্ণ-বলরাম সুভদ্রার উভয় পাশে দাঁড়ালেন এবং
তৎক্ষণাৎ তাঁরা মাতা রোহিণীর বর্ণনা শ্রবণে নিমগ্ন হলেন
সুভদ্রা ব্রজকথা শ্রবণে সম্পূর্ণ তন্ময় হওয়ায় তাঁর বাহ্য চেতনা
বিলুপ্ত হয়েছিল, সেজন্য তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও
শ্রীবলরামের উপস্থিতি লক্ষ্য করলেন না । তাঁরা তিনজন
এইভাবে লীলা শ্রবণের দ্বারা ভাবাবিষ্ট হয়ে পড়লেন, তখন
তাঁদের দিব্য দেহে মহা ভাববিকার-লক্ষণ প্রকটিত হতে শুরু
করল । " কি পরমাদ্ভুত, দিব্যসুন্দর লীলা ! ব্রজবাসীগণের কি
অবর্ণনীয় স্নেহ-প্রেম !" ব্রজবাসীদের অদ্ভুত প্রীতি-প্রেম-
বিরহ শ্রবণে বিষ্ময়াভিভুত হওয়ায় তাঁদের দিব্য অঙ্গ
ভাবতরঙ্গে পরিপ্লুত হল । ভাবাতিশয্যাবশতঃ তাঁদের নয়ণ
ক্রমশঃ বড়, বিস্ফোরিত হতে শুরু করল, তাঁদের হস্ত -পদ তাঁদের
দেহের সধ্যে সংকুচিত হল । এইভাবে হস্ত- পদাদির সংকোচন
হওয়ায় কৃষ্ণ-বলরাম এবং সুভদ্রার কলেবর কুর্মাকৃতি ধারণ করল
। ঠিক সেই সময়ে নারদ মুনি উপস্থিত হলেন । অনেক দূর থেকে
তিনি কৃষ্ণ-বলরাম ও সুভদ্রার এই অদ্ভুত ভাবমন্ডিতরুপ দর্শন
করতে পারছিলেন যখন তিনি তাঁদের নিকটবর্তী হলেন, তখন
কৃষ্ণ, বলরাম ও তাঁদের ভগ্নী সুভদ্রার বাহ্য চেতনা ফিরে এল ।
তাঁদের দেহ স্বাভাবিক আকার ধারণ করল । তাঁরা তাঁদের
মহাভাব সংবরণ করলেন, যা তাঁদের এই বিশেষরুপে অভিব্যক্ত
হয়েছিল । নারদ মুনি দিব্য আনন্দোল্লাসে দুবাহু তুলে নিত্য
করতে লাগলেন । তিনি বললেন, " আমি দর্শন করেছি ! আমি
দর্শন করেছি ! আপনারা আমার কাছ থেকে এটি সংগোপন
করার চেষ্টা করছেন । হে প্রিয় প্রভু, আমি আপনার অনেক
আশ্চর্যজনক দিব্যরুপ দর্শন করেছি । কিন্তু আমি এমন অনুপম -
সুন্দর রুপ কখনো দর্শন করিনি ! আমি বিনীতভাবে প্রার্থনা
করছি যে আপনাদের এই দিব্য শুভ রুপ এই ধরণীতে কোথাও
প্রকট করুন যাতে প্রত্যেকেই আপনার এই সবচেয়ে বিশিষ্ট,
সর্বোত্তম মহাভাব- প্রকাশ-রুপ দর্শন করতে পারে ।" তাঁর পরম
ভক্ত নারদ মুনির অভিলাষ পূর্ণ করার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই
রুপ প্রকটিত করেছেন এবং এইরুপে তিনি নিক্যকাল
শ্রীক্ষেত্র, পুরুষোত্তম ধামে বিরাজ করছেন ।
শ্রীজগন্নাথদেবের লীলাকথামৃত,
[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

কখনও ভগবানের প্রতি বিশ্বাস হারাবে না........






একটি হাতি ও একটি কুকুর ঠিক একই সময়ে
গর্ভবতী হলেন । ছয় মাস পর কুকুরটি ছয়টি কুকুর
ছানা জন্ম দিল । ছয় মাস পর কুকুরটি আবার গর্ভবতী
হলো এবং নয় মাস পর এটি আর এক ডজন কুকুর
জন্ম দিল । এভাবে এই সংখ্যা ধারা চলতে থাকল ।
আঠারো মাসে কুকুরটি হাতিটিকে জিজ্ঞাসা করল –
“তুমি কি সত্যিই নিশ্চিত তুমি গর্ভবতী? আমরা
দুজনে একসঙ্গে গর্ভবতী হলাম, আমি এর
মধ্যে তিন বার কয়েক ডজন বাচ্চা জন্ম দিলাম এবং
তারা এখন অনেক বড় হয়ে গেল কিন্তু তুমি
এখনও গর্ভবতী, আসলে কি তুমি গর্ভবতী?”

হাতি বলল - এখানে কিছু রয়েছে যা আমি
তোমাকে বোঝাতে চাই । আমি যা গর্ভে ধারন
করেছি তা কুকুর নয় হাতি । আমি দুইবছরে একবার
জন্ম দান করি । যখন আমার শিশু জন্ম গ্রহন করবে
তখন এই পৃথিবী তা বুঝতে পারবে, যখন আমার
শিশু রাস্তায় হাঁটবে তখন মানুষ তাকে বিস্ময়ের
সঙ্গে দেখবে, যা আমি গর্ভে ধারন করেছি তা
সবার দৃষ্টি আকর্ষন করে । তাই আমি যা ধারন
করেছি তা মহান এবং সাহসী ।
শিক্ষা – কখনও ভগবানের প্রতি বিশ্বাস হারাবে না
যখন তুমি দেখবে অন্যেরা তাদের প্রার্থনার ফল
পাচ্ছে । তুমি হতাশ হয়ো না । ভগবানের প্রতি
তোমার দৃঢ় বিশ্বাস রাখ আর প্রার্থনা চালিয়ে যাও ।
যদি তুমি তোমার প্রার্থনার ফল নাও পাও হতাশ হয়ও না।
নিজেকে বল – “আমার সময় আসছে ততদিন
আমাকে ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং যখন সেই সময়
আসবে তখন সবাই প্রশংসায় মুখরিত করবে ।”

কার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত......?

সম্পর্ক স্থাপন করবেন কার সাথে................?


এই জড় জগতের কোন সম্পর্কই চিরস্থায়ী নয়। এখানে প্রতিটি সম্পর্কই অনিত্য ও পরিবর্তনশীল। এ জগৎতে আপনি যার সাথেই সম্পর্ক করুন না কেন, একদিন না একদিন সেই সম্পর্ক ছিন্ন হবেই। মা-বাবা, ভাই-বোন,বন্ধু-বান্ধন কেউই চিরদিন আপনার পাশে থাকবে না। কিন্তু,কৃষ্ণের সাথে আমাদের নিত্য সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আমাদের সাথে অনন্তকাল ধরে রয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।

তাই,আমাদের উচিৎ কৃষ্ণের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা এবং সেই সম্পর্কের মর্যাদা রক্ষা করা। ভগবানের সাথে আমরা শান্ত, দাস্য, সখ্য,
বাৎসল্য, মাধুর্য এই পাঁচটি রসে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারি।আমরা যদি যেকোন একটি সম্পর্ক স্থাপন করে তার আরাধনা করি, তাহলে আমরা নিত্য আনন্দে থাকব। এ জগতেও আমরা কৃষ্ণের সাথে থাকব এবং মৃত্যুর পরও আমরা কৃষ্ণের সাথে থাকব। কখনও আমাদের সম্পর্ক ছিন্ন হবে না।

শাক-সবজি খেয়ে গাছপালা গুলিকে হত্যা কি পাপ নয় ?? পশু হত্যাই পাপ !!!

পশু হত্যা পাপ !!! শাক-সবজি খেয়ে গাছপালা গুলিকে

হত্যা কি পাপ নয় ??
বৈষ্ণব দর্শণ শিক্ষা দেয়, প্রয়োজন ব্যতীত
একটি গাছকেও হত্যা না করতে। (গীতা-9/26)
পড়ুন..
তাৎপর্য:- কেউ যদি ভক্তি ও ভালোবাসার সঙ্গে
আমাকে পত্র, পুষ্প, ফল বা শুধুমাত্র জলও উৎসর্গ
করে, আমি তা গ্রহণ করি।
শ্রীকৃষ্ণ যেমন খাদ্য উৎসর্গ করতে বলেছেন,
আমরা তাকে তাই নিবেদন করি, এবং তার প্রসাদ গ্রহণ
করি। তাকে নিরামিষ খাদ্য উৎসর্গ করলে যদি পাপ হয়,
তাহলে তা কৃষ্ণের পাপ-আমাদের নয়।
কিন্তু ভগবানকে কোন পাপ স্পর্শ করতে পারে
না। তিনি সূর্যের মতো। দেবতা সূর্যদেব হল
শ্রীকৃষ্ণের কর্মচারী। তার ক্ষমতা দেখুন-
মূত্রের মতো দূষিত পদার্থকেও শুকিয়ে শুদ্ধ
করে দেয়। তাহলে ভাবুন কৃষ্ণ কত শক্তিশালী।
যুদ্ধক্ষেত্রে কোন সেনাপতি যখন কাউকে -
শত্রুপক্ষের সৈন্যদের আক্রমনের নির্দেশ
দেন- তখন শত্রুদের হত্যা করার ফলে তাকে
পুরষ্কৃত করা হয়। কিন্তু সেই সৈন্যটি যদি নিজের
ইচ্ছামতো কাউকে হত্যা করে,তাকে শাস্তি
পেতে হয়।
তেমনই আমরা কৃষ্ণের নির্দেশে যদি তার প্রসাদগ্রহণ করি- আমাদের কোন পাপ হয় না।
(গীতা-3/13) পড়ুন..
তাৎপর্য:- ভগবদ্ভক্তরা যজ্ঞ-অবশিষ্ট খাদ্য গ্রহণ
করে, তাই তারা সব রকমের পাপ থেকে মুক্ত।
কিন্তু যারা নিজেদের ভোজনের জন্যই শুধু রন্ধন
করে, তারা কেবল পাপই ভোজন করে।
তাহলে শ্রীকৃষ্ণ কি পশুমাংস আহার করার অনুমতি
দেন না ??
হ্যাঁ দেন.....তবে শুধু পশুদের। আপনি তো
নিজেকে মানুষ বলেন। কোর্ট প্যান্ট পরে
সেজেগুজে থাকেন। তবে এখনও কেন আদিম
যুগের সভ্যতা পালন করছেন ?
যুক্তি দেখুন-গরু, ছাগল, ভেড়া, গাধা এদের সাথে
নিজের দাঁতের পাটি মেলান-একই। অর্থাৎ ভগবান
আপনাকে নিরামিষ খাওয়ার অনুমতি দিয়ে পাঠিয়েছেন।
এবার কুকুর,শেয়াল,বাঘ,সিংহ এদের দাঁতগুলি দেখুন-
সামনের দাঁতগুলি ধারালো। অর্থাৎ এদের শক্ত মাংস
ছিঁড়ে খাওয়ার অনুমতি দেওয়া আছে।
পশুরা নিজের কর্মদোষে পশুদেহ পেয়েছে।
আপনি অনেক জন্মের সুকৃতির ফলে মানবদেহ
পেয়েছেন, কেন অবহেলায় সময় নষ্ট
করছেন !!!
শুধরে যান- ভক্তি পথে আসুন, নিজের আত্মাকে
উন্নতির দিকে নিয়ে চলুন । তারপর পরের
জন্মে,, যে পশুর মাংস খাচ্ছেন, সে মানবদেহ
পেয়ে আপনাকে খাবে।
শাস্ত্র পড়ুন -- ইহা সত্য।
মাং মানে আমাকে সঃ মানে সে।
যাকে আমি খাচ্ছি, আমাকেও সে কোন জন্মে
খাবে।। অথবা পরজন্মে প্রকৃতি আপনাকে বাঘ,সিংহ
ইত্যাদি কোন মাংশাসী প্রাণীদেহ দেবে, যাতে
খুব করে মাংস খেতে পারেন। তৈরী থাকুন।
" সাবধান হউন "
x[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]

"হরে কৃষ্ণ" নামের কি তাৎপর্য ??

"হরে কৃষ্ণ" মহামন্ত্রের তাৎপর্যঃ । উচ্চ স্তরে করেছে যাকে প্রতিষ্ঠা তিনি আর কেহ নন কৃষ্ণ ছাড়া। তাই মানুষের উচিত “হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে পারমার্থিক জীবনে উন্নয়ণ ঘটানো। নিম্নে “হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য কি তা বর্ণিত হলঃ  


হরে কৃষ্ণ  হরে কৃষ্ণ  কৃষ্ণ কৃষ্ণ  হরে হরে।
হরে রাম  হরে রাম  রাম রাম  হরে হরে।।
ষোল সখা ষোল সখী বত্রিশ অক্ষর ।
হরিনাম তত্ত্ব ধর্ম অতি গূঢ়তর।।
মাধুর্য মহিমা তত্ত্ব যে জন জানয়।
রাধাকৃষ্ণ নিত্যধামে গমন করয়।।
‘হরে কৃষ্ণ’ ‘হরে রাম’ এই মন্ত্র ষড়ক্ষর।
এই তিন নাম তন্ত্রে সূত্র কৈল হর।।
তিন নামে ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর।
বৃত্তি করি কৈলা গৌর জগত গোচর।।
নাম রূপে প্রেম দিলা আপনি যাচিয়া।
নামে মত্ত ভক্ত চিত্ত বেড়ায় নাচিয়া।।
করুণার কল্পতরু এই হরিনাম।
কামনায় হবে মুক্তি প্রেম ব্রজধাম।।
সংক্ষেপে কহিনু এই হরিনাম তত্ত্ব।
জীবের দুর্লভ এই প্রেমের মহত্ত্ব।।

অষ্ট ‘হরে’ নামের তাৎপর্য

প্রথমত, ‘হরে’- চন্দ্রাবলী
দ্বিতীয়ত, ‘হরে’- প্রেমময়ী শ্রীরাধা
তৃতীয়ত, ‘হরে’- সুভাষিণী
চতুর্থত, ‘হরে’- সিংহাসন
পঞ্চমত, ‘হরে’- সুদর্শন
ষষ্ঠত, ‘হরে’- শেষ দেব
সপ্তমত, ‘হরে’- সাবিত্রী
অষ্টমত, ‘হরে’- রেবতী

চারি ‘কৃষ্ণ’ নামের তাৎপর্য

প্রথমত, ‘কৃষ্ণ’- পরম ব্রহ্ম শ্রীগোবিন্দ
দ্বিতীয়ত, ‘কৃষ্ণ’- বাসুদেব
তৃতীয়ত, ‘কৃষ্ণ’- জগন্নাথ
চতুর্থত, ‘কৃষ্ণ’- বলভদ্র
চারি ‘রাম’ নামের তাৎপর্য
প্রথমত, ‘রাম’- শ্রীরাধিকা
দ্বিতীয়ত, ‘রাম’- লক্ষ্মী
তৃতীয়ত, ‘রাম’- সরস্বতী
চতুর্থত, ‘রাম’- সুভদ্রা

হরিনাম মহামন্ত্রের বত্রিশ অক্ষরের তাৎপর্য

‘হ’- অক্ষরে শ্রীললিতা সখী মস্তকেতে।
‘রে’- অক্ষরে শ্রীবিশাখা দক্ষিণ বাহুতে।।
‘কৃ’-অক্ষরে চম্পকলতা সখীকন্ঠে রয়।
‘ষ্ণ’- অক্ষরেচিত্রা সখী বাহুতে শোভয়।।
‘হ’- অক্ষরে রঙ্গদেবী সখী থাকে হাতে।
‘রে’- অক্ষরে সুদেবী যে থাকয়ে পৃষ্ঠেতে।।
‘কৃ’- অক্ষরে তুঙ্গবিদ্যা বদন উপরে।
‘ষ্ণ’- অক্ষরে ইন্দুরেখা শ্রবণ বিবরে।।
‘কৃ’- অক্ষরে শশীরেখা রহে ভুরুযুগে।
‘ষ্ণ’- অক্ষরে বিমলা সখী ভ্রুর ডান ভাগে।।
‘কৃ’- অক্ষরে পালিকা সখী ভ্রুর বামে রয়।
‘ষ্ণ’- অক্ষরে লবঙ্গমঞ্জরী থাকয়ে হৃদয়।।
‘হ’- অক্ষরে শ্যামলা সখী নাভীতে থাকয়।
‘রে’- অক্ষরে মধুমতী নাভি মধ্যে রয়।।
‘হ’- অক্ষরে ধন্যা সখী করাঙ্গুলি রয়।
‘রে’- অক্ষরে মঙ্গলা কর অধোমুখী হয়।।
‘হ’- অক্ষরে শ্রীদাম সখা জঙ্ঘায় থাকয়।
‘রে’- অক্ষরে সুদাম সখা জানু নিবসয়।।
‘রা’- অক্ষরে বসুদাম সাখা থাকে ভুরু অঙ্গে।
‘ম’- অক্ষরে অর্জুন সখা সদা থাকে লিঙ্গে।।
‘হ’- অক্ষরে সুবল সখা দক্ষিণ পদেতে।
‘রে’- অক্ষরে কিঙ্কিণী সখা আছয়ে বামেতে।।
‘রা’- অক্ষরে চাতক সখা পূর্বে নিবসয়।
‘ম’- অক্ষরে মধুমঙ্গল অগ্নিকোণে রয়।।
‘রা’- অক্ষরে শুক সখা থাকয়ে দক্ষিণে।।
‘ম’-অক্ষরে বিশাল সখা রয় নৈঋর্ত কোণে।
‘রা’- অক্ষরে মহাবল সখা পশ্চিমে থাকয়।।
‘ম’- অক্ষরে বৃষভ সখা বায়ুকোণে রয়।
‘হ’- অক্ষরে দেবপ্রস্থ সখা উত্তরেতে।।
‘রে’- অক্ষরে উদ্ভব সখা আছে ঈশানেতে।।
‘হ’- অক্ষরে মহাবাহু ঊর্ধ্বে রয় সুখে।
‘রে’- অক্ষরে ঈশান সখা আছে অধোমুখে।।
এই ত কহিনু ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর তাৎপর্য ।
যেই জন জানে ইহা ভব ত্রাণ হয়।

[*সংগ্রহীতপোষ্ট*]